কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ঘিরে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই উত্তপ্ত বীরভূমের পাড়ুই থানার তালিবপুর গ্রাম। ভিনরাজ্য ফেরত গ্রামের শ্রমিকদের তালিবপুরের স্কুলে কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে আশ্রয় দেওয়াকে ঘিরে শুরু হয় বচসা। দুই গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক বোমাবাজি এবং গোলাগুলিতে মৃত্যু হয় শেখ নাসিরুদ্দিন নামে এক ব্যক্তির। বিবদমান দুই গোষ্ঠীই তৃণমূলের সদস্য, সমর্থক বলে জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। ঘটনায় সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ।
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে কোয়ারান্টাইন সেন্টার করার জন্য স্কুল, কলেজ, হোটেল নিতে শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। সেই মতো শনিবার বিকেলে পাড়ুই থানার তালিবপুর গ্রামে যান প্রশাসনের লোকজন। সেখানে একটি গার্লস হস্টেলে কোয়ারান্টাইন সেন্টার করার পরিকল্পনা করা হয়। এতেই বাধা দেন গ্রামবাসীদের একাংশ। উত্তেজনা ছড়ালে পাড়ুই থানার পুলিশ মধ্যস্থতা করে। তবে, শনিবার রাতে ফের গন্ডগোল শুরু হয়। সংক্রমণ ছড়িয়ে পরতে পারে, ফলে গ্রামে স্কুল হস্টেলে ভিন রাজ্য ফেরত শ্রমিকদের রাখা যাবে না। তাঁদের হাসপাতালেই রাখতে হবে।এই দাবি করেন গ্রামবাসীরা।
আরও পড়ুন- LIVE: ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৩,১১৩
রাতে বনশঙ্কা অঞ্চল সদস্য সাইফুদ্দিন আহমেদ, তৃণমূলের অঞ্চল সহ সভাপতি আব্দুল হাইদের নেতৃত্বে বোমা গুলি নিয়ে আক্রমণ করা হয় বলে অভিযোগ। গ্রামের বাসিন্দা নিহত নাসিরুদ্দিনের আত্মীয় বলেন, ‘আমরা সবাই তৃণমূল করি। নাসিরুদ্দিনই পঞ্চায়েত সদস্য বানিয়েছিল সাইফুদ্দিনকে। আমরা কোয়ারান্টাইন সেন্টার করতে বাধা দিয়েছিলাম। কারণ, স্কুলের কাছে সব বাড়ি। কিন্তু পঞ্চায়েত সদস্য ও অঞ্চল সহ-সভাপতি জোর করে কোয়ারেন্টাইন সেন্টার করার চেষ্টা করে। পুলিশ বিষয়টি মিটিয়েও দেয়। যদিও রাতে তারা নাসিরুদ্দিনকে লক্ষ্য করে বোমা ছোঁড়ে। গুলি চালায়। এক সিভিক ভলন্টিয়ার এর সঙ্গে যুক্ত। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নাসিরুদ্দিনের’।
এই ঘটনায় তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি রানা সিংয়ের নিশানায় বিজেপি। তিনি বলেন, ‘বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা একাজ করেছে’। যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল জানান, ‘গ্রামের মানুষই বলছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। তাছাড়া ওই গ্রামের আমাদের তেমন লোকজন নেই। তৃণমূল নিজেদের বিরোধ চাপা দিতে এসব বলছেট। বীরভূম জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং বিষয়টিকে ‘গ্রাম্য বিবাদের জের’ বলেছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন