বিচারব্যবস্থায় অগাধ আস্থা মুখ্যমন্ত্রীর। ''আমি বিশ্বাস করি বিচারব্যবস্থাই বিপর্যয় থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে।'' রবিবার নিউটাউনে আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এমনই মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন WBNUJS-এর সমাবর্তনে যোগ দিয়ে গত কয়েক মাসে বিচারব্যবস্থার 'সক্রিয়তা'র কথাও বলতে শোনা গিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
বাংলায় বেশ কিছুদিন ধরেই একের পর এক ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার উপরেই ভরসা রাখতে দেখা গিয়েছে বিচারব্যবস্থাকে। বগটুই থেকে শুরু করে ঝালদায় কংগ্রেস কাউন্সিলর খুন, এসএসসি, গরু, কয়লা পাচার-সহ একাধিক মামলায় সিবিআইয়ের উপরেই ভরসা রাখতে দেখা গিয়েছে বিচার ব্যবস্থাকে। যা নিয়ে শাসকদলের বেশ কয়েকজন নেতা-মন্ত্রী প্রশ্ন তুলেছেন। রাজ্যের তদন্ত সংস্থাকে বাদ দিয়ে কেন বারবার সিবিআই বা ইডির মতো সংস্থাকে তদন্তের ভার দেওয়া হচ্ছে? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের অনেককে।
খোদ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বিচারব্যবস্থার 'সক্রিয়'তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। এমনকী বিচারপতিদের একাংশ বিরোধীদের হয়ে কাজ করছেন বলেও তোপ দাগতে দেখা গিয়েছে অভিষেককে। ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদের এই মন্তব্য নিয়ে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে উষ্মা প্রকাশ করেছেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- জগদ্ধাত্রী পুজোয় বিশেষ পরিষেবা রেলের, রাতভর ছুটবে লোকাল ট্রেন, জেনে নিন সময়সূচি
তবে দলের নেতা-মন্ত্রীরা যাই বলুন, দলনেত্রী তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আস্থা কিন্তু বিচারব্যবস্থার উপরেই। রবিবার নিউটাউনে আইন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে যোগ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ''আমি বিশ্বাস করি বিচারব্যবস্থা বিপর্যয় থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারে। বিচারব্যবস্থা যেন মানুষের পক্ষে থাকে। মানুষ আশাহত হলে বিচারব্যবস্থার দ্বারস্থ হন। বিচারব্যবস্থার ওপর মানুষের অগাধ আস্থা।''
আরও পড়ুন- নৈহাটিতে গুলিবিদ্ধ ‘তৃণমূলকর্মী’র মৃত্যু, ‘শাসকের দ্বন্দ্বেই অশান্তি’ তোপ দিলীপের
এদিন বিচারব্যবস্থার প্রতি আস্থা দেখিয়েও বিচার প্রক্রিয়ায় মিডিয়া ট্রায়ালের অভিযোগ এনেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ''অনেক সময় আদালতের রায়ের আগেই মিডিয়া ট্রায়াল হয়ে যাচ্ছে। মিডিয়া কখনই বিচারব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। সম্মানটাই সব কিছু। ওটাই যদি লুঠ হয়ে যায় তাহলে তো সব চলে যাবে। আর এটা একবার এটা চলে গেলে ফিরে আসে না।''
এরই পাশাপাশি এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ইউ ললিতকেও প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ''ললিতজি দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে বিচারব্যবস্থাকে চালাতে হয়। মাত্র ২ মাস আগে উনি দায়িত্ব নিয়েছেন। তার মধ্যেই বিচারব্যবস্থার প্রতি উনি আস্থা ফিরিয়ে আনতে পেরেছেন। তবে বিচারব্যবস্থার উপর থেকে মানুষের আস্থা যে চলে গিয়েছিল তা আমি বলব না।''