আগামিকাল থেকে রাজ্যের ছোট-বড় সমস্ত পাইকারি এবং খুচরো বাজারে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধ করতে হানা দেবে রাজ্য এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চের অফিসাররা। বৃহস্পতিবার নবান্ন সভাঘরে টাস্ক ফোর্সের বৈঠকের পর ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সর্ষের তেল থেকে শুরু করে ফল-সবজি আনাজপত্র, সবকিছু সস্তায় মিলবে রাজ্য সরকারের ৩৩২টি সুফল বাংলা স্টল থেকে। এছাড়াও গাড়িতে করে সুফল বাংলার রানিং স্টল ঘুরবে সর্বত্র। ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সরকারের সুফল বাংলা স্টল চালু আছে। বাজার দরের থেকে কম দামে বিক্রি হচ্ছে সুফল বাংলায়। রাজ্যে ৩৩২টি সুফল বাংলা স্টল রয়েছে। ৩৩২টি থেকে বাড়িয়ে ৫০০ সুফল বাংলার স্টল তৈরি করা হবে। প্রয়োজনে সুফল বাংলা স্টলের সংখ্যা বাড়াতে হবে। জিনিসের দাম এত বেড়েছে, যেন রান্নাঘরে আগুন জ্বলছে, হাতের থেকে সবকিছু যেন বেরিয়ে যাচ্ছে। রোগের কারণে আলুর উৎপাদন ২৫ শতাংশ কমতে পারে। দাম নিয়ন্ত্রণে নজরদারি বাড়াতে হবে।"
মূলত, জ্বালানির লাগাতার মূল্যবৃদ্ধির জেরে বাজার আগুন। রোজই বেড়ে চলেছে পেট্রল-ডিজেলের দাম। রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় ইতিমধ্যেই সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছে ডিজেল। যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে সবজি বাজার এবং নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দামে। আলু-পিঁয়াজ, অন্যান্য সবজি, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস, চাল-ডাল-চিনি সবেরই দাম বেড়ে চলছে।
মূল্যবৃদ্ধির আঁচ পড়েছে মাছ-মাংসেও। মাথায় হাত পড়েছে মধ্যবিত্তের। এই মূল্যবৃদ্ধি নিয়েই এদিন নবান্ন সভাঘরে টাস্ক ফোর্স, বাজার সংগঠন, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয়, পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত টোল প্লাজাগুলিতে পণ্যবাহী ট্রাকগুলি থেকে টোল নেওয়া বন্ধের আবেদন করা হবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে। যাতে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি থেকে একটু রেহাই দেওয়া যায় ব্যবসায়ীদের।
আরও পড়ুন রাজ্যে ‘সেঞ্চুরি’ ডিজেলের, জ্বালানির জ্বালায় হাত পুড়ছে মধ্যবিত্ত বাঙালির
পচনশীল খাদ্যবস্তু বহনকারী যানবাহন চলাচলের সময় সীমা বেড়ে দাঁড়াল ২৪ ঘণ্টা। শাক, সবজি, মাছ, ডিম, ফল ও ফুল এগুলির পরিবহনের ক্ষেত্রে আগামিকাল থেকে ট্রাফিকে রাজ্যের কোথাও আর 'নো এন্ট্রি' বলে কিছু থাকবে না। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "এগুলি সব এসেনশিয়াল কমোডিটিস হিসেবে ট্রিট করতে হবে।" পুলিশ ও পরিবহন দফতরকে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এদিন বেশ কিছু সবজির দাম কমালেন মুখ্যমন্ত্রী। সুফল বাংলা স্টলে সেগুলি কম দামে পাওয়া যাবে। একনজরে দেখে নেওয়া যাক নতুন দাম-
- আলু বাজারে পাওয়া যাচ্ছে ২২ টাকায়, এখন তা ১৮ টাকা কেজি।
- নাসিকের পিঁয়াজ ২২ টাকা, সুফল বাংলায় পাওয়া যাবে ২০ টাকা কেজিতে।
- সুখসাগর পিঁয়াজ বাজারে ২০ টাকা কেজি, সেটা মিলবে ১৫ টাকা কেজিতে।
- কলা ডজনপ্রতি ২৫ টাকায় মিলবে, বাজারে ৬০ থেকে ৭০ টাকায় পাওয়া যায়।
- সুফল বাংলায় তরমুজ ২৫ টাকা কেজিতে পাওয়া যাবে।
- লাউ এখন ৩৫ টাকার বদলে ২২ টাকায় পাওয়া যাবে।
- ফুলকপি ৩৫ টাকা থেকে ২২ টাকায় পাওয়া যাবে।
- আদা-রসুন কেজিপ্রতি ১০ টাকা কমে পাওয়া যাবে বাজারের তুলনায়।