অনাস্থা ভোটে তৃণমূলকে পরাজিত করল কংগ্রেস। ১২ আসনের ঝালদা পুরসভা দখলে এল কংগ্রেসের। পুরসভা ভোটের পর কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়েছিল পুরুলিয়ার ঝালদা। বোর্ড গঠন করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এদিনের অনাস্থা ভোটের ফলাফলকে 'সত্যের জয়' বলে সম্বোধিত করলেন পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতি নেপাল মাহাত। নদিয়ার তাহেরপুরের পর বাংলায় আরেকটা পুরসভা বিরোধীদের দখলে এল। রাজ্যে বাকি সব পুরসভাই ঘাসফুল শিবিরের দখলে রয়েছে।
ঝালদা পুরসভায় মোট আসন ১২টা। পুরসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও তৃণমূল ৫টি করে আসনে জয় পায়। ২টি ওয়ার্ড নির্দলপ্রার্থীদের দখলে যায়। পুরবোর্ড গঠনের আগে কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুন হয়ে যান। যথারীতি কংগ্রেসের কাউন্সিলরের সংখ্যা ৫ থেকে ৪-এ নেমে যায়। ২ জন নির্দল কাউন্সিলরের সমর্থনে পুরবোর্ড দখল করে ঘাসফুল শিবির। পরে দুই নির্দল কাউন্সিলর তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসের হাত ধরে। কংগ্রেস অনাস্থা আনতে উদ্যোগ নেয়।
আরও পড়ুন- পঞ্চায়েতের আগে বিরাট ধাক্কা শাসকের! ঝালদা পুরসভা হাতছাড়া তৃণমূলের
আদালতের নির্দেশে তপন কান্দু খুনের ঘটনার সিবিআই তদন্ত চলছে। পরবর্তীতে ওই পুরআসনে বিপুল ভোটে জয়ী হয় কংগ্রেস প্রার্থী। জয়ী হতেই ঝালদা পুরসভায় অনাস্থার নোটিস দেয় কংগ্রেস। তখনই প্রবীণ কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাত ও পুরসভার বিরোধী দলনেতা বিপ্লব কয়াল দাবি করেছিলেন, অনাস্থায় কংগ্রেসের জয় শুধু সময়ের অপেক্ষা। এদিন দুই নির্দলের সমর্থনে পুরবোর্ড দখল করল কংগ্রেস। তৃণমূলের কোনও কাউন্সিলর পুরসভায় আসেননি।
সোমবার অনাস্থায় জয়ের পর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে তপন মাহাত বলেন, 'তপন কান্দু খুন হয়েছিলেন, তাঁর রক্তের মর্যাদা রাখল ঝালদার মানুষ। আগামী দিনে ঝালদার মানুষের পরাধীনতার যে পরিবেশ ছিল, ডিক্টেটরশিপ, যতরকমের দুর্নীতি ছিল, সবকিছুর অবসান হল।' এরপর ঝালদায় কি হবে তৃণমূলের হাল? নেপাল মাহাতর জবাব, 'ওরা(তৃণমূল কংগ্রেস) তো ছাড়বে না। সংখ্যালঘু হলেও অনেক কিছু করেছে। কিন্তু ভাঙতে তো পারবেই না। ওরাই ভেঙে যাবে। আজকেই ভেঙে যেত যদি সবাই ওরা আসত। সব কাউন্সিলর যদি অংশ নিত আজকেই আমরা আরও দুজনের সমর্থন পেয়ে যেতাম।' ঝালদা পুরসভার বিরুদ্ধে লাগাতার দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল কংগ্রেস। নেপাল মাহাত জানিয়ে দিয়েছেন, 'আমরা আগে বসি, তারপর নিশ্চয় দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে।'
বিপ্লব কয়াল বলেন, 'ঝালদার মানুষ আজ মুক্তি পেল। যাবতীয় নাটকের যবনিকাপাত ঘটল। পুলিশ-প্রশাসনিক চাপ ও প্রলোভন দূরে সরিয়ে রেখে ৭ জন কাউন্সিলর শিঁরদাড়া সোজা রেখে সত্যের জয় এনে দিল। আগামী ৭ দিনের মধ্যেই পুরবোর্ড গঠন হবে। পুরসভায় যাঁরা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তাঁরা কেউই রেহাই পাবে না। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা খেলার জন্য হাজির হলেও তৃণমূলের কেউ থাকেনি তলবি সভায়।'