পুকুর নদী বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রাজ্য কংগ্রেসের। পাশাপাশি দলের মুখপাত্র পদ থেকে সরিয়ে দিলেও নিজের অবস্থানে অনড় কৌস্তভ বাগচী। তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের দোস্তি কিছুতে মেনে নিতে পারছেন না কৌস্তভ। তবে কি বিজেপিতে যোগ দিতে চলেছেন তরুণ তুর্কী এই আইনজীবী কংগ্রেস নেতা? এদিকে কংগ্রেসের একাংশ প্রশ্ন তুলেছে, জনপ্রিয়তার জন্যই কি কৌস্তভকে সরিয়ে দেওয়া হল? তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে সখ্যতা ও কৌস্তভের মুখপাত্র থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি সরগরম।
কৌস্তভ বাগচী বলেন, দিল্লি দেখিয়ে তৃণমূলের প্রতি সুর নরম করতে পারবো না। মনে করিয়ে দিতে চাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেদিন ব্য়ক্তিগত স্তরে আক্রমণ করেছিলেন। তখন প্রতিবাদ সকরে পুলিশি হেনস্তার শিকার হয়েছিলাম আমি ও আমার পরিবার। কৌস্তভের প্রশ্ন, আমার পদ কেড়ে নিতে পারেন। কিন্তু আমার শিরদাঁড়া কেড়ে নিতে পারবেন? বাংলার আম কংগ্রেস কর্মীদের নিয়ে এখনও তৃণমূলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করা যাবে বলে মনে করেন কৌস্তভ।
আরও পড়ুন- ইন্ডিয়ায় কংগ্রেস-তৃণমূল: বাংলায় কে কটা আসনে লড়তে পারে?
বিতর্কিত মন্তব্য করায় অভিযোগের ভিত্তিতে কৌস্তভকে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। গভীর রাতে তাঁর ব্য়ারাকপুরের বাড়িতে গিয়েছিল পুলিশ। পরে আদালত থেকে জামিন পেয়েই মস্তক মুণ্ডন করেছিলেন রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র কৌস্তভ বাগচী। ন্যাড়া হয়ে কৌস্তভ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, মমতা সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত তিনি মাথায় চুল রাখবেন না। কিন্তু মোদী বিরোধী ইন্ডিয়া জোটে মমতা-সনিয়া, রাহুল-অভিষেক কাছাকাছি আসতেই রাজ্য কংগ্রেসেও সমীকরণ বদলাতে থাকে। মুম্বাইতে যখন ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক চলছে তখনই রাজ্য কংগ্রেসেরে মুখপাত্র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হল কৌস্তভকে।
আরও পড়ুন- ইন্ডিয়া জোটের বৈঠক: বিশাল ভূমিকায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, কী হল সিপিআইএমের?
গ্রেফতার হওয়ার পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব অনেকেই কৌস্তভের পাশে থেকেই মন্তব্য করেছিলেন। বিজেপি নেতৃত্ব কৌস্তভের প্রতি সহানুভুতিশীল ছিল তা প্রত্যক্ষ করা গিয়েছিল। রাজ্য কংগ্রেসে কোনঠাসা কৌস্তভ বাগচী কি বিজেপির দিকে হাত বাড়াতে চলেছেন? তাঁর জবাব, আমি এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিইনি দল পরিবর্তন করব বা অন্য দলে যাব। কংগ্রেসে থেকেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব। দলের মুখোশধারী নেতাদের মুখোশ খুলে ছাড়ব। পাশাপাশি কৌস্তভ বলেন, তবে যাঁরা বিপদের দিনে আমার প্রতি সহানুভূতিশীল ছিলেন, তাঁদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। রাজ্য কংগ্রেসের একাংশের বক্তব্য, কৌস্তভ যতটা তৃণমূলের প্রতি আক্রমণাত্মক ততটা বিজেপির প্রতি নয়। ইন্ডিয়া জোটে থেকে বাংলায় কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের আসন রফা হলে সেক্ষেত্রেও কৌস্তভরা কি সিদ্ধান্ত নেন সেটাই এখন দেখার। মাথায় চুল গজানোর প্রতিজ্ঞা পালন করতে হলে কংগ্রেসে থেকে কি আর সম্ভব? এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন।