করোনা কাঁপুনি যেন কিছুতেই কমছে না। প্রাণঘাতী ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দেশে। বাংলাতেও ছবিটা খানিকটা একইরকম। যত দিন গড়াচ্ছে পশ্চিমবঙ্গেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ রাজ্যে মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও একজনের। এ নিয়ে বাংলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২, আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২২।
কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে রবিবার গভীর রাতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে মৃত্যু হয় এক মহিলার। বছর চুয়াল্লিশের ওই মহিলা কালিম্পঙের বাসিন্দা বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। গত ২৬ মার্চ শ্বাসকষ্ট নিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন তিনি। তারপরই তাঁর করোনা পরীক্ষা হয়। জানা যায়, ওই মহিলা মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মৃতার মেয়ে ও চিকিৎসক ইতিমধ্যেই হোম কোয়রান্টাইনে রয়েছেন। মহিলা বিদেশে না গেলেও দক্ষিণ ভারতে গিয়েছিলেন চিকিৎসার জন্য। ২০ তারিখের আগেই সেখান থেকে ফিরে আসেন তিনি। তারপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন মহিলা।
এদিকে, করোনা মোকাবিলায় আজ নবান্নে ফের বৈঠকে বসছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা। এদিনের বৈঠক শেষে নতুন করে কী বার্তা দেন মু্খ্যমন্ত্রী, সেদিকে তাকিয়ে বঙ্গবাসী।
লকডাউনের সময়ে কাজে অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে কোনও শ্রমিকের মজুরি কাটা যাবে না। সংগঠিত ও অ-সংগঠিত ক্ষেত্রের আওতাধীন সংস্থাগুলোর উদ্দেশে এই নির্দেশ জারি করল রাজ্য সরকার। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘সব সংস্থা, দোকান ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে লকডাউনের সময়কালে শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি না কেটে বেতন দিতে হবে।।’ এছাড়াও, সম্ভব হলে পরিযায়ী শ্রমিকদের থেকে ঘর ভাড়া না নেওয়ার জন্যও বাড়িওয়ালাদের আর্জি জানিয়েছে মমতা সরকার। সঙ্গে এও বলা হয়েছে যে, জোর করে পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘর ছাড়তে বাধ্য করা হলে বাড়িওয়ালাদের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক পদক্ষেপ করা হবে।
আরও পড়ুন Live: ভারতে কোভিড-১৯ পজেটিভ ১০৭১ জন, মৃত ২৯
অন্য়দিকে, লকডাউন অনিয়মের ছবি বারবারই উঠে আসছে। রাজ্য়ের বিভিন্ন প্রান্তে লকডাউন না মানার ছবি গত কয়েকদিনে সামনে এসেছে। তবে গত কয়েকদিনের তুলনায় মানুষের সচেতন হওয়ার ছবি ক্রমশ প্রকট হচ্ছে। দোকান-বাজারে গেলে আগের থেকে অনেকটাই সাবধানতা অবলম্বন করছেন সাধারণ মানুষ।
রাজ্য়ে করোনা আবহে খানিকটা স্বস্তির খবর মিলেছে। বাংলায় তিন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে উঠছেন বলে খবর মিলেছে। রাজ্য়ে প্রথম করোনা আক্রান্ত আমলা পুত্র, দ্বিতীয় করোনা আক্রান্তের বাবা ও হাবরার তরুণীর শরীরে মারণ ভাইরাস আর মেলেনি বলে জানা গিয়েছে।
করোনা মোকাবিলায় মোদী-মমতার প্রশংসা করে ফের টুইট রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়ের। তিনি লিখেছেন, 'করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। রাজনৈতিক ভাইরাস শক্তি হারিয়েছে। নরেন্দ্র মোদী সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে রয়েছে সব রাজনৈতিক দলের সমর্থন। এই লড়াইয়ে একশো শতাংশ সাফল্য মিলবে। আসুন তার জন্য যা করা প্রয়োজন সেটাই করি।'
এদিকে,দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্য়া হাজার ছুঁয়েছে। ভারতে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত বেড়ে হয়েছে ২৯। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় লকডাউনের মেয়াদ আপাতত বৃদ্ধির কোনও পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গৌবা।