করোনা আতঙ্কের জেরে ফের অ্যাম্বুলেন্স সংকট রাজ্যে। করোনা আক্রান্ত সন্দেহে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে নিয়ে যেতে নারাজ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স। সরকারি হাসপাতালে এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলী জেলার উত্তরপাড়ায়। উত্তরপাড়ার স্টেট জেনারেল হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স করোনা আক্রান্ত সন্দেহকে নিয়ে যেতে অস্বীকার করার পর তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি তথা উত্তরপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদবের চেষ্টায় অবশেষে সমস্যার সমাধান হয়।
আরও পড়ুন: করোনাতঙ্কে রাজ্যজুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়াল মমতা সরকার
গত রবিবার মুম্বাই থেকে বাড়ি ফেরেন জনাইয়ের এক বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার থেকেই জ্বর,সর্দি কাশির উপসর্গ নিয়েই বাণিজ্যনগরী থেকে জনাইতে ফেরে তিনি। রবিবার রাতেই উত্তরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে করোনা সন্দেহে বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে রেফার করে। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স তাঁকে নিয়ে যেতে অস্বীকার করায় সমস্যায় পড়ে রোগীর পরিবার। একই ঘটনা ঘটেছে হিন্দমোটর ধর্মতলা কাজি নজরুল ইসলাম সরনীর তরুণীর। জ্বর কাশি শ্বাস কষ্টের উপসর্গ নিয়ে উত্তরপাড়া হাসপাতালে গেলে তাঁকেও বেলেঘাটা রেফার করা হয়। অন্তঃসত্ত্বা ওই তরুণী পাঁচদিন আগেই কানপুর থেকে হিন্দমোটরে ফিরেছেন।
আরও পড়ুন: করোনা জয় করলেন দিল্লির প্রথম আক্রান্ত
এদিকে অ্যাম্বুলেন্সের এমন অমানবিক আচরণে বাধ্য হয়েই দুই পরিবার যান উত্তরপাড়া পুরসভার চেয়ারম্যান দিলীপ যাদবের কাছে। পুরসভা পরিচালিত মাতৃসদন মহামায়া হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সের ব্যাবস্থা করে দেন তিনিই। উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন আগে চুঁচুড়ার রবীন্দ্র ভবনে জেলা স্বাস্থ্য দফতর থেকে করোনা নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছিলো। সেখানে উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক থেকে শুরু করে সি এম ও এইচরা। সিএমওএইচ শুভ্রাংশু চক্রবর্তী দাবী করেছিলেন যে তাঁরা এই জেলায় তিনটি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড চালু করেছেন করোনা সন্দেহে কোনো রোগীকে রাখার জন্য । তিনি এও জানিয়েছিলেন যে তাঁদের পক্ষ থেকে অ্যাম্বুলেন্স-সহ সব রকম ব্যবস্থা আছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেলো উল্টোটাই। প্রশ্ন উঠেছে তাহলে জেলার হাসপাতালে আলাদা ওয়ার্ড সংরক্ষণ নিয়ে। যদিও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তীকে এই বিষয়ে ফোনে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: করোনা রুখতে বাংলায় গোমূত্র পান, বিকোচ্ছে গোবরও
অন্যদিকে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে এক যুবককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে হুলুস্থুলু নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ। অভিযোগ, গত ৯ তারিখ জ্বর নিয়ে কেরল থেকে ফিরে আসে সে। লাগাতার জ্বর ও পেটে ব্যাথায় আক্রান্ত ওই যুবকের করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে বলে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে জানায় প্রতিবেশীরা। রবিবার রাতে তাঁকে অ্যাম্বুলেন্স করে কৃষ্ণনগর জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে তাঁর বাড়ি যায় পুলিশ। কিন্তু করোনার আতঙ্কে হাসপাতালে যেতে অস্বীকার করে রাতের অন্ধকারেই পালিয়ে যায় ওই যুবক। পরে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে তাঁকে খুঁজে বার করে কার্যত জোর করেই অ্যাম্বুলেন্সে তুলে কৃষ্ণনগর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন