মার্চের পর এই প্রথম বাংলা জুড়ে নয়া মাত্রায় দাপট দেখাতে শুরু করেছে করোনা। এর মধ্যেই করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে এ রাজ্যে বেশ কিছু 'ঘাটতি' রয়েছে বলে আশঙ্কার কথা জানালেন বিশেষজ্ঞরা। যে হারে বাড়ছে এই ভাইরাসের সংক্রমণ, সে ক্ষেত্রে অবিলম্বে ভ্রম সংশোধন করতে হবে, এমনই পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞদের দল। আর এরপরই তড়িঘড়ি রাজ্যের সব হাসপাতালগুলিতে নয়া নির্দেশিকা পাঠিয়েছে মমতা সরকার।
নয়া নির্দেশিকায় করোনা রোগীদের অক্সিজেন প্রয়োজনীয়তা পর্যবেক্ষণ, অ্যান্টি কোয়াগুলেন্ট ব্যবহার করে আইসিইউ-তে ভর্তি রোগীদের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া, সরকারের প্রস্তাবিত ওষুধের বাইরে বাকি ওষুধ ব্যবহার নিষিদ্ধ করার মতো বিষয়গুলি বিশেষভাবে উল্লিখিত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানান, যে হারে রোগীর সংখ্যা রাজ্যে বাড়ছে সেটা দেশের অন্য কয়েকটি রাজ্যের চিত্র মনে করাচ্ছে।
আরও পড়ুন, কোভিড চিকিৎসায় রেমডেসিভিরের তুলনায় ডেক্সোমেথোসোনে নজর দেওয়া কেন জরুরি?
এদিকে, করোনা সংক্রমণে রোজই নয়া রেকর্ড গড়ছে বাংলা। দৈনিক সংক্রমণের নিরিখে এবার আগের সব রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে এ রাজ্যে। বৃহস্পতিবার একদিনে রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮৮ জন। এই প্রথম একদিনে বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা হাজার পার করেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজার ৯১১।
সেই পরিস্থিতিতে হাসপাতালগুলিকে নয়টি নির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছে সরকার। এগুলি হল-
* ভর্তির সময় হার্টের অস্বাভাবিকতা পরীক্ষা করতে ইসিজি এবং রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা পরিমাপের জন্য এবিজি (ধমনী রক্তে অক্সিজেন পরিমাপ) পরিচালনা করুন; অক্সিজেনের স্যাচুরেশন স্তর এবং রক্তচাপকে "পর্যবেক্ষণ" করুন। শ্বাস প্রশ্বাসের হার, স্যাচুরেশন এবং রক্তে শর্করার মাত্রার দৈনিক তথ্য এবং শারীরিক অগ্রগতি সম্পর্কিত নথিগুলি জমা করতে হবে।
* রোগীর দেহে স্টেরয়েডস এবং অ্যান্টিকোগুল্যান্টস 'নিয়ম অনুযায়ী' নির্দিষ্ট ডোজ মেনে দিতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে জটিল অবস্থায় অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট দেওয়া যেতে পারে। তবে রক্তক্ষয় হচ্ছে কিংবা কিডনির সমস্যা রয়েছে এমন রোগীর ক্ষেত্রে তা ব্যবহার করা যাবে না।
* আইসিইউতে থাকা রোগীদের 'প্রোণ অ্যাওয়েক ভেন্টিলেশন' বা উপুর হয়ে শুয়ে থাকা অভ্যাস করাতে হবে। সমস্যা বাড়লে তখন ভেন্টিলেশনের যে প্রক্রিয়া আছে তা চালু করতে হবে।
* অ্যান্টিবায়োটিকের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। "সরকারী নির্দেশিকাগুলিতে যে ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ নিষিদ্ধ করা রয়েছে সেগুলি পরীক্ষামূলক ভিত্তিতেও ব্যবহার করা যাবে না”।
* করোনা সন্দেহ রয়েছে এমন রোগীদের আইসোলেশন ওয়ার্ডেই রাখতে হবে জেনারেল ওয়ার্ডে রাখা যাবে না।
* রোগীদের সঠিকভাবে পরীক্ষার ক্ষেত্রে সুপার স্পেশালিটি দল অর্থাৎ নেফ্রোলজি এবং পালমনোলজি বিভাগের চিকিৎসকদের থাকতে হবে।
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন