করোনায় বিপদ বাড়ছে। অথচ ভাইরাস মোকাবিলায় লকডাউনকে কার্যত বুড়ো আঙুল দেখিয়েই রাস্তায় কিছু অসেচতন মানুষের ভিড় চোখে পড়ছে বাংলায়। প্রশাসনের বারংবার নিষেধাজ্ঞা অমান্য করেই রাস্তায় বেরোচ্ছেন রাজ্যবাসীর একাংশ। বৃহস্পতিবার রামনবমী উপলক্ষে রাজ্যের বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরে ভক্ত সমাগম চোখে পড়েছে। এদিকে, বাংলায় করোনায় মৃত ও আক্রান্তের সংখ্য়া নিয়ে দু'বার দু'রকম সরকারি তথ্য় ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
‘বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫৩’, বৃহস্পতিবার বিকেলে নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে এমন তথ্যই জানান আধিকারিকরা। কয়েক ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় ফের সাংবাদিক বৈঠক করে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা জানালেন, ”৫৩ নয়, রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪, মৃত ৭ নয়, ৩”।
আরও পড়ুন- লকডাউনে অধিক করোনা পরীক্ষা-আরও কোয়ারেন্টাইনের পরিকল্পনা প্রয়োজন: আইসিএমআর
করোনা আবহে জমায়েত সরাতে গিয়ে আক্রান্ত পুলিশ। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও পশ্চিম মেদিনীপুরে পৃথক দু’টি ঘটনাতে স্থানীয় বাসিন্দাদের আক্রমণের শিকার হন ন’জন পুলিশ কর্মী।দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে বৃহস্পতিবার রাতে লকডাউন উপেক্ষা করে বাইরে বেরিয়েছিলেন একদল যুবক। অন্যদিকে, চায়ের দোকানে জমায়েতে বাধা দেওয়ায় পশ্চিম মেদিনীপুরের গোয়ালতোড়ে কয়েকজন পুলিশকর্মীর উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের গাড়িও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয়দের একাংশের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে জেলা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, এ ঘটনায় দুজন পুলিশকর্মী জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এদিকে, খাদ্যসামগ্রী পর্যাপ্ত পরিমাণে না থাকায় বীরভূমে এক রেশন দোকানের মালিককে মারধরের অভিযোগও উঠেছে।
আরও পড়ুন- ২১ দিন পর কি সীমিত লক ডাউনের পথে যাবে দেশ?
প্রধানমন্ত্রীর জারি করা লকডাউন ও হোম আইসোলেশনে থাকার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব না মানার ব্যাপারে একাধিক অভিযোগ উঠলো খোদ দলেরই সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরীর বিরুদ্ধে। রায়গঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় দলীয় কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক বিলি করেন দেবশ্রী। এই নিয়ে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশিত বিধিভঙ্গ’র অভিযোগ তোলা হয়েছে। মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে জেলাশাসকের কাছে।
এদিকে, দেশে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্য়া। ভারতে কোভিড-১৯ পজেটিভের সংখ্যা ২৩০১। এঁদের মধ্যে ১৫৫ জন সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার সকালে ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ''৫ই এপ্রিল রবিবার রাত ৯টায় আমি আপনাদের থেকে ৯ মিনিট চাইছি। ওই সময়ে বাড়ির সব আলো বন্ধ করে ঘরে বা বারান্দায় দাঁড়িয়ে মোমবাতি, প্রদীপ বা মোবাইলের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালান। এতেই মহাশক্তির প্রকাশ ঘটবে। ওই শক্তির দ্বারাই প্রকাশ পাবে যে আমরা কেউ একা নই, সবাই একসঙ্গে রয়েছি''।