বাংলায় করোনার দাপট ক্রমশ বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গে করোনা আক্রান্তের সংখ্য়া ২০০ পেরোল। সোমবার পর্যন্ত বাংলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্য়া ছুঁয়েছে ২৪৫। এখনও পর্যন্ত এ রাজ্য়ে ভাইরাসে মৃত্য়ু হয়েছে ১২ জনের, মোট সুস্থ হয়েছেন ৭৩ জন। নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানালেন মুখ্য়সচিব রাজীব সিনহা। রাজ্য়ে মোট ৫ হাজার ৪৬৯ নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে , এমনটাই জানালেন মুখ্য়সচিব।
এদিন মুখ্য়সচিব বলেন, ''পুলিস-প্রশাসন দিয়ে শুধু পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যাবে না, সকলকে দায়িত্বশীল হতে হবে। দয়া করে বাড়ির বাইরে বেরোবেন না। বাড়িতে থাকুন। কলকাতা ও হাওড়াতে সংক্রমণের প্রকোপ বাড়ছে, সেখানে আরও ব্য়ারিকেড করা হবে। সুফল বাংলার মাধ্য়মে অত্য়াবশকীয় পরিষেবা মিলবে ওই এলাকায়''। রাজীব সিনহা আরও বলেন, ''বেলা ১২টার পর বন্ধ থাকবে ফুল ও মিষ্টির দোকান''।
আরও পড়ুন: করোনায় বাংলায় কেন্দ্রীয় দল, বেজায় চটলেন মমতা
এদিকে, কলকাতা-সহ বাংলার বেশ কয়েকটি জায়গায় লকডাউনের শর্ত ঠিকমত মানা হচ্ছে না। নবান্নের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট কেন্দ্র। এবার তাই রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসছে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। বাংলার সাত জেলায় কেন্দ্রীয় দল যাবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং ও কালিম্পংকে ‘গুরুতর’ করোনা প্রভাবিত বলে উল্লেখ করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
কেন্দ্রের এহেন পদক্ষেপে সোচ্চার হলেন রাজ্য়ের মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। সোমবার টুইটারে মমতা লিখেছেন, করোনা পরিস্থিতিতে কেন্দ্র সরকারের থেকে সবরকম সহযোগিতা ও পরামর্শকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তি, কীসের ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় দল পাঠাছে কেন্দ্র, তা স্পষ্ট নয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের কাছে আর্জি রাখছি, এ ব্য়াপারে তা জানান। তা না হলে, কোনও উপযুক্ত কারণ ছাড়া এই পদক্ষেপের সঙ্গে এগোতে পারবে না রাজ্য়। মুখ্য়মন্ত্রী এও লিখেছেন, কোনও উপযুক্ত কারণ ছাড়া এ ধরনের পদক্ষেপ করা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর পরিপন্থী।
আক্রান্তের সংস্পর্শ আসায় আরও চার জন চিকিৎসকের দেহে মিলল কোভিড পজেটিভ। পূর্ববর্তী কোভিড পজিটিভ রোগীর সংস্পর্শে আসার কারণেই সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে। কোভিড পজিটিভ রোগীর সঙ্গে সংস্পর্শ বিভ্রাটে ১৩জন কে কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছিল। তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়।
অন্য়দিকে, কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা মেনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারও লকডাউনে বেশ কিছু ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথা জানিয়েছে। সোমবার থেকে পূর্ত দফতর, জনস্বাস্থ্য কারিগরী, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের অধীন নির্দিষ্ট উন্নয়ন কার্যসমূহ চালু হয়েছে। রাজ্য সরকার ক্ষুদ্র-কুটির ও মাঝারি শিল্পের ৭০০ ইউনিটকে কাজের ছাড়পত্র দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, এদের মধ্যে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য তৈরির সঙ্গে যুক্ত ইউনিটগুলো ছাড়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে আগ্রাধিকার পাবে। রাজ্য সরকারের এক আধিকারিকের কথায়, ‘অনুমতি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষুদ্র-কুটির ও মাঝারি শিল্পের ৭০০ ইউনিটে কাজ শুরু হবে।’
এদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে করোনা আক্রন্তের সংখ্য়া রেকর্ড হারে বেড়েছে। একরাতেই করোনা পজেটিভের সংখ্যা ১ হাজার ৫৪৩ জন। সোমবার সকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুসারে ভারতে কোভিড-১৯ পজেটিভ ১৭ হাজার ২৬৫ জন। যাঁদের মধ্যে ২ হাজার ৫৪৬ জন সুস্থ হয়ে গিয়েছেন। দেশে করোনার মৃত্যু বেড়ে হয়েছে ৫৪৩।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন