করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে দেশজুড়ে জারি হয়েছে লকডাউন। আর এর জেরে চরম সমস্যায় পড়েছেন ট্রাক চালকরা। লকডাউনের জেরে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে আটকে পড়েছে ট্রাক। এই দুর্দিনে কার্যত মাঝপথেই বন্দি ট্রাক চালকরা। কবে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সেদিকেই তাকিয়ে ট্রাকচালকদের একাংশ।
লকডাউনের জেরে ট্রাকের কেবিনই এখন বাড়ির মতো হয়ে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের জৌনপুর জেলার মুলচাঁদ যাদবের। গত ২১ মার্চ থেকে ট্রাকের কেবিনেই মাথা গোঁজার ঠাঁই পঞ্চাশ বছর বয়সী এই ব্য়ক্তির। জনতা কার্ফুর জেরে হুগলির সিঙ্গুরের কাছে জাতীয় সড়কে তাঁর ট্রাক আটকেছিল পুলিশ। মুলচাঁদ ভেবেছিলেন, পরে দিনই হয়তো নিজের গন্তব্য়ে রওনা দেবেন। কিন্তু তার পরের দিনই বাংলায় লকডাউন ঘোষণা করে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন- দুপুরে নয়, সকালেই ব্যবসায়ে আগ্রহী শহরের বেশিরভাগ বৃহৎ মিষ্টান্ন প্রতিষ্ঠান
এদিকে, এ অবস্থায় ট্রাক ছেড়ে যাওয়াও দুষ্কর হয়ে উঠেছে মুলচাঁদের। ট্রাকে রয়েছে গাড়ির যন্ত্রাংশ। এ প্রসঙ্গে তিনি বললেন, ''দামী দামী গাড়ির যন্ত্রাংশ রয়েছে ট্রাকে। ফলে কীভাবে ট্রাক ছেড়ে যাব? কোনও পার্কিং লটও খুঁজে পাচ্ছি না। ট্রাকের মালিক আমায় বাড়ি ফিরতে বলছেন। আমি বাড়ি ফিরতে চাই। কিন্তু স্থির করলাম এখন না যাওয়ার। যদি আমি বাড়ি যাই, তাহলেও প্রশ্ন উঠবে। তাই থেকে গিয়েছি''। তাঁর কথায়, ''জানি না, আর কতদিন এভাবে লকডাউন চলবে। লকডাউনের সময় বাড়লে, আমরা আরও অসহায় হয়ে যাব''।
মুলচাঁদের মতোই এক অবস্থা মধ্যপ্রদেশের পবন লোহারের। এয়ার কন্ডিশনার বোঝাই ট্রাক নিয়ে গুজরাতের আহমেদাবাদ থেকে বেরিয়েছিলেন। তিনিও আটকে পড়েছেন। তাঁর সঙ্গে আটকে পড়েছেন আরও তিন সহযোগী। ২৯ বছর বয়সী আরেক যুবক সুন্দর মেঘওয়ালের কথায়, ''আমার বাবা, মা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে সকলে গ্রামের বাড়িতে রয়েছে। ওঁরা আমায় নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছে। আমিও খুব উদ্বিগ্ন''।
লোহারের কথায়, ''আমরা ডাল-রুটি খেতে পছন্দ করি। কিন্তু রোজই ডালের দাম বাড়ছে। আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত কোনওভাবে সামলে নিতে পারব। কিন্তু যদি লকডাউনের সময় বাড়ে, তাহলে জানি না কী হবে''।
Read the full story in English