ব্ল্যাঙ্কেট-ম্যাট্রেসের দাপটে জং পড়েছে ধুনকরে, মাথায় হাত তুলো ব্যবসায়ীদের

প্রযুক্তির জাঁতাকলে ধুনকরের ব্যবহার সেইভাবে নেই, কী বলছেন ব্যবসায়ীরা?

প্রযুক্তির জাঁতাকলে ধুনকরের ব্যবহার সেইভাবে নেই, কী বলছেন ব্যবসায়ীরা?

author-image
Anurupa Chakraborty
New Update
cotton knitting - cotton trader

তুলোধোনার ব্যাবসা এখন অনেকটাই কম

দিন বদলের সঙ্গে সঙ্গেই বাজার ছেয়ে গেছে নতুন জিনিসে। তোশক কিংবা জাজিমের ব্যবহার আজ খুব কম বাড়িতে। বেশিরভাগই ম্যাট্রেস আর নয়তো শীতকালে ব্ল্যাঙ্কেট, তথাকথিত তুলো ব্যবসায়ীদের এখন মাথায় হাত, তাদের ধুনরিতে আজ জং পড়েছে।

Advertisment

বেশ কিছু বছর আগেও মাঝে মধ্যেই রাস্তার এপার ওপার থেকে হাঁক শোনা যেত, 'তুলো ঝাড়াবেন'? নিজেদের কাঁধে ধুনকর নিয়েই ঘুরে বেড়াতেন কিছু মানুষ। প্রয়োজন মত, তোশক বালিশ খুলে তুলো পুনরায় ঝেড়ে দিতেন। না! আজ আর তাদের খুব একটা দেখা যায় না। ব্যবসার হাল এখন কেমন? কীভাবে পেট চলছে তাঁদের?

publive-image
তুলো ধোনা চলছে
Advertisment

মহম্মদ ফিরোজ, বহু বছর ধরেই এই ধুনকর দিয়ে তুলো ধোনার কাজ করেন। আগে নিজেই করতেন এখন শরীরের কারণে সেভাবে পেরে ওঠেন না। বললেন, "আগে ব্যবসার হাল অনেক ভাল ছিল। তবে বর্তমানে এসব তোশক জাজিম অনেকেই ব্যবহার করেন না। লেপের ব্যবহারও যথেষ্ট কমেছে, তাই সেইভাবে অর্ডার আসে না। তবে হ্যাঁ এই ধুনকরের মাধ্যমে তুলো ঝাড়া হলে সেটি নরম হয়, মোলায়েম হয়। অনেকেই বলে থাকবেন, লেপের গরম আর কিছুতেই পাওয়া যায় না। এর দ্বারা তুলো ধুনলে সেটা সহজে পাকিয়ে যায় না। অনেকদিন ঠিক থাকে"।

আরও পড়ুন চাহিদা নামমাত্র, থমকাচ্ছে কুমোরের চাকা, তলানিতে মাটির সামগ্রীর ব্যবসা

publive-image
তুলো পেটাই

এদিকে, তুলোর দামও আকাশছোঁয়া। ফিরোজ বলেন, "শিমুল তুলোয় হাত লাগানো যায় না, এত দাম! এদিকে সেইভাবে অর্ডার না থাকলে কাজ হবে না। তারপর ধরুন, কাজটা যথেষ্ট খাটনির। শরীরে ব্যথা হয় যেটা মেশিনে হয় না। সবথেকে বড় কথা তাড়াতাড়ি হয়, তাই মানুষ আধুনিকতার দিকেই দৌড়ায়। মেশিন একবার স্টার্ট দিলে কোনও সমস্যা নেই। যখন তখন কাজ করা যায়। অনেকেই এমন আছেন যারা বাড়ির ভেতরে রেখেও সেই কাজ করতে পারেন। কিন্তু অনেক তুলো ব্যবসায়ীদের এত সামর্থ নেই, তাঁরা একেবারেই সেই মেশিন কেনার ক্ষমতা রাখেন না। ফলে অসুবিধে তো রয়েছেই"।

publive-image
পুরনো সেই 'ধুনকর'
old profession