Advertisment

দোলের মেলা জমজমাট, নজর কাড়ছে হাজার টাকার পেল্লায় রসগোল্লা

তবে শুধু এই দৈত্যাকার রসগোল্লাই নয়, এ মেলায় হরেক রকমের মিষ্টির সম্ভার নজড় কাড়বেই। দোলের দিন থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে সোমবার পর্যন্ত।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Crowds flock to see the Rasogolla of thousands of rupees at the Dol Mela in the Purbasthali of East Burdwan

বিশালাকার মিষ্টি হাতে এক দোকানি। ছবি: প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়।

পাঁচশো বছরের পুরনো দোল উৎসবের মেলায় পেল্লায় সাইজের রসগোল্লার সম্ভার। হাজার টাকা পিসের এই রসগোল্লা দেখতে অনেকটা বিশালাকার ল্যাংচার মতো। তবে শুধু এই দৈত্যাকার রসগোল্লাই নয়, এ মেলায় হরেক রকমের মিষ্টির সম্ভার নজড় কাড়বেই। দোলের দিন থেকে শুরু হওয়া এই মেলা চলবে সোমবার পর্যন্ত।

Advertisment

পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ১ নং ব্লকের দোগাছিয়া। এতল্লাটের দোল উৎসবকে কেন্দ্র করে মেলা চলে আসছে গত পাঁচশো বছর ধরে। দোল উৎসবকে ঘিরে এই মেলা দেখতে প্রতি বছরই ভিড় জমে যায়। মেলার মূল আকর্ষণই হরেক রকমের মিষ্টির সম্ভার। চার দিনের এই মেলা দেখতে এতল্লাটের বাসিন্দাদের বাড়িতে আত্মীয়রা এসে জড়ো হন। তাঁদের এই মেলা থেকে কেনা মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়ন করাটাই রীতি।

বিশালাকার মিষ্টি দিয়ে দোগাছিয়া গ্রামে আত্মীয় আপ্যায়নের রেওয়াজ চলে আসছে গত কয়েকশো বছর ধরে। দোগাছিয়া গ্রামের দোল উৎসবের মাহাত্ম্য নিয়ে এলাকায় নানা জনশ্রুতি রয়েছে। গ্রামের বাসিন্দা নিখিলেশ রায়চৌধুরী, দেবপ্রসাদ রায়চৌধুরীরা জানালেন, প্রায় সাড়ে পাঁচশো বছর আগে বাংলায় জমিদারি শাসন ছিল। সেই সময়ে দোগাছিয়া গ্রামে চারদিনের দোল উৎসবের সূচনা হয়। দোলে গ্রামের চৌধুরী পাড়ার মূল মন্দিরে হয় কৃষ্ণচন্দ্র, গুপীনাথ ও মদনমোহন মূর্তির পুজো। মূল মন্দির থেকে কিছুটা দূরে থাকা দোল মন্দিরে চতুর্দোলা করে তিন দেবতার মূর্তি নিয়ে গিয়ে পুজো করা শুরু হয়।

নিখিলেশ রায়চৌধুরী জানান, তাঁদেরই বংশের পূর্ব পুরুষ শ্রীধর কর জমিদারি আমলে মন্দিরগুলি তৈরি করেন। পরবর্তী সময়ে নবাবদের আমলে তাঁদের পরিবার রায়চৌধুরী উপাধি লাভ করে। চৌধুরী পরিবারের সদস্যদের কথায় জানা গিয়েছে, দোল উৎসব উপলক্ষে গ্রামে হরিনাম সংকীর্তন-সহ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান হয়। মেলাও বসে।

আরও পড়ুন- উদ্ধার চিনা ড্রোন, বনগাঁর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে উত্তেজনা

দোগাছিয়া গ্রামে দোল উৎসবের মেলার প্রধান আকর্ষণ মিষ্টি। দু'এক কেজি ওজনের নয়। হাজার টাকা পিস দরে ৮ কেজি ওজনের রসগোল্লা এবার মেলায় দারুণ হিট। বড় বড় গামলায় সেই সব বিশালাকার মিষ্টি সাজিয়ে রেখেছেন দোকানিরা। মেলার পুরনো রেওয়াজের কথা ভেবেই আজও এই দৈত্যাকার মিষ্টি বানিয়ে চলেছেন দোকানিরা। স্থানীয় বাসিন্দা সুধাকর ঘোষ বলেন, ''জমিদারি আমল থেকেই দোল উৎসবে গ্রামে আসা অতিথিদের মিষ্টি দিয়ে আপ্যায়নের রেওয়াজ শুরু। সেই রেওয়াজ এখনও চালু রয়েছে। সেই কারণেই দোল উপলক্ষে চলা এই মেলার প্রধান আকর্ষণ মিষ্টি।''

মেলায় মিষ্টির দোকান খুলে বসা ব্যবসায়ী তপন বিদ বেলন, ''দোগাছিয়া গ্রামের দোল উৎসবের মেলায় মিষ্টিই মূল আকর্ষণ। আমরা নজরকাড়া হরেক রকমের মিষ্টি তৈরি করি। এবছর হাজার টাকা পিস দরের ৮ কেজি ওজনের রসগোল্লা বানিয়েছি। এছাড়াও ৫০০, ৪০০, ২০০ টাকা পিসেরও মিষ্টি রয়েছে। ভিনজেলা থেকেও মেলায় আসেন অনেকে।'' আর এক দোকানি প্রভাত ঘোষ বলেন, ''মেলায় বিক্রি মোটের উপর ঠিকঠাকই আছে। দাম যাই হোক, খদ্দেররা মিষ্টি কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। মেলার স্টলে বসে দল বেঁধে অনেকে হাজার টাকার রসগোল্লাও খাচ্ছেন।''

East Burdwan West Bengal Sweets
Advertisment