সুপার সাইক্লোন 'আমফান'-এর তাণ্ডবের আশঙ্কায় আতঙ্কের প্রহর গুনছে বাংলা। আজ বিকেল থেকে সন্ধের মধ্যে দিঘা ও বাংলাদেশের হাতিয়ার মধ্যে আছড়ে পড়তে পারে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়। আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, ঘণ্টায় ১৬৫-১৭৫ কিমি বেগে বাংলার দিকে ধেয়ে আসছে আমফান। ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৯৯ কিমি। ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে তছনছ হতে পারে বাংলার একাংশ। তবে সবথেকে বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে পারে রাজ্যের তিন জেলা। কলকাতাতেও তাণ্ডবলীলা চালাতে পারে আমফান, এমন আশঙ্কাই করছেন আবহবিদরা।
বাংলার কোথায় সবথেকে বেশি আঘাত হানতে পারে আমফান?
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দুই ২৪ পরগনা ও পূর্ব মেদিনীপুর। ল্যান্ডফলের সময় এই তিন জেলার উপর দিয়ে ঘণ্টায় ১৬৫-১৭৫ কিমি বেগে ধেয়ে যেতে পারে আমফান, সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৮৫ কিমি। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় ডিরেক্টর সঞ্জীব বন্দ্য়োপাধ্য়ায় জানিয়েছেন, দুই ২৪ পরগনায় সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ৪-৫ মিটার পর্যন্ত হতে পারে। পূর্ব মেদিনীপুরে সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস ৩-৪ মিটার পর্যন্ত হতে পারে।
আরও পড়ুন: Cyclone Amphan Live Updates: বুধবার আছড়ে পড়বে সুপার সাইক্লোন ‘আমফান’, আতঙ্কের প্রহর গুনছে বাংলা
আমফানের তাণ্ডব প্রসঙ্গে আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় ডিরেক্টর সঞ্জীব বন্দ্য়োপাধ্য়ায় জানালেন, ''মারাত্মক বিপদের আশঙ্কা করছি আমরা। সকলে নিরাপদ স্থানে থাকুন। বাড়ির বাইরে বেরোবেন না''।
কলকাতায় কতটা ক্ষতি হতে পারে?
কলকাতায় অ্যাডভাইসরি জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ''বুধবার সকাল থেকেই কলকাতায় ঘণ্টায় ৭৫-৮৫ কিমি বেগে বইতে পারে ঝোড়ো হাওয়া, হাওয়ার সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৯৫ কিমি। যত বেলা বাড়বে ঝড়ের বেগ তত বাড়বে। ল্য়ান্ডফলের সময় কলকাতায় ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ হতে পারে ঘণ্টায় ১৩০ কিমি। কলকাতায় সমস্ত অফিস, প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার অ্য়াডভাইসরি জারি করেছি আমরা। রাস্তায় মানুষ যাতে না বেরোন, সেটা নিশ্চিত করা দরকার। সকলে ঘরে থাকুন। কাল প্রচুর গাছ পড়বে। পুরনো বাড়ি যেগুলি বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, সেগুলি ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা থাকছে''।
আরও পড়ুন: আমফানের তিনটি অংশ, মাথা-চোখ-লেজ: মমতার সতর্কতা
মঙ্গলবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেছেন, ''ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে দক্ষিণ ২৪ পরগনা সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কেউ বাড়ির বাইরে বেরোবেন না''। ইতিমধ্য়েই প্রায় ৩ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা। পাশাপাশি বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
আবহবিদদের একাংশের মতে, আমফানের তাণ্ডবলীলা ভয়ঙ্কর হতে পারে। ২০০৯ সালে আয়লার ধ্বংসলীলা দেখেছে বাংলা। কিন্তু আয়লার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় প্রায় ১১২ কিমি। গত নভেম্বরে বুলবুলের তাণ্ডবেরও সাক্ষী থেকেছে বাংলার একাংশ। তবে, আয়লা ও বুলবুলের থেকেও ভয়ঙ্কর হতে পারে আমফান। একথা এদিন বলেছেন মুখ্য়মন্ত্রীও।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন