যত সময় এগিয়েছিল, ততই ঘোরতর হয়েছিল পরিস্থিতি। শক্তি বৃদ্ধি করে সর্বোচ্চ প্রায় ১৫০ কিমি বেগে রাজ্যের উপকূলে ধেয়ে আসল ঘূর্ণিঝড় বুলবুল। তবে সবরকম পরিস্থিতি মোকবিলা করতে তৈরি ছিল রাজ্য প্রশাসন এবং প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে নবান্নের কন্ট্রোলরুমেই রাত জাগেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার রাতে টুইট করে সকলকে সতর্ক এবং নিরাপদ থাকার আশ্বাসও দেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নের পাশাপাশি খোলা ছিল কলকাতা পুরসভার কন্ট্রোল রুমও। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
আরও পড়ুন- বুলবুল আতঙ্কে কাঁপছে সাগরদ্বীপ, সুন্দরবন
এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর মতোই বিনিদ্র রাত জাগেন তাঁরই দলের কর্মী তথা কাকদ্বীপের বিধায়ক এবং সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা। শনিবার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে কাকদ্বীপের বিধায়ক বলেন, "গবাদি পশু থেকে গৃহপালিত পশু যা আছে তাদেরকে আমরা নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে আসছি। মানুষদেরও নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা হয়েছে। এখনও কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা থেকে ৫০ থেকে ৬০ হাজার জনকে নিরাপদ জায়গায় আনা হয়েছে। সাংঘাতিক বৃষ্টি হচ্ছে এখানে।সরকারের তরফে খাওয়া দাওয়ার সব ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে রান্নারও ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এসপি, অ্যাডিশনাল এসপি, জেলাশাসকদের নিয়ে নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে নিচ্ছি।সবরকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা করছি আমরা।"
তবে এই বুলবুল ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবনের ক্ষেত্রে পশুদের জন্য কী ভেবেছিলেন? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার প্রশ্নের উত্তরে মন্টুরাম পাখিরা বলেন, "এখন তো কিছুর করার নেই। পরিবেশ দফতর মূলত এটা দেখে। এই বিপদটা কেটে গেলে আমরা সুন্দরবন দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করব এবং পরবর্তী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তাও ঠিক করা হবে। আমরা চেষ্টা করছি যেন কোনও প্রাণহানি না হয়।" তৃণমূল বিধায়ক মন্টুরামের বক্তব্য, "মুখ্যমন্ত্রী নিজেই কন্ট্রোল রুমে থাকবেন এবং আমাদের সঙ্গে যোগাযোগও রাখছেন। আমাদের মূল লক্ষ্য হল যেন একটা প্রাণহানিও যেন না হয়। যেকোনও উপায়ে সবাইকে বাঁচাতে হবে।"
আরও পড়ুন- ‘বুলবুলে’র তাণ্ডব থেকে বাঁচবেন কীভাবে?
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই প্রায় ৩০ থেকে ৪০টি ক্যাম্প করা হয়েছে কাকদ্বীপ এলাকায়।সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে বলে জানালেন বিধায়ক নিজেই। মন্টুরাম পাখিরা বলেন, "পঞ্চায়েত সমিতি, বিডিও অফিসার, জেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা দল, সিভিল দফতর এবং অন্যান্য সব দফতরের আধিকারিকরা রয়েছেন। আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি। সুন্দরবনের সব এলাকাতেই সমান নজরদারি করা হচ্ছে।"