ওড়িশায় তখনও আছড়ে পড়েনি ফণী, কিন্তু তার আগেই দিঘাতে চলে এল! বৃহস্পতিবার দিনভর ঘূর্ণিঝড় ‘ফণীর’ আতঙ্কে প্রহর গুনেছে ওড়িশা। শুক্রবার থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে প্রলয়। পড়শি রাজ্য হিসাবে এ বাংলাতেও হানা দেবে অতি শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়টি। ফলে, আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস শোনা মাত্রই রাতারাতি বদলে গিয়েছে দিঘা সমুদ্রসৈকতের চেহারা। আশঙ্কা, আতঙ্ক, উদ্বেগে দিঘায় পর্যটকদের মুখের হাসি ম্লান হয়ে গিয়েছে। দুশ্চিন্তায় ঘর ছাড়ার পালা শুরু করেছেন তাঁরা। আর ঠিক তখনই দিঘায় এল ‘ফণী’। না , এ কোনও ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় নয়, বরং এত দুর্যোগের মাঝেও যেন ওর আগমনে দিঘার মুখে হাসি ফুটেছে। ফণী আছড়ে পড়ার আগেই বাংলায় চোখ মেলে তাকিয়েছে নবজাতক ফণী। ফণী ঘূর্ণিঝড়ের মধ্যে জন্মেছে বলেই শিশু কন্যার নাম রাখা হয়েছে ফণী।
আরও পড়ুন: Cyclone Fani Odisha, West Bengal Live: কিছুটা শক্তিক্ষয় করে বাংলায় আসছে ‘ফণী’
প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াল রূপ কেমন হবে, সে আশঙ্কা, উদ্বেগের মধ্যেই দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে শুক্রবার জন্ম হয়েছে এক শিশুকন্যার। এমন দিনে জন্মেছে বলে, বাড়ির লোকও নামকরণ নিয়ে দু'বার ভাবনি। ঘরের একরত্তি মেয়ের নাম রাখা হয়েছে ‘ফণী’। ঝড়ের কথা মাথায় রেখেই যে বাড়ির খুদে সদস্যের এহেন নামকরণ, তা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন ঠাকুমা কাজল দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘ঝড় আসছে। তাই ঝড়ের নাম থেকেই বাড়ির মেয়ের নাম ফণী রাখলাম। আমরা ওকে ফণী বলেই ডাকছি’’।
তবে শুধু বাংলাতেই নয়, ভুবনেশ্বরেও এক নবজাতকের নাম রাখা হয়েছে ফণী। যখন ওড়িশার বুকে তাণ্ডব চালাচ্ছে ফণী, সেসময়ই রেল হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন ৩২ বছরের এক মহিলা। তার নামও ফণী রাখা হয়েছে। ওই মহিলা রেলকর্মী বলে খবর।
আরও পড়ুন: কাকভোরে বাংলায় আসছে ফণী, তৈরি রাজ্য প্রশাসন
এদিকে, দীর্ঘদিন প্রসূতির সিজার হত না দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। ‘ফণী’র হাত ধরেই বহুদিন পর ফের এই পরিষেবা গতকাল চালু হল এই হাসপাতালে। এ প্রসঙ্গে হাসপাতালের আধিকারিক বলেন, ‘‘আগে এখানে প্রসূতির সিজার হত না। দীর্ঘদিন পর প্রসূতির সিজার পরিষেবা চালু হল। আমরা ওর নাম রেখেছি ফণী’’।
ওড়িশার পর ফণীর আতঙ্কে প্রহর গুনছে বাংলা। আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে শুক্রবার মাঝরাত থেকে শনিবার কাকভোরের মধ্যেই বাংলার বুকে আছড়ে পড়তে পারে এই ঘূর্ণিঝড়। তবে ওড়িশা ঘুরে বাংলায় আসার পথে ফণীর শক্তিক্ষয় হবে। এমন দুর্যোগের সময় দিঘায় ওই একরত্তি ‘ফণী’র আগমনে নিঃসন্দেহে খুশির হাওয়া সমুদ্রসৈকতে।