ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র তাণ্ডবের আশঙ্কায় সতর্ক রাজ্য প্রশাসন। কড়া নজর রাখছে ফণীর যাত্রাপথে। যাত্রী সুরক্ষার কথা মাথায় রেখে একাধিক ট্রেন বাতিল করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। হাওড়া-পুরী শতাব্দী এক্সপ্রেস, হাওড়া-পুরী জগন্নাথ এক্সপ্রেস, ফলকনামা, করমণ্ডল-সহ বিভিন্ন ট্রেন আপাতত বাতিল ঘোষণা করেছে রেল। দীঘা, বকখালি, কাকদ্বীপ, নামখানা-সহ সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় চূড়ান্ত সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। মৎস্যজীবীদের সমুদ্র যেতে নিষেধ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই জগন্নাথ ধাম পুরীর সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় পর্যটকদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এদিকে কলকাতা পুরসভার তরফে প্রতিটি বিভাগকে তৎপর থাকতে বলা হয়েছে।
ফণীর আগমনকে কেন্দ্র করে উত্তাল হতে পারে সমুদ্র, আশঙ্কা করছে রাজ্য প্রশাসন। তাই আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দীঘা, বকখালি, নামখানা, সাগর-সহ বিভিন্ন সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকায় মাইকে প্রচার করা শুরু করেছে প্রশাসন। পাশাপাশি পর্যটকদের সমুদ্রের ধারে কাছে যাওয়া যাবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে প্রশাসন। এইসব জায়গায় ইতিমধ্যেই উপকূলরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি ত্রাণের বন্দোবস্ত করেছে সংশ্লিষ্ট দফতর।
আরও পড়ুন: আসছে ‘ফণী’, ছোটো করা হল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের ধ্বজা
ফনী নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ্য প্রশাসন। নবান্নে জরুরি বৈঠক করা হয়েছে। প্রচারে গিয়েও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন ফণীর দিকেও নজর রাখতে হচ্ছে। কলকাতা পুরসভার জল নিকাশি, বিল্ডিং, পার্ক, আলো-সহ বিভিন্ন বিভাগকে সতর্ক থাকতে বলেছে। বিশেষ করে নিকাশি বিভাগকে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে। সাড়ে তিনশো কর্মী জরুরি তলবের জন্য প্রস্তুত বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছ। পাম্পিং স্টেশনগুলো যাতে ঠিকঠাক কাজ করে তা খতিয়ে দেখছেন পুরো ইঞ্জিনিয়ররা। গাছ যদি কোথাও ভেঙে পড়ে তড়িঘড়ি তা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়েও সতর্ক পুর কতৃপক্ষ। কোনও ভবনের যদি ক্ষতি হয় সেদিকে নজর দিতে এসব বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে সতর্ক থাকতে বলেছে পুরসভা। বৃষ্টির ফলে যদি শহরে জল ঢুকে যায় তার জন্য বিভিন্ন লকগেট বন্ধ রাখার জন্য ব্যবস্থা নিতে চলেছে কলকাতা পুরসভা।
আরও পড়ুন: কাল ওড়িশায় ধেয়ে আসছে ‘ফণী’, বাংলাতেও তাণ্ডবের আশঙ্কা
ফণীর তাণ্ডবে ওড়িশা উপকূল ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রশাসন পুরী থেকে পর্যটকদের ফিরে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় পুরী থেকে একটি বিশেষ ট্রেন শালিমারের উদ্দেশে রওনা দেবে। ওই ট্রেনে অধিকাংশ পর্যটককে ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানা গিয়েছে। বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে পুরীর সমুদ্রে ২টো জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। পর্যটকদের পুরী থেকে নিয়ে আসার জন্য আরও দুটি বিশেষ ট্রেন চালু করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। দুপুর ৩টে নাগাদ পুরী থেকে একটি বিশেষ ট্রেন রওনা দেবে হাওড়ার দিকে। পাশাপাশি, সন্ধে ৬টা নাগাদ হাওড়াগামী আরও একটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।