Advertisment

Cyclone Yaas: নোনা জল গিলেছে বেঁচে থাকার রসদ, সব হারিয়ে নিঃস্ব সুন্দরবনের মানুষ

Cyclone Yaas: প্রথমে করোনা অতিমারী, তারপর আমফান এখন ইয়াস। ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগটুকু পাচ্ছেন না বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষরা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Cyclone Yaas, Sunderbans

ঘূর্ণিঝড় আর কোটালের জোড়া গ্রাসে বিধ্বস্ত সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা।

Cyclone Yaas: যে দিকেই চোখ যায়, চতুর্দিকে শুধুই ধ্বংসের চিহ্ন। ঘূর্ণিঝড় আর কোটালের জোড়া গ্রাসে বিধ্বস্ত সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা। সমুদ্রের নোনা জল গিলেছে চাষের জমি, মাছের ভেড়ি, পানের বরজ, ঘরবাড়ি। রাস্তাও জলের তলায়। নদীর পাড় বলে অবশিষ্ট আর কিছু নেই। সব কিছু খুইয়ে এখন নিজেদের কপালকে দুষছেন সুন্দরবনবাসী। "ভগবান কেন এত নিষ্ঠুর? কেন এত রাগ আমাদের উপর?", বলছেন নামখানার মানিক প্রধান।

Advertisment

গত বছর থেকে দুর্ভোগের শুরু হয়েছে। প্রথমে করোনা অতিমারী, তারপর আমফান এখন ইয়াস। ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগটুকু পাচ্ছেন না বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য অঞ্চলে বসবাসকারী মানুষরা। জল থেকে একটা পেল্লাই সাইজের মরা কাতলা মাছ তুলে নিয়ে প্রণব মণ্ডল বলছেন, "আমাদের অবস্থাও এই মরা মাছের মতো। নোনাজল মিষ্টি জলের ভেড়িতে ঢুকে মেরে দিয়েছে মাছ। আমরাও একের পর এক দুর্যোগে দিশাহারা। আমফান, করোনা আর এখন ইয়াস।"

আরও পড়ুন ইয়াস পরবর্তী পুনর্গঠন কাজ-ত্রাণ বন্টন নিয়ে কড়া হুঁশিয়ারি মমতার

মানিক প্রধান, প্রণব মণ্ডলদের মতো নামখানা ব্লকের কয়েক হাজার মানুষ এখন সব কিছু হারিয়ে নিঃস্ব। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে আমফান আর ইয়াসের জেরে। কয়েক মাস আগেই মানিক সরকারের দেওয়া আমফানের ক্ষতিপূরণের টাকা দিয়ে ঘরের ছাউনি দেবেন ঠিক করেছিলেন। সরকারি ক্ষতিপূরণ এবং এদিক-ওদিক থেকে মোট ৬০ হাজার টাকা জোগাড় করে কয়েক সপ্তাহ আগেই ঘর মেরামতির জিনিসপত্র কিনেছিলেন। ইয়াস ফের সব গিলে নিল, আক্ষেপ তাঁর।

বকখালি সৈকত থেকে নামখানা যাওয়ার সড়কে সার দিয়ে ছোট ছোট ট্রাক এসে দাঁড়াচ্ছে। সেখান থেকে দুস্থ, ইয়াস বিধ্বস্ত মানুষদের ত্রাণ বিলি চলছে। ৩০০ কিমি দূর আসানসোল থেকে এখানে এসে শুকনো খাবার আর ত্রাণ দিচ্ছেন সমাজকর্মী তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, "মৌসুনি দ্বীপে গিয়ে আমরা চমকে যাই। ভয়াবহ অবস্থা ওখানে। কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। পর্যটন কেন্দ্র থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি সব ভেসে গিয়েছে। সমুদের নোনাজলে মিষ্টি জলের চিংড়ির ভেড়ি শেষ করে দিয়েছে। জানি না, কীভাবে মানুষগুলো বাঁচব।"

আরও পড়ুন সুন্দরবনে মৃতপ্রায় রয়্যাল বেঙ্গলকে বাঁচানোর চেষ্টা, তবুও শেষ রক্ষা হল না

কিছু সাহায্য়ের জন্য ১৫০ টাকা কেজি প্রতি দামে ১৫ কেজি চিংড়ি কিনেছেন বার্ণপুরের নববিকাশ ক্লাবের সদস্যরা। এই সাইজের চিংড়ি সাধারণত ৬০০-৬৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়। এতে যদি কিছু সাহায্য হয় অসহায়দের। সরকার থেকে ১ লক্ষ টাকা ত্রাণ বিলির জন্য সাহায্য পেয়েছেন তাঁরা। তাই দিয়েই চলছে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কাজ।

আরও পড়ুন “দিঘায় মেরিন ড্রাইভ ভাঙল কী করে?” সেচ দফতরের উপর রেগে আগুন মমতা

ব্লক উন্নয়ন আধিকারিক শান্তনু সিং ঠাকুর বলছেন, "প্রায় ৬২ হাজার মানুষকে সাইক্লোনের আগে ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৬২টি কমিউনিটি কিচেন চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।" দিনে দুবেলা এইভাবেই নিঃস্ব মানুষগুলোর মুখে অন্ন তুলে দেওয়া হচ্ছে। যা পরিস্থিতি তাতে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকায় একই চিত্র। ঈশ্বরের অভিশাপে ফি বছর নিঃস্ব হন তাঁরা। বছর ঘুরলেও হাল বদলায় না তাঁদের। ঘুরে দাঁড়ানোর আগেই কোমর ভেঙে গেছে সুন্দরবনবাসীদের।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Cyclone Yaas coronavirus Sunderban amphan
Advertisment