কারা রয়েছে অবস্থানের পিছনে? কাদের টাকায় আন্দোলন? প্রশ্ন তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। এমনকী চিরকূটে চাকরি নিয়ে জোরালো অভিযোগ করে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। ধর্মতলায় শহিদ মিনারের পাশে অবস্থানে বসা সরকারি কর্মীরা এই অভিযোগগুলির তীব্র বিরোধিতাই শুধু করেনি তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বড় অডিট ফার্ম দিয়ে অডিট করিয়ে তা প্রকাশ্যে সামাজিক মাধ্যমেও প্রকাশ করে দেবে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের আন্দোলনে যে কোনও কাটমানি বা অসৎ পয়সা নেই তা জোর গলায় জানিয়ে দিয়েছে নেতৃত্ব।
নববর্ষে হালখাতায় রাজ্য় সরকার বকেয়া না মেটানোয় কটাক্ষ করেছে ডিএ আন্দোলনকারীরা। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের রাজ্য আহ্বায়ক ভাস্কর ঘোষ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'আজ হালখাতা। বাংলাতে প্রচলিত প্রবাদ আছে যা কিছু বাকি থাকে তা এই দিনে পরিশোধ করতে হয়। আমাদের এখানে হালখাতা চলছে, ৩৬ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বাকি আছে তা মিটিয়ে দিয়ে যান।'
আন্দোলনের ফান্ডিং নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই প্রসঙ্গ ভাস্কর ঘোষ বলেন, 'তদন্তকারী সংস্থা তদন্ত করুক। আমাদের কাছে পাইপয়সার হিসেব আছে। রাজ্যের সরকারি কর্মচারি, শিক্ষক আমরা। আমাদের আন্দোলন করার জন্য বিরোধী দলের মদত লাগে না। ১২ বছর ধরে কাটমানি খেয়ে সরকার চালিয়েছেন, নিজেদের দলের কর্মসূচি করতে সরকারি ফান্ড খরচ করতে হয়, তাদের কাছে এই ভাবনা স্বাভাবিক। কয়েকদিন পর বড় অডিট ফার্ম দিয়ে অডিট করে ফেসবুকেও দিয়ে দেব।'
আন্দোলনকারী অনিতা সরকার বলেন, 'এতো বেশি চুরি, এতো বেশি অনিয়ম, অনাচার করে চলেছে। তাদের তো এখন এগুলিই বলতে হবে। আমরা একটা মঞ্চ করেছি অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। এখন আমাদের মঞ্চে কেউ যদি আসেন, আমাদের হয়ে কথা বলেন, আমরা কাউকে আহ্বান করিনি, আমরা কাউকে যেতে বলিনি।' এই মঞ্চে তৃণমূলকে আসতেও আহ্বান জানিয়েছেন অনিতাদেবী। তিনি বলেন, 'ওদের তো আসতে না বলিনি। তৃণমূলও আসুক। এখানে এসে ওদের কথা বলুক।'
সরকারি কর্মীদের চিরকূটে চাকরি নিয়ে বারে বারে অভিযোগ করে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের তাবড় নেতৃত্ব। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর স্ত্রীর চাকরিতে যোগদানের আবেদন পত্র প্রকাশ করে অভিযোগ করতে কসুর করেনি তৃণমূল। আন্দোলনকারী ইন্দ্রজিত মণ্ডল বলেন, 'চিরকূটে চাকরির কথা বলেছেন, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চাকরি পাওয়ার সমস্ত প্রমানপত্র পাঠাতে শুরু করব।'
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, তাঁরা ন্যায্য ছুটি নিয়েই অবস্থানে বসেছেন। তাঁদের দাবি আদায়ের ব্যাপারে তাঁরা বদ্ধপরকির। সরকারি কর্মীদের দাবি, অবস্থান নিয়ে যতই কাঁদা ছেটানোর চেষ্টা করুক সমস্ত কিছুর জবাব তাঁদের কাছে আছে।