ডিএ নিয়ে আদালতে জোর ধাক্কা রাজ্যের। ডিভিশন বেঞ্চে রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিল রাজ্য সরকার। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের সেই আর্জি খারিজ করে দিয়েছে। অর্থাৎ, ৩ মাসের মধ্যে বকেয়া ডিএ মেটানোর আগের নির্দেশই বহাল রাখল আদালত। আজ কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ ডিএ মামলায় তাঁদের চূড়ান্ত রায় জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, রাজ্যে সরকারি কর্মীদের মহার্ঘভাতার দাবি দীর্ঘদিনের। এর আগে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালও ডিএ মামলায় সরকারি কর্মীদের পক্ষেই রায় জানিয়েছিল। তবে স্যাট-এর সেই রায়ের বিরোধিতা করেছিল রাজ্য সরকার। স্যাট-এর রায়ের বিরোধিতা করে এরপর কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। তবে আদালতও সরকারি কর্মীদের পক্ষেই রায় দান করে। 'ডিএ সরকারি কর্মীদের মৌলিক ও ন্যায্য অধিকার', বলে জানিয়ে আগামী ৩ মাসের মধ্যে রাজ্য সরকারকে বকেয়া মহার্ঘভাতা মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
যদিও ডিভিশন বেঞ্চের সেই রায়ই পুনর্বিবেচনার আর্জি জানায় রাজ্য সরকার। তবে রাজ্যের সেই আর্জি খারিজ হয়ে গেল। ডিএ মামলায় আগের নির্দেশই বহাল রাখলেন হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন ও বিচারপতি রবীন্দ্রনাথ সামন্তের ডিভিশন বেঞ্চ। অর্থাৎ সরকারি কর্মীদের পক্ষেই রায় দিল আদালত। টাকার অভাবে সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া মহার্ঘভাতা দেওয়া যাচ্ছে না বলে এর আগে হাইকোর্টে যুক্তি দিয়েছিল রাজ্য সরকার। তবে ডিএ মামলায় ধোপে টিকল না রাজ্যের সেই যুক্তি।
আরও পড়ুন- কিছুতেই কাটছে না দুর্যোগ-উদ্বেগ, পুজো ভাসাবে বৃষ্টি?
এদিকে, ডিএ মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ভাবনা রাজ্য সরকারের। ''সরকারের সঙ্গে অসহযোগিতা করব না, তবে এই রায় প্রত্যাশিতই ছিল'', ডিএ মামলার রাযদানের পর প্রতিক্রিয়া কর্মচারী সংগঠনের।
এদিকে, ডিএ নিয়ে হাইকোর্টের এই রায়ের প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেন, ''তিনি অন্য জায়গায় ভোটের জন্য কোটি-কোটি টাকা ঢেলে দিচ্ছেন। স্ফূর্তির জন্য টাকা ঢালছেন। সরকারি কর্মীদের ডিএ অনেকদিন বাড়িয়ে দেওয়া উচিত ছিল। তারা সেটা করেনি। বারবার তারা আদালতে গিয়েছে, বারবার হেরেছে। আমার বিশ্বাস, এবার তাঁরা সরকারি কর্মীদের ডিএ দিতে বাধ্য হবেন। সরকারের অন্যায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের এই নির্দেশকে সম্মান জানাচ্ছি।''
আরও পড়ুন- কলকাতা সহ দেশের প্রায় ৫০ জায়গায় হানা, NIA-এর জালে PFI-এর শ’খানেক কর্মী
অন্যদিকে, ডিএ মামলায় হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যও। তিনি বলেন, ''এই রায় প্রত্যাশিতই ছিল। তৃণমূলের সরকার রাজ্য সরকারি কর্মী ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সুপ্রিম কোর্ট ডিএ পাওয়ার অধিকারকে আইনসিদ্ধ বলেছিল। পরিকল্পনা করেই ডিএ মেটানোর তিন মাসের মেয়াদ শেষের কয়েকদিন আগেই রাজ্য রিভিউ পিটিশন দাখিল করে। ডিএ যা দিতে না দিতে হয় গোটা ব্যবস্থাটাকে আইনি প্রক্রিয়ায় ঢুকিয়েছে। তবে সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য গেলেও এই রায়ই বহাল থাকবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি।''