Advertisment

বন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার বৃদ্ধা মা ও দুই মেয়ের মৃতদেহ, জানুন নেপথ্যের কাহিনী

আত্মহত্যা নাকি অন্যকিছু?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Burdwan Body

কোভিড আক্রান্ত হয়ে স্বামী ও বাবা মৃত্যুর পর থেকে চরম মনকষ্টে দুই মেয়েকে নিয়ে দিন কাটাচ্ছিলে বৃদ্ধা। তাঁদের তিন জনেরই মৃতদেহ বৃহস্পতিবার উদ্ধার হল বাড়ির ডাইনিং রুম থেকে। মৃতরা হলেন মা মৃণালিনী চৌধুরী (৬০) ও তাঁর দুই মেয়ে বন্দিতা চৌধুরী (৪০) এবং সঙ্ঘমিতা চৌধুরী (৩২)। এই ঘটনা জানাজানি হতে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে বর্ধমানের পীরপুকুর এলাকায়। খবর পেয়ে বর্ধমান থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়। ময়নাতদন্তের জন্য তিনটি মৃতদেহ পাঠানো হয় বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে। একই পরিবারের তিন জনের এমন মৃত্যুর কী কারণে, তা এখনও পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। তবে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায় বলেছেন, 'মৃতদের শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সমন্ধে নিশ্চিৎ হওয়া যাবে।'

Advertisment

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে ,পীরপুকুর এলাকার বাড়িতেই দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন বৃদ্ধা মৃণালিনীদেবী। একই বাড়ির দো-তলায় থাকেন মৃণালিনীদেবীর মা প্রতিমারাণী মণ্ডল। বড় মেয়ে বন্দিতা চৌধুরী বাড়িতে থাকতেন। ছোট মেয়ে সঙ্ঘমিতা চৌধুরী একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কাজ করতেন। তবে সপ্তাহ খানেক আগে সেই কাজও ছেড়ে দেন সঙ্ঘমিতা। অন্যান্য দিনের মত বৃহস্পতিবার সকালেও মৃণালিনীদেবীর বাড়িতে আসেন আয়া রুপালী হাজরা। দরজা বন্ধ থাকায় রুপালী দীর্ঘক্ষণ ডাকাডাকি করেন। কিন্তু ঘরের ভিতর থেকে কেউ দরজা না খোলায় এবং বৃদ্ধা ও তাঁর দুই মেয়ের কোনও সাড়া শব্দ না পেয়ে আয়া প্রতিবেশীদের খবর দেন। খবর দেওয়া হয় তাদের আত্মীয়দের। প্রতিবেশী ও আত্মীয়রা অনেক কশরত করে দরজা খোলেন।

আরও পড়ুন- ভয়ঙ্কর, মেধা তালিকায় নাম ওঠা রুখতে মাধ্যমিকের ছাত্রীর হাতে অ্যাসিড ঢালল বন্ধু

দরজা খুলতেই তারা দেখেন ঘরের ডাইনিং রুমের মেঝের বিভিন্ন জায়গায় পড়ে রয়েছে মা ও দুই মেয়ের মৃতদেহ। ডাইনিংর মধ্যে একটি বিষের বোতল পড়ে থাকতে দেখেন তারা। আয়া রূপালী হাজরা জানান, বাথরুমে থাকা একটি প্লাস্টিকের টব বের করে ডাইনিংয়ে যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল সেটাও ঘরে ঢুকে দেখা গেছে ।ওই টবে মনে হয় বমি ফেলা ছিল।

মৃণালিনী চৌধুরীর মামা বিশ্বনাথ মল্লিক বলেন, 'কোভিডের সময় মৃণালিনী চৌধুরীর স্বামী বিমল চৌধুরী ও তার বাবা ভোলানাথ মণ্ডল মারা যান। তারপর থেকেই মৃণালিনী ও তার দুই মেয়ে মনকষ্টে দিন কাটাচ্ছিল। পরিজনের অকাল প্রয়াণের পর থেকে একাকীত্বের কারণে তাঁদের মধ্যে অবসাদও গ্রাস করে।' এইসব জানার পর পুলিশ কর্তাদের প্রাথমিক অনুমান, তিন জনই আত্মঘাতী হয়েছেন।

Death Suicide COVID-19
Advertisment