Dead body recover At malda: রহস্যজনক অবস্থায় বাড়ির রান্নাঘর থেকে দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। সোমবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে, পুরাতন মালদা পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মঙ্গলবাড়ি মহানন্দা কলোনি এলাকায়।
মৃতদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানতে পেরেছে, মায়ের সাথে ঝগড়া করার পরেই অভিমানবশত ওই মেধাবী ছাত্রী গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রীর নাম সিউটি সরকার (১৫)। সে পুরাতন মালদার গৌড় ঘোষ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী। পঞ্চম শ্রেণী থেকেই বরাবরই 'ফাস্ট গার্ল' হিসাবেই পরিচিত ছিল স্কুলে। আচমকা স্কুলের মেধাবী ছাত্রীর রহস্যজনক মৃত্যুতে শোকার্ত হয়ে পড়েছেন তার সহপাঠী থেকে শিক্ষক ও শিক্ষিকারা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ছাত্রীর বাবা বিশ্বজিৎ সরকার, তিনি পেশায় পুরাতন মালদা পুরসভার অস্থায়ী কর্মী পদে কর্মরত। বিশ্বজিৎবাবুর তিন মেয়ে। সিউটি ছিল মেজো মেয়ে। বড় মেয়ে পুরাতন মালদার গৌড় কলেজের পাঠরতা। ছোট মেয়ে সংশ্লিষ্ট এলাকার একটি স্কুলের ছাত্রী রয়েছে। শত কষ্টের মধ্যেও তিন মেয়েকে মানুষ করে চলেছিল বিশ্বজিৎবাবু।
মৃত ছাত্রী পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্বজিৎ সরকারের স্ত্রী পূজা সরকার আংশিকভাবে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন। প্রায় দিনই মেজো মেয়ের সঙ্গে মায়ের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে ঝগড়া ঝাঁটি বাঁধতো। এদিন সামান্য রান্না করাকে নিয়েই মা এবং মেজো মেয়ের মধ্যেই ঝগড়া শুরু হয়। এরপরই রাগের মাথায় রান্নাঘরের দরজা লাগিয়ে সিলিংয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয় ওই ছাত্রী।
মৃত ছাত্রীরা দিদি অষ্টমী সরকার বলেন , বরাবরই ও মেধাবী ছিল। দশম শ্রেণী পর্যন্ত বরাবরই ফাস্ট গার্ল হিসাবে স্কুলে পরিচিত ছিল সে। তবে বোন যে সামান্য বিষয় নিয়ে এমন অভিমানে দুর্ঘটনা ঘটাবে আমরা কেউ ভাবতেই পারে নি ।
১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল দলের প্রাক্তন কাউন্সিলর বিষ্ণুপদ সরকার এদিন এই ঘটনার পর মৃত ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। বিষ্ণুপদবাবু জানিয়েছেন, এত অল্প বয়সে এরকম মেধাবী ছেলেমেয়েরা দুর্ঘটনা ঘটাচ্ছে, সেটা সত্যি ভাববার বিষয়। এক্ষেত্রে এই ধরনের পড়ুয়াদের কাউন্সিলিংয়ের প্রয়োজন রয়েছে। বিভিন্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যে যদি সমস্ত পড়ুয়াদের নিয়ে পড়াশোনার মাধ্যমে কাউন্সিলিংয়ের করায়, তাহলে হয়তো এমন ঘটনা ঘটবে না।
পুরাতন মালদা থানার পুলিশ জানিয়েছে , মৃত ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজের পাঠানো ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করা হচ্ছে, বাড়ির লোকেদের সঙ্গে ঝগড়াঝাঁটি করে অভিমান বশত আত্মঘাতী হয়েছে ওই ছাত্রী।