'এখন তো দিল্লির প্রতিনিধিরা এসেও জয় বাংলা বলছেন'। সরাসরি নাম না নিলেও অভিষেকের ইঙ্গিত যে পশ্চিমবঙ্গের নতুন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের দিকেই তা বুঝতে অবশ্য অসুবিধা হয়নি রাজনৈতিক মহলের। শনিবার কেশপুরের প্রকাশ্য জনসভা থেকে 'জয় বাংলা' স্লোগান নিয়ে তৃণমূল নেতার বক্তব্যে চর্চা তুঙ্গে।
পঞ্চায়েত নির্বাচন দোরগোড়ায। তার আগে জনসংযোগের কাজে বিন্দুমাত্র ফাঁক রাখতে নারাজ তৃণমূল। শনিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে দলের প্রকাশ্য জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন সর্বভারতীয় তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় এদিনও অভিষেক নিশানা করেছেন বিরোধীদের। দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আসলে তৃণমূলকে অপদস্থ করার চেষ্টাই করছে বিরোধীরা, এদিন এমনই দাবি করেছেন অভিষেক।
Advertisment
সভা শেষে মঞ্চ থেকেই অভিষেক তোলেন 'জয় বাংলা' স্লোগান। আর এই স্লোগান দিতে গিয়েই অভিষেক বলেন, 'জয় বাংলা এত জোরে বলতে হবে দিল্লি যেন কাঁপে। এখন তো দিল্লির প্রতিনিধিরা এসেও জয় বাংলা বলছেন। এটাই তো মমতা ব্যানার্জির জয়।' তৃণমূল সাংসদের এই মন্তব্যেরই চর্চা তুঙ্গে উঠেছে। সরস্বতী পুজোর দিন বিকেলে রাজভবনে বাংলা শেখার 'হাতেখড়ি' দিয়েছিলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
ওই অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও 'জয় বাংলা' বলেন। যা নিয়ে তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। প্রাক্তন রাজ্যপাল তথা বিজেপির বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায় সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এক সময় ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের রাজ্যপাল পদে থাকা তথাগত রায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, ‘আমি এর আগেও জয় বাংলা স্লোগানের প্রতিবাদ করেছি। আমরা যেমন জয়হিন্দ বলি তেমনই বাংলাদেশে জয় বাংলা। ভারতের মাটিতে দাঁড়িয়ে জয় বাংলা বলাটা একেবারে অনুচিত। একথা আমি আগেও বলেছি।’
তথাগত রায় এছাড়াও শুভেন্দু অধিকারী থেকে শুরু করে দিলীপ ঘোষরাও রাজ্যপালের 'জয় বাংলা' মন্তব্যের সমালোচনায় সরব হন। এবার খোদ অভিষেক ব্যানার্জিই ঘুরিয়ে বলে দিলেন দিল্লির প্রতিনিধিরাও 'জয় বাংলা' বলছেন। এটাই তো মমতা ব্যানার্জির জয়। রাজনৈতিক মহল বলছে, তৃণমূল সাংসদের এই মন্তব্য এবার নয়া বিতর্কের জন্ম দিল।