scorecardresearch

আবাসে দুর্নীতির ভুরিভুরি অভিযোগ, সুবিধা-ত্যাগীদের মঞ্চে তুলে পাল্টা জবাব অভিষেকের

তৃণমূলের সকলে ‘সৎ’, প্রমানের মরিয়া চেষ্টা অভিষেকের!

Abhisheks counter-reply by bringing up those who have given up awas benefits on stage amid allegations of corruption, আবাসে দুর্নীতির ভুরিভুরি অভিযোগ, সুবিধা-ত্যাগীদের মঞ্চে তুলে পাল্টা জবাব অভিষেকের
কেশপুরের সভায় এই তিন জনকে তুলে ধরেছেন অভিষেক।

আবাস তালিকা কেলেঙ্কারিতে শাসক দলের নেতা, পঞ্চায়েত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার অভিযোগ। দুর্নীতির খবর পৌঁছেছে দিল্লি পর্যন্ত। বিরোধী কটাক্ষে বিদ্ধ তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে বিরোধীদের অভিযোগ নস্যাতে মরিয়া খোদ তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা আসলে ‘সৎ’ তা বোঝাতে শনিবার কেশপুরের আনন্দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সভামঞ্চে তিন জনকে তুলে ধরেছেন তিনি। তাঁদের পরিচয় ও বাড়ির ছবি দেখিয়ে প্রমাণের চেষ্টা করেছেন আবাস দুর্নীতিতে তৃণমূলের কেউ জড়িত নয়।

শুরুতেই আসন্ন পঞ্চায়েতের প্রার্থী নির্বাচন ও দলের শৃঙ্খলা নিয়ে ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ বক্তব্য পেশ করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপরই তিনি বিজেপিকে নিশানা করেন। বলেন, ‘এমন একটা ধারণা দেওয়া চেষ্টা হচ্ছে যেন বাংলার মানুষ মানেই চোর, দুর্নীনিগ্রস্ত।’

পরক্ষণেই অভিষেককে বলতে শোনা যায়, ‘আমি যখন শুনলাম ১৯ জানুয়ারি কেশপুরে কেন্দ্রীয় দল আসছে তখন আমিও কৌঁজ নিয়ে দেখলাম এখানে একজন ভদ্রলোক আছেন। নাম শেখ হোসিনুদ্দিন।’ এরপরই ওই ব্যক্তিকে মঞ্চে ডেকে নেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক।

দলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ডে’র নির্দেশ পেয়েই মঞ্চে আসেন শেখ হোসিনুদ্দিন। তাঁর কাঁধে হাত দিয়ে অভিষেক জনতার থেকে জানতে চান, ‘ইনি কোনও দল করেন না। এনাকে দেখে কী চোর, দু’নম্বরি, দুর্নীতিপরায়ণ মনে হচ্ছে? যাঁরা বলছেন তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধানকে টাকা দিয়ে আবাসের বাড়ি পেতে হয় তাঁরা এনাকে দেখুন। এই ভদ্রলোকের নামে বাড়ি এসেছিল কিন্তু উনি প্রধানকে গিয়ে বলেছেন আমার বাড়ির দরকার নেই। টাকা নেব না।’ মঞ্চেই অভিষেকের কথায় সাড়া দিয়ে শেখ হোসিনুদ্দিন জানিয়ে দেন তিনি টাকার বিনিময়ে আবাসের বাড়ি পাননি।

আরও পড়ুন- ‘দিল্লির প্রতিনিধিরাও জয় বাংলা বলছেন’, ঘুরিয়ে রাজ্যপালকে ইঙ্গিত করে BJP-কে দুষলেন অভিষেক

আরও পড়ুন- আচমকা গ্রামে হাজির অভিষেক, সটান ফোন মন্ত্রীকে! কী বললেন?

আরও পড়ুন- তিন-চারজনের রেশারেশিতে দলের মাথা নত হলে বরদাস্ত নয়’, ভীষণ কড়া অভিষেক!

শেখ হোসিনুদ্দিন যে প্রকৃত সৎ তা তুলে তাঁর বাড়ির থবিও মঞ্চে দেখান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘোষণা করেন, ‘শেখ হোসিনুদ্দিনের মতো মানুষরাই আসন্ন পঞ্চায়েতের তৃণমূলের মুখ।’ শেখ হোসিনুদ্দিনের মেয়ের বিয়ের সব দায়িত্ব তাঁর বলে আশ্বাস দিয়েছেন অভিষেক।

অভিষেকের দাবি, ‘উনি কষ্ট করে ছেলে মেয়েদের বড় করছেন। উনি প্রধানকে বলেছেন, বাড়ির তৈরির জন্য যদি ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা নেন, সেই বাড়ি ঠিক ভাবে তৈরি করতে আরও ৩ লক্ষ টাকা খরচ হবে। তখন তিনি মেয়ের বিয়ে দিতে পারবেন না। এটাই বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতি। বিজেপি এমনভাবে বাংলাকে দেখায় যেন এদের থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত আর কেউ নেই।’

আরও পড়ুন- লোকসভা নির্বাচন বহুদূর, কৌশলী অভিষেক, ঘাটাল-মেদিনীপুর কেন্দ্রের জয়ের ব্যবধানের লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা!

এখানেই শেষ নয়। এরপর কেশপুরের গোলান গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যা মঞ্জু দলবেরা ও বুথ সভাপতি অভিজিৎ দলবেরাকে মঞ্চে ডাকেন অভিষেক। মঞ্জু ও অভিজিৎ সম্পর্কে স্বামী-স্ত্রী। অভিজিৎবাবুর মায়ের নাম আবাস তালিকায় ছিল। যা এই দম্পতি কাটিয়ে দিয়েছেন। ১০ বছরের বেশি অভিজিৎবাবু তৃণমূলের স্থানীয় বুথ সভাপতি। তারপরও তাঁর জীবনযাপন, খড়ের চালের বাড়িতে থাকাকে ‘সততা’কে নজির বলে তুলে ধরতে চেয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। এই দম্পতিকে দেখিয়ে জনতার কাছে অভিষেকের প্রশ্ন, ‘এঁদের দেখুন। এঁদের কি মনে হয় দুর্নীতিগ্রস্ত?’ দলবেরা দম্পতির ঘর বানিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব দলের বলে প্রতিশ্রুতি দেন তৃণণূলের শীর্ষ নেতা।

তবে এসবকে আমল দিতে নারাজ বিজেপি ও বামেরা। পদ্ম নেতা রাহুল সিনহা বলেছেন, ‘এইসব উদাহরণ দিয়ে লাভ নেই। মানুষ সব জানে। সত্য হল দিদির দূতেদের সামনে বিক্ষোভ. কেন্দ্রীয় রিপোর্টের দুর্নীতির উল্লেখ। এসব নাটক করে তাই লাভ নেই।’ সিপিআইএম নেতা শমীক লাহিড়ির কথায়, ‘সূত্রের ব্যতিক্রম থাকে। আজ যাঁদের মঞ্চে তোলা হয়েছিল তাঁরা সেরকমই। আসলে তো তৃণমূল মানেই দুর্নীতি। পঞ্চায়েত এগোচ্ছে, তাই ওদের এসব করে গিমিক দিতে হচ্ছে। বাংলার আসল চেহারা তো এটা নয়।’

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Abhisheks counter reply by bringing up those who have given up awas benefits on stage amid allegations of corruption