বীরভূমের প্রস্তাবিত দেউচা-পাঁচামি কয়লাখনি প্রকল্পের বিরোধিতা করছে রাজ্যের প্রধান তিন বিরোধী দল। ইতিমধ্যে কংগ্রেস, সিপিএম ও বিজেপি নেতৃত্ব এই প্রকল্প এলাকায় গিয়েছেন। সাধারণ মানুষ প্রকল্প চাইছে না দাবি করে তিনদলই চরম বিরোধীতায় নেমেছে। এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসও প্রকল্পের সমর্থনে ওই এলাকায় গিয়েছিল। তবে কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থন চায় না আন্দোলনকারী আদিবাসী সংগঠন। এদিকে রাজ্য আয়োজিত বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনেও দেউচা-পাঁচামির কয়লাখনির কথা উল্লেখ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
দুদিন আগেই দেওয়ানগঞ্জের মথুরাপাহারীতে আদিবাসীদের হাতে তাড়া খেতে হয়েছে খোদ তৃণমূল কংগ্রেসকে। তারপর রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি অধীর চোধুরীকে কাপাসডাঙার পর আর যেতে দেওয়া হয়নি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জাতীয় সড়কের পাশের গ্রাম দেউচা গিয়েছিলেন, ভিতরের গ্রামে যাননি। আন্দোলনকারীদের কথায়, 'কয়লাখনির সমর্থনে বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসেছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আমরা প্রতিরোধ করেছি। তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। অধীর চৌধুরীকে কাপাসডাঙার পর আর ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শুভেন্দু অধিকারী তো মেইন রোডের পাশে বাসস্টপ সংলগ্ন দেউচা গ্রামে এসেছিলেন।'
মোদ্দা কথা বীরভূম জমি জীবন জীবিকা ও প্রকৃতি বাঁচাও মহাসভা কোনও রাজনৈতিক দলকে কয়লাখনি বিরোধীতার আন্দোলনে পাশে চাইছে না। মহাসভার আহ্বায়ক গণেশ কিস্কু বলেন, 'আমাদের সংগঠন কোনও রাজনৈতিক দলের সমর্থন আপাতত চাইছে না। সমস্ত রাজনৈতিক দল আদিবাসীদের উচ্ছেদ করেছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে আজ কংগ্রেস, বিজেপি বা সিপিএমের সমর্থন নেব। তারাও একদিন রাজার চেয়ারে(ক্ষমতায় এসে) বসে আমাদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করবে। তাই আমরা কারও সমর্থন এখন চাইছি না।'
ইতিমধ্যে রাজ্য সরকার ১০ হাজার কোটি টাকার পুনর্বাসন প্রকল্প ঘোষণা করেছে। বেশ কয়েকজনের হাতে নিয়োগপত্রও তুলে দিয়েছে রাজ্য। বুধবার নিউটাউনে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যে দেউচা প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। তিনি বলেছেন, 'দেউচা-পাঁচামিতে দেশের বৃহত্তম কয়লাখনি হবে। সেখানে কয়েক হাজার মানুষের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থান হবে।' তাঁর বক্তব্যের সময় দেউচাতে প্রকল্প বিরোধিতায় পৌঁছেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে মহম্মদবাজার থানার বারমেশিয়ায় ধরনা অবস্থানে বসে রয়েছে আন্দোলনকারিরা। আজ, বৃহস্পতিবার ৫৯ দিনে পড়েছে মহাসভার ধরনা। ইতিমধ্যে মহাসভার ৮জন প্রতিনিধি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। গণেশ কিস্কুর দাবি, 'মুখ্যমন্ত্রী আমাদের প্রতিনিধিদের বলেছেন গ্রামবাসীরা না চাইলে কয়লাখনি হবে না। জোর করে জমি নেবে না সরকার। মুখের কথায় নয়, কাগজে-কলমে আশ্বাস পেলে ধরনা তুলব কিনা তখন আমরা আলোচনা করব।'