ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে জয়ী হলেন তৃণমূল প্রার্থী নির্মল রায়। ৪ হাজারের বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী রাজ্যের শাসক দল। গণনায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর বিজেপির থেকে ধূপগুড়ি ছিনিয়ে নিল তৃণমূল। ভোটের দিন কয়েক আগে শিবির বদল করেছিলেন ধূপগুড়ির প্রাক্তন বিধায়ক মিতালী রায়। জমি কামড়ে পড়েছিলেন বঙ্গ বিজেপি সুকান্ত মজুমদার। প্রচার করেছিলেন শুভেন্দুও। কিন্তু এসব কাজে এল না বিজেপির। উল্টে প্রচারে ধূপগুড়িকে পৃথক মহকুমা গড়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। এই প্রতিশ্রুতিই শেষ পর্যন্ত ধুপগুড়ি উপনির্বাচনের ফলাফলে ফ্যাকটর হল বলে মনে করা হচ্ছে।
ধূপগুড়ির তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়ের প্রাপ্ত ভোট- ৯৬,৯৬১। বিজেপির তাপসী রায় পেয়েছেন ৯২,৬৪৮। বাং-কংগ্রেসের জোট প্রার্থী পেয়েছেন১৩,৬৬৬ ভোট। তৃণমূল প্রার্থী ভোট জিতেছেন ৪,৩১৩টি ভোটে। শতাংশের বিচারে তৃণমূল পেয়েছে ৪৬ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট।
ধুপগুড়িতে জয়ের পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এক্সবার্তায় লিখেছেন, 'ঘৃণা ও ধর্মান্ধতার বদলে উন্নয়নের রাজনীতি বেছে নেওয়ার জন্য ধূপগুড়িবাসীকে ধন্যবাদ। জনগণের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনে অক্লান্ত পরিশ্রমের জন্য প্রত্যেক তৃণমূল কর্মীকে স্যালুট। আমরা ধূপগুড়ির সর্বাত্মক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কোনও কসুর না রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'
গত কয়েক বছরে উত্তরবঙ্গ বিজেপির শক্ত ঘাঁটি। ২০২৪ সালে দেশে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে নিজেদের দুর্গেই রাম হোঁচট খেল পদ্ম শিবির। নূন্যতম দাগ কাটতে ব্যর্থ বাম-কংগ্রেস জোটও। যার ফায়দা তুললো তৃণমূল।
ধূপগুড়িতে একসময় ছিল বামেদের জয়জয়কার। ১৯৭৭ সালের পর থেকে একটানা ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্রটি বামেদের দখলেই ছিল। ২০১৬ সালে সেই কেন্দ্রেই ঘাস-ফুল ফুটেছিল। এই কেন্দ্র থেকে সেবার তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন মিতালি রায়। তবে পালাবদল ঘটে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে। সেবার এই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল প্রার্থী মিতলী রায়কে হারিয়ে জয়ী হন বিজেপির বিষ্ণুপদ বর্মন। তাঁর অকাল প্রয়াণেই এই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হয়।
আরও পড়ুন- চব্বিশের আগে ‘অ্যাসিড টেস্ট’, ‘ইন্ডিয়া’ নাকি এনডিএ- দেশব্যাপী উপনির্বাচনে কে করল বাজিমাত?
জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ধূপগুড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে এবার উপ নির্বাচনের লড়াই ছিল জমজমাট। ত্রিমুখী লড়াইয়ে সরগরম ছিল গোটা ভোটপর্ব। তৃণমূলের বিপক্ষে একদিকে বাম-কংগ্রেস জোটপ্রার্থীর লড়াই, অন্যদিকে জোরদার টক্কর ছিল বিজেপিরও। তৃণমূলও ধূপগুড়ি দখলের চেষ্টায় কোনও ফাঁক রাখেনি। শেষমেশ ধূপগুড়িতে শেষ হাসি হাসল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলই।