কমলা- সবুজ রঙের পরিবর্তে নীল-সাদা রং, পুরসভার এই চিঠি নিয়েই চরম বিতর্ক খড়্গপুরে। স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, 'এভাবে পুরসভা চিঠি দিয়ে রং পরিবর্তনের কথা বলতে পারে কি? সংবিধানে আছে বলে আমার জানা নেই। আমাকে সিসি রেখে উপ-পুরপ্রধান যে চিঠি দিয়েছেন সেখানে কোনও কারণও উল্লেখ করেননি।' এদিকে সমাজ ও আইন গবেষক এবং আরটিআই কর্মী বিশ্বনাথ গোস্বামীর দাবি, 'এভাবে বিধায়ক তহবিল অর্থাৎ সরকারি টাকা নষ্ট করার কোনও অর্থ হয় না। অর্ডার দিয়ে রং পরিবর্তনের কথা বলতে পারে না কতৃপক্ষ।' খড়্গপুর পুরসভা পুরো বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছে। কোনও জবাব দিতে পারেনি।
হিরন চট্টোপাধ্য়ায়ের বিধায়ক তহবিলের টাকায় খড়্গপুর পুরসভার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে পানীয় জলের জন্য দুটি বোরিং হয়েছে। একটা রথতলা আরেকটা দীনেশ নগরে। বিধায়ক তহবিল থেকে ১৩ লক্ষ টাকা করে খরচ হয়েছে। অভিনেতা হিরণ চট্টোপাধ্যায় ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'পাম্প হাউস অরেঞ্জ আর সবুজ রং বদলে নীল ও সাদা করতে ভাইস চেয়ারম্যান চিঠি পাঠিয়েছিলেন ঠিকাদার সংস্থাকে। আমাকেও সিসিতে রেখেছিলেন। খড়্গপুরের সব থেক বড় ওয়ার্ড ৩৩ নম্বর। সেখানকার গরিব মানুষরা জল খেতে পারেন না। তাই দু দুখানা বোরিং করা হয়েছিল। এটা তৈরির দায়িত্বে ছিল খড়্গপুর পুরসভা। যে কাজ পেয়েছেন তিনি রং করেছেন। কার কথায় করেছেন আমি জানি না। পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান চিঠি পাঠিয়েছিলেন কিন্তু তার পিছনে কোনও যুক্তি দেননি।'
যদিও এই রং পরিবর্তন করার চিঠির সপক্ষেই কথা বলেছেন পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার। প্রদীপ সরকার বলেন, 'হিরণ যে ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হয়েছেন সেখানকার পাম্প হাউস গেরুয়া রং হয়েছে। আমরা তো পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। রাজ্য সরকারের অলিখিতি অনুমোদিত নীল সাদা করছি খড়্গপুরে। এই বোরিংয়ের নোডাল এজেন্সি ও টেন্ডার করেছে পুরসভা। গেরুয়া রং করা উচিত হয়নি।' প্রদীপবাবুর অভিযোগ, 'পুরসভা বা যেই দায়িত্বে থাকুক ভাল জল পাবে বলে বেশি গর্ত করে দিয়েছে। নীচে আয়রন ছিল। আয়রন জল উঠছে। টাকাটাই জলে গিয়েছে।'
আরটিআই কর্মী বিশ্বনাথ গোস্বামীর বক্তব্য়, 'বিধায়ক তহবিল সরকারি টাকা উন্নয়নের জন্য। এদিকে অর্ডার দিয়ে রং পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে। রং চটে গেলে আলাদা ব্যাপার। নতুন রং হয়েছে। এরকম কোনও অর্ডার আছে কি না সেটাই আমার প্রশ্ন? তাহলে তো প্রথমেই বলতে পারত। জনগণের করের টাকা এভাবে নষ্ট করার কোনও অর্থ হয় না।'
চিঠি দিয়ে নীল সাদা করতে বলা স্বীকার করে নিয়েছে ভাইস চেয়ারম্য়ান তৈমুর আলি খান। তবে তা বাধ্যতামূলক কিনা সেই প্রশ্নের কোনও জবাব তিনি দেননি। এড়িয়ে গিয়ে পুর চেয়ারপার্সনকে দেখিয়ে দিয়েছেন। চেয়ারপার্সন কল্যাণী ঘোষ ফোনে ধরে মিটিংয়ে আছি বলে জানিয়ে দেন। হোয়াটসঅ্য়াপে সমস্ত বিষয়টি জানিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তা দেখলেও কোনও জবাব দেননি তিনি। পরে অবশ্য় ফোনও আর ধরেননি চেয়ারপার্সন