Advertisment

Special: তাক লাগানো আবিস্কারের বন্যা, বিশ্বের বিস্ময় বাঙালি তরুণী দিগন্তিকা

এখনও পর্যন্ত দিগন্তিকার তিনটে উদ্ভাবন পেটেন্ট পেয়েছে। আরও ১০ টি পেটেন্ট-এর স্বীকৃতির প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাঁর আবিস্কারের অন্যতম বৈশিষ্ট হল খুব কম খরচে সেগুলি তৈরি করা সম্ভব।

author-image
Joyprakash Das
New Update
digantika bose discovery of science east burdwan memari , দিগন্তিকা বসু মেমারি বর্ধমান বিজ্ঞানের আবিস্কার

জাতীয় পতাকা হাতে প্রচুর সম্মানের মাঝে দিগন্তিকা।

মাত্র ৯ বছর বয়সেই উদ্ভাবনী শক্তিতে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। পরবর্তীতে একের পর এক আবিস্কার এই বঙ্গ তরুণীকে পাদপ্রদীপের আলোয় নিয়ে এসেছে। বিজ্ঞান তাঁর কাছে প্রথাগত সিলেবাসে আবদ্ধ থাকেনি। মানুষের কল্য়াণের কথা ভেবেছেন নতুন নতুন চিন্তা-ভাবনার মধ্য়ে। তাঁর কর্মযজ্ঞ জেলা, রাজ্য় বা জাতীয় স্তরে সরকারি বা বেসরকারি একাধিক প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি। আন্তর্জাতিক স্তরেও সমাদৃত পূর্ব বর্ধমানের মেমারির দিগন্তিকা বসু।

Advertisment

এক নজরে, আর পাঁচ জন পড়ুয়ার সঙ্গে তেমন কোনও তফাৎ নেই বর্ধমানের মেমারির তরুণীর। মাত্র ৯ বছরে বয়সে জল সংরক্ষণের বিশেষ মডেল তৈরি করে বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের যাত্রা শুরু দিগন্তিকার। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে দিগন্তিকা বলেন, 'ছোট থেকেই সমাজের বিভিন্ন সমস্যা আমার মাথায় ঘুরত। সুন্দরবনের মধু সংগ্রাহকদের বাঘের আক্রমণের কথা আমি জানতে পেরে আমার সমব্যাথী ও উদ্ভাবনী মন জেগে ওঠে। তাঁদের বাঁচানোর উপায় খুঁজতে খুঁজতে এক বিশেষ চশমা তৈরি করি।' এই বিশেষ চশমা ২০১৫-তে প্রথিতযশা বিজ্ঞানীদের নজর কাড়ে।

এখনও পর্যন্ত দিগন্তিকার তিনটে উদ্ভাবন পেটেন্ট পেয়েছে। আরও ১০ টি পেটেন্ট-এর স্বীকৃতির প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাঁর আবিস্কারের অন্যতম বৈশিষ্ট হল খুব কম খরচে সেগুলি তৈরি করা সম্ভব। দিগন্তিকার উদ্ভাবনের তালিকা দেখলে যে কেউ চমকে যেতে পারেন।

publive-image
মা, বাবার সঙ্গে দিগন্তিকা

Rear Spectacle Viewfinder, এটি সুন্দরবনে জীবীকার প্রয়োজনে যাঁরা জঙ্গলে যান তাঁদের ব্যবহারের জন্য বিশেষ চশমা যা ব্যবহারে মাথা বা ঘাড় না ঘুরিয়ে পিছন দিকও দেখতে পাবে। যা তাঁদের জীবন রক্ষার সহায়ক। Dust collecting attachment for drill machine, যে কোনও হ্যন্ড ড্রিল মেশিনের সামনে সহজে যুক্ত করে ড্রিল করলে কোনও ধুলো উড়বে না। একটি চেম্বারে জমা হবে, আর এর জন্য কোনও অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ হবে না, ড্রিল মেশিন-এর কম্পন থেকেই শক্তি গ্ৰহণ করে এই কাজ করতে সক্ষম। SMART CERVICAL COLLAR, বারনৌলির সূত্র কাজে লাগিয়ে বিশেষ কারিগরি পদ্ধতিতে তৈরি কলার সার্ভিক্যাল স্পন্ডিলাইটিস রোগী পড়লে আর প্রচণ্ড ঘাম বা অস্বস্তি হবে না। AN ADVANCED SYSTEM OF LIMB PLASTER OF HUMAN BODY এটি মানুষের শরীরের হাড় ভেঙে গেলে প্লাস্টার করা হয়। এর ফলে শরীরের প্লাস্টার করা অঙ্গে চুলকানি বা অস্বস্তি হয়। এটি একটি বিশেষ পদ্ধতি যা এই সমস্যা থেকে রেহাই দেয়।

এছাড়াও তাঁর ঝুলিতে রয়েছে TECHNOLOGY WITH EMOTION BASED ANTI-COLLISION DEVICE FOR VEHICLE, এই ডিভাইসটির কার্যকারিতা পরীক্ষায় সফল হয়েছে। VIRUS DESTROYED MASK, Virus destroyer water gun, Homemade Transparent face guard, DISTANCE ARRESTER FOR POLICE, Ear pressure reduction tool due to the use of masks, Safety tool for kitchen, low cost wall mounted low cost foot operated hand sanitizer dispenser, Snake bite protection shoes for agriculture field।

যাঁর আবিস্কারের তালিকাই এতটা দীর্ঘ, তাঁর পুরস্কারের তালিকাও যে কম হবে না তা হলফ করে বলা যায়। বাংলাদেশ চিলড্রেনস সায়েন্স কংগ্রেস ২০২০ বিজেতা, MALAYSIA I3C 2021 Completion, মালয়েশিয়া সরকারের এই পুরস্কারও দিগন্তিকার হাতে। Achievements-Ten Inspirational designs from around the World. One of the top ten by Google Arts andCulture Museum.(Virtual Museum)। তিন-তিনটে এপিজে আব্দুল কালাম ইগনাইট পুরস্কার রয়েছে দিগন্তিকার ভান্ডারে। জাতীয় স্তরে নানা বেসরকারি সংস্থাও তাঁকে সম্মানিত করেছে। বাংলা, ওড়িশা-সহ নানা রাজ্য সরকার ও বেসরকারি সংস্থাও তাঁকে পুরস্কৃত করেছে।

দিগন্তিকা ইতিমধ্যে রাষ্ট্রপতি ভবন CSIR নিউ দিল্লি, আমেদাবাদ IIMA আমেদাবাদ সাইন্স সিটি, IIT Bhubaneswar, IIT Delhi, ওড়িষার কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি, স্যার সি ভি রামান এর বাড়ি বেঙ্গালুরু, গুজরাট নানা জায়গায় বিভিন্ন বিজ্ঞানভিত্তিক আলোচনায় দিগন্তিকা অংশ নিয়েছেন।

মেমারির সুলতানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশুনার পর মেমারি রসিকলাল স্মৃতি বালিকা বিদ্যালয়ে থেকে মাধ্যমিক পাশ করে দিগন্তিকা। তারপর মেমারি ভিএম ইনস্টিটিউশন ইউনিট-২ থেকে দ্বাদশশ্রেণি উত্তীর্ণ। দিগন্তিকা এখন ব্যাঙ্গালুরুর কে আর ইনস্টিটিউট বিএসসি নার্সিংয়ে পাঠরত। BSC Nursing কেন? দিগন্তিকা বলেন, 'প্রসঙ্গত বলি এই বিষয়ে আমার চিন্তা ভাবনা একটু অন্যরকম। বলতে পারেন স্বতন্ত্র। সাধারণত General Nursing (JNM), Auxiliary Nurse Midwifery(ANM) পড়ার পরেই সরকারি বা বেসরকারি চাকুরি পেয়ে যাওয়ার ফলে Bachelor of Science in Nursing খুব কম জন পড়ে। MSC Nursing করার প্রবনতা আরও কম, নেই বললেই চলে। আর PHD বা Postdoctoral fellowship এর স্তরে একটা শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে মেডিক্যাল সায়েন্স-এর উন্নতি তথা IIT স্তরে নিত্যনতুন ইনোভেশন হলেও Nursing সংক্রান্ত উন্নয়ন ও ইনোভেশনে প্রতিনিধিত্বের শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। এই শূন্যতা পূরণ করা ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রতিনিধিত্ব করা ও নিত্যনতুন ইনোভেশন এর ইচ্ছা থেকেই এই বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।'

science West Bengal East Burdwan burdwan Memari
Advertisment