বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর ছোঁড়া নিয়ে তৃণমূলকে দোষারোপ করেও ঢোক গিলতে হয়েছে বিজেপিকে। খোদ রেলের বক্তব্যেই মুখ পুড়েছে গেরুয়া দলের। এবার সেই ইস্যুতেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। 'ঘটনা যে রাজ্যেই হোক, সরকারের দায়িত্ব ট্রেনকে রক্ষা করা', বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর ছোঁড়া প্রসঙ্গে সোজাসাপ্টা মন্তব্য মেদিনীপুরের বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষের।
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে পাথর ছোঁড়া নিয়ে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। শুরু থেকেই এই ঘটনায় তৃণমূলকে দোষারোপ করে রাজনীতির ময়দান কাঁপাচ্ছিল বিজেপি। তবে পরিস্থিতির ভোল পুরোপুরি বদলে যায় বৃহস্পতিবার। খোদ রেলের তরফেই জানানো হয় বাংলা নয়, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে দ্বিতীয়বার পাথর ছোঁড়ার ঘটনাটি ঘটেছে বিহারে। ঘটনায় ইতিমধ্যেই বিহারের কিষাণগঞ্জ জেলার পুলিশ তিন নাবালককে পাকড়াও করেছে। রেলের এই বক্তব্য সামনে আসার পর থেকেই বিজেপিকে পাল্টা দুষে সুর চড়াতে শুরু করেছে তৃণমূল। ট্রেনে হামলা নিয়ে তৃণমূলকেই দায়ী করায় বিজেপি নেতাদের নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও সুর চড়িয়েছেন তৃণমূল নেতারা।
আরও পড়ুন- কনকনে শীত হাড় কাঁপাচ্ছে, ১০-এর ঘরে কলকাতার পারদ, আরও নামবে তাপমাত্রা?
তবে এবার এই ইস্যুতে ড্যামেজ কন্ট্রোলে দিলীপ ঘোষ। শুক্রবার নিউটাউনে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিজেপি নেতা বলেন, 'নয়া ভারতের প্রজেক্ট। প্রধানমন্ত্রীর ড্রিম প্রজেক্ট। ফলে সবার একটা সেন্টিমেন্ট থাকে। ফলে এরকম ঘটনায় আমরা সবাই চিন্তিত হয়ে পড়ি, জল্পনা করতে থাকি। জানি না রেল কাকে ধরেছে? কোথায় ধরেছে? কোন জায়গায় হয়েছে? বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন মতামত আসছে। ঘটনা যে রাজ্যেই হোক, সেই সরকারের দায়িত্ব এই ট্রেনটাকে রক্ষা করা।'
বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে হামলা নিয়ে রেলের বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বৃহস্পতিবার তিনি বলেছিলেন, ‘বন্দে ভারতে হামলার ঘটনা বিহারে ঘটেছে। বিহারের মানুষের ক্ষোভ থাকতেই পারে। গণতন্ত্রে ক্ষোভ থাকলে যদি ঘটনা একটা ঘটিয়েও থাকে সেটা নিয়ে বিহারকে তো অপমান করা যায় না। আমি মনে করি তাদেরও পাওয়ার অধিকার আছে। আজকে বিজেপি নেই বলে তারাও বা পাবে না কেন?’
আরও পড়ুন- মজার ছলেই বন্দে ভারতে ঢিল! ধৃতদের দাবিতে তাজ্জব পুলিশ
মুখ্যমন্ত্রীর এই মন্তব্যের পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন দিলীপ ঘোষও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে দিলীপ ঘোষ এদিন আরও বলেন, ‘ উনি তো প্রথমে বলেছিলেন পুরনো ট্রেন রং করে চালিয়ে দিয়েছে। ওনার কথায় কেউ আস্থা রাখে? বিশ্বাস করে? উনি তো ওনার মতো কথা বলেন। সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত খবরের ওপর ভিত্তি করে সবাই প্রতিক্রিয়া দিয়েছে।’
অন্যদিকে, সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছেন ৫৯ জন প্রাথমিক শিক্ষক। তাঁরা প্রত্যেকেই দুর্নীতি করে চাকরি পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ। সেই ইস্যুতেও এদিন রাজ্যকে তুলোধনা করেছেন দিলীপ। বিজেপি নেতার কথায়, '
চাকরি যদি কেউ কেনে, এরকমই তো হবে। অপচয় হয়েছে। অপব্যবহার হয়েছে। মানুষের বিশ্বাস নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এর তো প্রতিকার হওয়ার দরকার ছিল। ১০ বছর ধরে শুধু লুঠ হয়েছে। ভেবেছিল কেউ কিছু করতে পারবে না। দেশের বিচার ব্যবস্থা এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা করে দেখাচ্ছে। বিচারপতি ডান্ডা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। এতে মানুষ আবার ভরসা পাচ্ছে।'