হাতে গোনা আর মাত্র একটা দিন। তারপরেই আলোর উৎসবে গা ভাসাতে তৈরি সকলেই। বাজি ছাড়া দিওয়ালি ‘সেলিব্রেশন’ ভাবাই যায় না। আদালতের নির্দেশে ‘পরিবেশবান্ধব’ বাজি ব্যবহারে মিলেছে ছাড়। বাজি কিনতে মানুষজন হাজির টালা বাজি বাজারে। তবে বাজির দামে হাত পুড়ছে ক্রেতাদের। এমনটাই জানিয়েছেন বাজি কিনতে আসা ক্রেতারা।
গত ২ বছর করোনার দাপটে বাজি ফাটানো একপ্রকার প্রায় বন্ধই ছিল। আলোর উৎসবের সেই রোশনাই কোথাও যেন ফিকে হয়ে গিয়েছিল। আর চলতি বছর করোনার দাপট অনেকটাই কমেছে। দিওয়ালির আনন্দে তাই কোনও খামতি রাখতে চাইছেন না মানুষজন। তবে এবছরও ময়দানে বসছে না বাজি বাজার। সময়ের অভাব সঙ্গে আর্থিক সমস্যার কারণে ময়দানকে বাদ দিয়েই বসছে এবার কলকাতায় বাজি বাজার।
টালা, টালিগঞ্জ এবং যাদবপুর, এই তিন জায়গায় বাজি বাজার থেকে আতসবাজি কিনতে পারবেন ক্রেতারা। সবুজ বাজির দাম কিছুটা চড়া হলেও তা যে অন্য বাজির তুলনায় অনেক বেশি নিরাপদ তা এককথায় মেনে নিয়েছেন,পরিবেশবিদরাও। দিওয়ালির আনন্দে গা ভাসাতে বাজিপ্রেমি মানুষজনের ভিড় দেখতে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা ঢুঁ মারল টালা বাজি বাজারে।
প্রথমেই ঝাঁ চকচকে ব্যবস্থাপনা আপনার নজর কাড়বেই। টালা বাজি বাজারে এই বছর মোট ৪৪ টি স্টল বসেছে। অনবরত সেই সব স্টলে ঢুঁ মারতে দেখা গেল প্রশাসনিক আধিকারিকদের। বারে বারে বাজি বিক্রেতা ও ক্রেতা সাধারণকে সবুজ আতসবাজি ব্যবহারের অনুরোধও করা হয়।
দমকলের ছাড়পত্রের কারণে মাত্র তিন দিন আগেই বসেছে টালা বাজি বাজার। অনেকেই মাত্র একদিন আগেই স্টল লাগিয়েছেন। এমনই এক বিক্রেতা পল্টু দাসের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, মাত্র একদিন আগেই স্টল বসালেও, বাজি বিক্রি হয়েছে ভালোই।দুপুর ১২ টা থেকে খুলছে এই বাজি বাজার। খোলা থাকছে রাত ১০ টা পর্যন্ত। বাজি কিনতে উৎসাহী মানুষজনের ভিড়ও নজরে পড়েছে। পল্টু বাবুর কথায়, “গত ২ বছর কোভিডের কারণে বাজির ব্যবসায়ে ব্যপক ক্ষতি হয়েছে বাজি বিক্রেতাদের। এই বছর সবুজ আতসবাজি ব্যবহারে ছাড়পত্র মিলেছে। মানুষজন আসছেন, সচেতন ক্রেতা সাধারণ বারকোড দেখে বাজি কিনছেন। তবে বাজির দাম অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি”।
আরও পড়ুন : < আলোর উৎসব ভেস্তে দিতে চোখ রাঙাচ্ছে সিত্রাং, জেলায়-জেলায় সাইক্লোন-অ্যালার্ট >
একই সুর ধরা পড়ল ডানলপ থেকে বাজি কিনতে আসা এক ক্রেতার গলাতেও। তিনি জানালেন, “গ্রিন বাজির দাম বেশ অনেকটাই বেশি। কিনতে যেমন হাত পুড়ছে তেমনই সেই বাজি যদি ঠিকমত না ফাটে তাহলে পুরো টাকাটাই জলে চলে যাবে”। বাজি বাজারে কচিকাঁচাদের ভিড়ও ছিল চোখে পড়ার মত। বাবার হাত ধরে বাজি কিনতে এসেছে শ্যামবাজারের ছোট্ট সাগ্নিক। হাতে সদ্য কেনা বাজির প্যাকেট ধরেই একগাল হেসে সাগ্নিক জানায়, “এই বছরে অনেক বাজি ফাটাব”। ইতিমধ্যেই সে কিনে ফেলেছে ডজন খানেক বাজি।
দীর্ঘ ২ বছর পর প্রাণখোলা ভাবে বাজি ফাটাতে পারবে মানুষজন। ‘কোভিড আতঙ্ককে দূরে সরিয়ে রেখে মানুষজন আসছেন বাজি কিনছেন। সত্যি বলতে বাজি ছোটদের কাছে একটা আনন্দের বিষয়। তারা যে সেই আনন্দ এই বছর আবার ফিরে পেতে চলেছে এটাই বড় কথা’, বলছেন দমদম থেকে বাজি কিনতে আসা সুলগ্না দাস।