গত ২ বছর ধরেই অতিমারীর দাপট মানুষের জীবনকে একেবারেই অতিষ্ঠ করে তুলেছে। সেই অতিমারীর দাপট কমতেই এবারের পুজো ঘিরে মানুষের মধ্যে চূড়ান্ত উদ্দীপনা। উৎসবের আনন্দের জোয়ারে গা ভাসাতে প্রস্তুত সকলেই। পুজোয় আনন্দের মাঝে হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকার অভিযোগ রোগীদের। এবারও কী একই চিত্রই ফুটে উঠবে? প্রশ্নটা আমার-আপনার। পুজোর আগেই লাফিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। একাধিক জেলা থেকে প্রাণহানির মত ঘটনাও ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। এবার পুজোয় তাই চিকিৎসক ঘাটতির প্রসঙ্গটি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।
হাতে গোনা আর মাত্র কয়েকটা দিন। আর তারপরেই বাঙালির ‘প্রাণের পুজো’ দুর্গাপুজো। শহর থেকে জেলার পুজো মণ্ডপে থিমের রমরমা। পুজো যতই এগোচ্ছে শিল্পীদের মধ্যে বেড়েছে ব্যস্ততা। নাওয়া-খাওয়া ভুলে সেরারা সেরা জাহির করার পালা। ইউনেস্কোর হেরিটেজ সম্মান পেয়েছে বাংলার দুর্গাপুজো৷ তাই চলতি বছরের দুর্গাপুজোকে ঘিরে আগ্রহ গোটা বিশ্ব জুড়ে। এত আনন্দের মাঝে হঠাৎ করেই যদি আমার-আপনার নিকট আত্মীয়ের কোন ধরণের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয়, সরকারি হাসপাতালে ইর্মাজেন্সি ভিত্তিক পরিষেবা মিলবে তো? পুজোতে শহরের বেশিরভাগ চিকিৎসকের প্রাইভেট চেম্বার বন্ধ থাকে তাই রোগীদের অধিকাংশ সরকারি হাসপাতালেই ভিড় করেন।
উৎসবের আনন্দের মাঝে হামেশাই চোখে পড়ে সাইরেন বাজিয়ে রুদ্ধশ্বাস গতিতে ছুটে চলেছে অ্যাম্বুলেন্স। কখনও আবার থিকথিকে ভিড়ের মাঝে অ্যাম্বুলেন্সের ভিতর থেকে উকি দিচ্ছে অসহায় দুটি চোখ। ফি বছর পুজোয় রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক ঘাটতির একটা অভিযোগ থাকে রোগীদের মধ্যে। পুজোর আনন্দের মাঝে মাঝরাতে হঠাৎ করে বুকে ব্যথা অথবা অন্য যে কোন অসুখে আক্রান্ত রোগীদের বিস্তর ঝক্কি সামলাতে হয়।
আরও পড়ুন : < আতঙ্কের ডেঙ্গু! এক সপ্তাহে আক্রান্ত ৪ হাজার পার, কপালে ভাঁজ স্বাস্থ্য দফতরের >
সরকারি হাসপাতালে সেভাবে চিকিৎসক না থাকায় অনেকেই ছুটে যান বেসরকারি হাসপাতালে। ফি বছর পুজোয় চিকিৎসক ঘাটতি নিয়ে অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক ডাঃ মানস গুমটা বলেন, “ হ্যাঁ এটা ঠিক উৎসবের দিনগুলিতে অন্যান্য সময়ের মত পর্যাপ্ত চিকিৎসক হাসপাতালগুলিতে থাকেন না। তবে তাতে করে রোগী পরিষেবা ব্যহত হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা বেশি নয়। কারণ গোটা ইউনিট তখন ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্টে বেশি করে মনোযোগ দেন। সেভাবেই তাদের ডিউটি ফেলা হয়”।
তিনি বলেন, “অনেক রোগীর ক্ষেত্রে যে সার্জারি কিছুদিন পর করলেও চলবে তাঁকে পুজোর কয়েকটা দিন ওষুধ দিয়ে সামাল দেওয়া হয়। পুজো কেটে গেলে যে সার্জারিগুলি অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ রোগীর জন্য সেগুলি করার জন্য তাদের বলা হয়। ইর্মাজেন্সি ম্যানেজমেন্টের ওপরই আমরা সেই সময় জোর দিই। তবে হ্যাঁ এটাও ঠিক অনেক জায়গাতেও ব্যতিক্রমী কিছু ঘটনা নজরে পড়ে। তবে সেটা হাতে গোনা। শহরের একাধিক বড় সরকারি হাসপাতালে পুজোর সময় পরিষেবা দিতে আমরা চিকিৎসক সমাজ সম্পূর্ণ ভাবে প্রস্তুত”।