পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি মৃণাল সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক গুরুতর অভিযোগ এনে টুইট করলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অঞ্চল সভাপতি করে দেওয়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকা দাবি থেকে ড্যান্স বারে হাজির থাকার অভিযোগ করেছেন সুকান্ত। এই অভিযোগে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। তবে মৃণাল সরকার দুটি ভিডিওর সত্যতা স্বীকার করলেও অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি প্রার্থী হওয়ায় ও দক্ষিণ দিনাজপুরে বিজেপির সাংগঠনিক হাল খারাপ থাকায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে বিজেপি বাজার গরম করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূল জেলা সভাপতি।
রবিবার একসঙ্গে তিনটে ভিডিও টুইট করে অভিযোগ করেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। প্রথম ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, কোনও হোটেলে বিছানায় শুয়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। সেখানে দাঁড়ানো আরেক ব্যক্তি ক্রমাগত বলে যাচ্ছে অঞ্চল সভাপতি করলে তিনি ১০ লক্ষ টাকা দিতে পারেন। দ্বিতীয় ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একটি ঘরে খাওয়া-দাওয়া করছেন মৃণাল সরকার। পাশে মদ্যপানের ব্যবস্থা রয়েছে। আরেকটি ভিডিওতে রয়েছে ড্যান্স বারের দৃশ্য। সেখানেও মৃণালবাবু রয়েছেন বলে দাবি বঙ্গ বিজেপি সভাপতির। যাকে, 'গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জা', বলে মন্তব্য করেছেন সুকান্ত।
দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি মৃণাল সরকার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে বলেন, 'প্রথম দুটো ভিডিও অনেক পুরনো। তবে ড্যান্স বারের ভিডিওর সঙ্গে আমার দূর-দূরান্তের কোনও সম্পর্ক নেই। এসব বিজেপির আইটি সেলের কারসাজি। আমি জেলা পরিষদের প্রার্থী, পাশাপাশি সাংগঠনিক ভাবে আমরা এখন এই জেলায় শক্তিশালী। তাই বাজার গরম করার জন্য এই সব ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে।'
তাহলে যে টাকার কথা বলা হচ্ছে, কি বলবেন আপনি? জবাবে মৃণাল সরকার বলেন, 'এটাও আমি জেলা সভাপতি হওয়ার আগের ভিডিও। আমি তখন ব্লক সভাপতি ছিলাম। এই অঞ্চল সভাপতি হওয়ার কথা বলা হচ্ছে তা কিন্তু আমার মুখ থেকে বের হয়নি যে টাকা লাগবে। কোনও একজন ব্যক্তি এসে বলছে যে ১০ লক্ষ টাকা দেব, অঞ্চল সভাপতি করতে হবে। আমি তাঁর প্রস্তাবে সায় দিইনি। এবার কেউ যদি টাকার কথা বলে তাঁর মুখ তো আর সেলোটেপ দিয়ে আটকানো যায় না। আমার সঙ্গে কোনও আর্থিক লেনদেনও হয়নি। অথবা তাঁকে বলা হয়নি যে এত টাকা লাগবে। ওনার প্রোপোজালকে রিজেক্ট করে দিয়েছি।'
মৃণাল সরকারের দাবি, 'ওই ব্যক্তি ব্যারাকপুরে থাকেন। মন্টা নামে ওই ব্যক্তি নিজেকে তৃণমূল নেতা বলে পরিচয় দিতেন। কলকাতার হোটেলে তখন আমি ঘুমোচ্ছিলাম। তখন দেখা করতে এসেছিলেন। ওই ব্যক্তি বলেছেন, তিনি ২০ বছর আগে দক্ষিণ দিনাজপুরে থাকতেন। মোবাইল এখন সবার হাতে হাতে। এটা পরিকল্পনা করে করেছে।'
আরও পড়ুন- বিরোধীদের জবাবে মাস্টারপ্ল্যান রেডি! উত্তর-দক্ষিণ ভাগাভাগি করে প্রচারে মমতা-অভিষেক
সুকান্ত মজুমদারের পোস্ট করা বাকি দুটো ভিডিও নিয়েও ব্যাখ্যা দিয়েছেন দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি। মৃণাল সরকারের দাবি, 'ড্যান্স বারের ভিডিওর সঙ্গে আমার দূর-দূরান্তের কোনও সম্পর্ক নেই। কিছু ব্যক্তিগত বিষয় পোস্ট করা হয়েছে। সেটাও পুরনো ভিডিও। আমি এক জায়গায় খাওয়া-দাওয়া করছি। সেখানে পাশে কিছু লোক মদ খাচ্ছে। এটা ঘটনা। কেউ যদি বাড়ির ভিতরের ছবি তুলে রাজনীতির স্বার্থে ব্যবহার করে, এতে কী করার আছে। মানুষ দেখবে, মানুষ বিচার করবে। আমি মদ খাচ্ছি ভিডিওতে কোথাও নেই।' রাজনৈতিক লড়াইতে না-পেরে এভাবে অপপ্রচারে বিজেপি নেমেছে বলেই দাবি করেছেন মৃণাল সরকার।