উমা কৈলাসে ফিরে গিয়েছেন কয়েকদিন আগেই। তবুও পুজোর রেশ রয়ে গেছে শহর কলকাতায়। দশমীর মিষ্টিমুখ, কোলাকুলি করতে করতেই আবারও ঠাকুর দেখবে তিলোত্তমা। আজ পুজো কার্নিভাল। যা নিয়ে সাজ সাজ রেড রোড। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ রেড রোডে শুরু হবে এবারের পুজো কার্নিভাল। এবার ৭২টি পুজোর দুর্গাপ্রতিমাকে নিয়ে শোভাযাত্রা বেরোবে রাজপথে। মেগা শো ঘিরে উন্মাদনায় ভাসছে শহর কলকাতা।
এদিকে, পুজো কার্নিভালের জেরে সকাল থেকেই শহরের বিভিন্ন রাস্তায় যান যন্ত্রণার শিকার হচ্ছেন শহরবাসীরা। বিভিন্ন রাস্তা কার্যত বন্ধ।বিসর্জন শোভাযাত্রার জেরে রেড রোড সংলগ্ন বেশ কিছু রাস্তা বন্ধ থাকবে বলে কলকাতা ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর। কার্নিভালে নিরাপত্তায় মোতায়েন থাকছে প্রায় ২ হাজার ৫০০ পুলিশ। কার্নিভাল প্রাঙ্গণে বসানো থাকছে এলইডি স্ক্রিন।
পুজো কার্নিভাল শুরু হয়েছিল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে। গত বছরের মতো এবারের কার্নিভালেও দর্শনার্থী হিসেবে রেড রোডে ভিড় জমাবেন দেশ-বিদেশের বহু মানুষ। বিদেশিদের জন্য রাখা থাকছে আলাদা বসার ব্যবস্থা।বিকেল হলেই আলোকমালায় সেজে উঠবে রেড রোড চত্বর।
এ বছরের কার্নিভালে অংশ নিচ্ছে দক্ষিণ কলকাতার অন্যতম পুজো ত্রিধারা সম্মিলনী। ত্রিধারার প্রধান উদ্যোক্তা তথা কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার জানালেন, "এ বছর ৭২টি পুজো কার্নিভালে অংশ নিচ্ছে। আন্তর্জাতিক কার্নিভালের মতোই আয়োজন করা হচ্ছে। কার্নিভাল উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকছে।"
এ বছর কার্নিভালে অংশ নিচ্ছে বালিগঞ্জ ৭৫ পল্লির পুজোও। ওই পুজোর সেক্রেটারি সুবীর দাস বললেন, "আমরা কার্নিভালের প্রথম বছর থেকেই অংশ নিচ্ছি। প্রথম কার্নিভালে বিসর্জন শোভাযাত্রার সেরা পারফর্মার হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছিলাম।"
আরও পড়ুন: অন্য পুজো: গঙ্গামাটির টানে কেটেছে বারোটি শরৎ
উল্লেখ্য, গত বছর কার্নিভালে ৫৫টি পুজো অংশ নিয়েছিল। এবার সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭২। তাঁদের পুজো কার্নিভালে অংশ নেয় না, তবুও কার্নিভাল নিয়ে উত্তেজিত মুদিয়ালি সর্বজনীনের সেক্রেটারি অরুণ লাল। তিনি বললেন, "রেড রোডে পুজা কার্নিভাল দারুণ উদ্যোগ। যদিও আমরা এখনও কার্নিভালে অংশ নিইনি, কারণ আমরা বিজয়া দশমীর দিনই প্রতিমা নিরঞ্জন করি।"
অন্যদিকে, রেড রোডে মেগা শো ঘিরে নিরাপত্তা আঁটোসাঁটো করেছে কলকাতা পুলিশ। কার্নিভাল উপলক্ষে বেশ কিছু রাস্তায় যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলেও জানা গিয়েছে। কার্নিভাল প্রসঙ্গে এক সরকারি আধিকারিক বলেন, "পুজোর দিনগুলোতে পুলিশ কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবকরা অক্লান্তভাবে পরিশ্রম করেছেন। সারা রাত ধরে ওঁরা ভিড় সামাল দিয়েছেন। পুলিশ বাহিনী, দমকল, বিপর্যয় বাহিনী দিন-রাত এক করে কাজ করেছেন। ফলে ওঁরা পুজোর আনন্দ কোথাও হলেও মিস করেছেন। কার্নিভাল খানিকটা ওঁদের জন্যও।"
এদিকে সোমবার সন্ধে ৬টার কিছু পরে কার্নিভালের মণ্ডপে একজায়গায় সামান্য আগুন লাগে বলে জানানো হয়েছে। হ্যালোজেন লাইট অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়াতেই এই বিপত্তি। খুব সামান্য সময়ের মধ্যেই আগুন নিভিয়ে ফেলা হয়। এ ঘটনায় কেউ হতাহত হননি। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও অতি নগণ্য বলেই জানা গেছে।