Advertisment

স্বনির্ভর হতে সাধের স্কুটি নিয়ে পথে দুর্গাপুরের প্রথম মহিলা বাইক ট্যাক্সিচালক সুস্মিতা

বাড়ির বউয়ের কিনা এমন একটা পেশা! প্রথমে মানতে চাননি শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কথা বলেননি স্বামীও। কিন্তু নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে অনড় ছিলেন সুস্মিতাদেবী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

দূর্গাপুরের গৃহবধূ সুস্মিতা দত্তের একটাই ইচ্ছা,"স্বনির্ভর হতে হবে"। সেই ইচ্ছা পূরণের তাগিদেই সাত দিন যাবৎ তিনি ওলা বাইক চালাচ্ছেন। কিন্তু, বাড়ির বউয়ের কিনা এমন একটা পেশা! প্রথমে মানতে চাননি শ্বশুর বাড়ির লোকজন। কথা বলেননি স্বামীও। কিন্তু নিজের পায়ে দাঁড়ানোর লক্ষ্যে অনড় ছিলেন সুস্মিতাদেবী।

Advertisment

দূর্গাপুরের প্রথম মহিলা ওলা বাইক চালক হিসাবে এই মুহূর্তে শিরোনামে সুস্মিতা দত্ত। বয়স পঁয়তাল্লিশ। এক মেয়ে, স্বামী ও শাশুড়িকে নিয়ে তাঁর ভরা সংসার। তবে দু'চাকায় স্বপ্ন পূরণ করতে গিয়ে অনেক প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে হবে, জেনেও পিছুপা হন নি সুস্মিতা। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের চাকরির খবর শেয়ার করা মাত্রই নেট নাগরিকদের কাছ থেকে রীতিমতো প্রশংসা কুড়িয়েছেন মধ্য চল্লিশের সুস্মিতা। কিন্তু, এই কাজের জন্য কীভাবে নিজের মনকে প্রস্তুত করলেন? ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা-কে সুস্মিতা দেবী বলেন, "স্কুটি চালাতে আমি বরারই ভালবাসি। একদিন আমার এক বন্ধুর বাইকে দেখি সংস্থার স্টিকার লাগানো। তাঁকে জিজ্ঞাসা করি, এটা কী? তখন সে বিস্তারিতভাবে আমাকে জানায়। এরপর সংস্থার স্থানীয় অফিসে গিয়ে কথা বলি, তারা গাড়ির কাগজ পত্র চায়, সেসব যাচাইপর্ব শেষ হলে আমাকে লগ ইন করে দেয়। ব্যাস এই শুরু...গত সোমবার থেকে লেগে পড়েছি কাজে"।

আরও পড়ুন: ৩৭০ ধারা অবলুপ্তি রাষ্ট্রসংঘের সিদ্ধান্ত বিরোধী: পাকিস্তান

এখন সংসারের কাজ সামলে সকাল সকাল অর্থ উপার্জনের তাগিদে স্কুটি নিয়ে বেড়িয়ে পড়েন সুস্মিতা দেবী। তিনি বলেন, "সকাল আটটা ত্রিশ নাগাদ বাইক চালানো শুরু করি। দুপুর দেড়টার সময় ঘরে ঢুকে যাই। কারণ, তখন মেয়ের স্কুল থেকে ফেরার সময়। এরপর আবার বিকেলে বেড়িয়ে পড়ি। বেশ কিছুক্ষণ চালিয়ে ঘণ্টা খানেকের জন্য বাড়ি ফিরে আসি। মেয়েকে পড়তে দিয়ে এসে আবার রাত্রি ন'টা সাড়ে ন'টা পর্যন্ত বাইক চালাই"।

আরও পড়ুন: ৩৭০ ধারা রদ, দিল্লি মেট্রোয় জারি রেড অ্যালার্ট

সুস্মিতা আরও জানান, "প্রথমে জানতে পারিনি যে আমিই দূর্গাপুরের প্রথম মহিলা ওলা বাইক চালক। পরে সংস্থা থেকেই আমাকে জানানো হয়। এর আগে অবশ্য র‌্যাপিডোতেও খোঁজ খবর নিয়েছিলাম, তবে তেমন কোনও জবাব পাইনি। পরে সোশ্যাল মিডিয়ায় কলকাতায় ওলা বাইক চালক রূপার কথা জানতে পারি। সেই দেখেও কিছুটা প্রভাবিত হই। তখন মনে প্রশ্ন জাগে, সে যখন কলকাতার ভিড় রাস্তায় চালাতে পারছে, তাহলে আমি কেন দূর্গাপুরে চালাতে পারব না?" বাইক চালাতে যতই ভাল লাগুক তা বলে হঠাৎ এটাকেই পেশা করে নিলেন? প্রশ্ন শেষ না হতেই সুস্মিতা বলে ওঠেন,"অন্যান্য জীবিকার কথা মাথায় এলেও তাতে সেরকম কোনও থ্রিল পাইনি। পরে এই বাইক চালকের কথা শুনতেই আর সুযোগ হাত ছাড়া করতে চাইনি। আমি নিজেকে ব্যস্ত রাখতে চেয়েছি। আর তাছাড়া আমার কাছে কোনও কাজই ছোট নয়"।

অচেনা লোকজনের সঙ্গে অচেনা রাস্তায় শুধুমাত্র অ্যাপের ভরসায় চলে যেতে ভয় করেনা? সুস্মিতা বলেন, "স্কুটি চালাতে আমি দক্ষ। এখনও সেরকম কোনও পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। অচেনা জায়গায় গেলে, যাত্রীর থেকেই রাস্তা ও লোকেশন সম্পর্কে জেনে নিই। কেউ বিরক্ত হলে তাঁকে জানিয়ে দিই, আমি এই পরিষেবায় নতুন"।

Ola
Advertisment