বিপদের আশঙ্কা নিয়েই দিন কাটাচ্ছেন দুর্গাপুরের ৪১ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। বহু দিন ধরে ভেঙে যাওয়া ব্রিজ নিয়ে ডিভিসি এবং দুর্গাপুর পুরসভার দড়ি টানাটানিতে ক্রমশই জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে দুর্গাপুরের বীরভানপুর মহাশ্মশানে যাওয়ার একমাত্র ক্যানেল ব্রিজ। প্রসঙ্গত, গত এক বছরে এই ব্রিজে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন তিন জন। তারপরেও কেন সেতুটির এমন জরাজীর্ণ অবস্থা, প্রশ্ন তুলছেন দুর্গাপুরের সাধারণ মানুষ।
বীরভানপুর শ্মশানে যাওয়ার একমাত্র যোগাযোগের পথ এই সেতু। ছবি- অনির্বাণ কর্মকার
আরও পড়ুন- বীরভূমের ইলামবাজার সেতুতে ফাটল, প্রশাসনের নিয়ম না মেনে অবাধে যাতায়াত
দুর্গাপুরের ৪১ নং ওয়ার্ডের সঙ্গে বীরভানপুর মহাশ্মশানের একমাত্র যোগাযোগের রাস্তা দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের এই সেচ ক্যানেল সেতু দীর্ঘদিন ধরেই ভগ্ন দশায় পড়ে রয়েছে। সেতুর একাংশের রেলিং ভেঙে যাওয়ায় ২০১৮ সালের শেষ দিক থেকে ২০১৯ পর্যন্ত এই ব্রিজ থেকে পড়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।এঁদের মধ্যে দু'জন ছিলেন বাইক আরোহী। স্থানীয়দের কথায়, রেলিং-এর ভেঙে পড়া অংশ দিয়েই রাতের আঁধারে পড়ে যায় ওই দুই বাইক আরোহী। একদিন পরে এই দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এমনকী পথ চলতি এক এলাকাবাসীরও মৃত্যু হয়েছে এই সেতুর ভাঙা অংশ থেকে পড়ে গিয়ে।
জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ভাঙা সেতুর উপর দিয়ে চলে পারাপার। ছবি- অনির্বাণ কর্মকার
এই ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে আসেন এলাকার কাউন্সিলর এবং দুর্গাপুরের মেয়র দিলীপ অবস্থি। সেতু পরিদর্শন করে মেয়রের বক্তব্য, "এটা ডিভিসি-র কাজের মধ্যে পড়ছে। ডিভিসির মেরামতির কাজ করার কথা। কিন্তু সরকারি দফতর যদি কাজ না করে, আমরা আধা সরকারিরা কতটা কাজ করব?" তবে এলাকাবাসীর অভিযোগের জেরে ভাঙা যায়গায় বাঁশের রেলিং দিয়ে দেওয়া হয় দুর্গাপুর পুরসভার তরফে।
আরও পড়ুন- দুর্গাপুরে জল সংরক্ষণে মুখ্যমন্ত্রীর জল প্রকল্পের ছায়া
কিন্তু দুর্ঘটনা রুখতে পুরসভার স্থায়ী ব্যবস্থার আশ্বাস ফের বিশ বাঁও জলে। বেশ কিছুদিন ধরে নেই বাঁশের রেলিং, নেই কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থাও। বরং এই ক'দিনে আরও ভগ্নপ্রায় হয়েছে সেতুটি, এমনই অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। তবে মেয়রের তরফে জানানো হয়েছে, ৪১ ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছ থেকে সেতুটি ঠিক করার আনুমানিক খরচের হিসেব আমার কাছ এসে পৌঁছেছে। পুরসভার পক্ষ থেকে যত শীঘ্রই সম্ভব ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করা হচ্ছে"। দুর্গাপুর ৪১ নং ওয়ার্ড এবং পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলি থেকে বীরভানপুর শ্মশানের যাওয়ার এই একটি মাত্র সেতুর এমন বেহাল অবস্থায় ক্ষোভে ফুঁসছেন নাগরিকরা।
দুর্গাপুরের আরও খবর পড়ুন এখানে