চার মাস কেটে গেলেও বেতন দেন নি কারখানা কর্তৃপক্ষ। সংসার চালানোও যখন দায় হয়ে পড়েছে, সেই সময় বাধ্য হয়েই আন্দোলনের রাস্তায় নামলেন রাতুড়িয়া অঙ্গদপুর শিল্পতালুকে এক বেসরকারী কারখানার শ্রমিকরা। তবে শুধু শ্রমিকরাই নন, পথে নেমেছেন তাঁদের পরিবারও। এতটাই তীব্র ছিল ক্ষোভের আগুন, যে বৃহস্পতিবার কারখানার জেনারেল ম্যানেজারকে আটকে রেখে শ্রমিক পরিবারের সদস্যরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
বন্ধ কারখানার সামনে বিক্ষোভ আন্দোলনকারী শ্রমিকদের। ছবি: অনির্বাণ কর্মকার
ঠিক কী অভিযোগ?
শ্রমিকদের পরিবারের তরফে অভিযোগ, বহুবার কারখানা কর্তৃপক্ষ বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তাঁরা সেই প্রতিশ্রুতি রাখেন নি। আন্দোলনকারী শ্রমিক পরিবারের এক সদ্যসা পার্বতী দে অভিযোগ করেন, "বেতন না পেয়ে এমন অবস্থা হয়েছে যে এরপর ভাতের হাঁড়ি কীভাবে চাপবে আমরা জানি না। তাই বাধ্য হয়ে আমরা এই রাস্তায় নেমেছি।" তবে যদি এই আন্দোলনেও কর্তৃপক্ষের টনক না নড়ে, তাহলে প্রয়োজনে কারখানার ভেতরেও অবস্থান বিক্ষোভে বসবেন বলে হুঁশিয়ারিও দেন শ্রমিকরা।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ, প্রতিবাদ মিছিল দুর্গাপুর এনআইটির গবেষকদের
শ্রমিক পরিবারের বিক্ষোভের মুখে পড়েন কারখানার জেনারেল ম্যানেজার। ছবি: অনির্বাণ কর্মকার
অন্যদিকে, কারখানার জেনারেল ম্যানেজার সিবিএ ভার্মা শ্রমিক পরিবারেদের বিক্ষোভের মুখে পড়ে ফের একই প্রতিশ্রুতি দেন। এমনকি আগামী শনিবার দুই মাসের বেতন একসঙ্গে দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতিতে ভরসা না রেখে শ্রমিকরা নিজেদের আন্দোলনে অনড় থাকেন। কারখানা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, "কারখানা কার্যত বন্ধ। তাই বেতন দেওয়ার ক্ষেত্রের অর্থনৈতিক অসুবিধা হচ্ছে।" তবে কারখানার জেনারেল ম্যানেজারকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে শ্রমিকদের চাহিদার কথা। আন্দোলনকারী শ্রমিকদের বক্তব্য, "আমরা চাই কারখানা চলুক, কিন্তু কারখানা খোলা রেখে শ্রমিকদের রাতদিন কাজ করিয়ে বেতন দেবে না, তা হতে পারে না"।
আরও পড়ুন: দুর্গাপুরে তৃণমূলের ‘ফিডব্যাক’ নিতে ময়দানে নামলেন ফিরহাদ হাকিম
বৃহস্পতিবার কারখানার প্রায় তিনশো শ্রমিক এই আন্দোলনে অংশ নেন। গত দশ মাস ধরে রাতুড়িয়া অঙ্গদপুর শিল্পতালুকে এই বেসরকারী কারখানায় ডামাডোল চলছে বলে শ্রমিকদের অভিযোগ। বকেয়া চার মাসের বেতন একসঙ্গে না পেলে তাঁরা কর্তৃপক্ষকে ঘেরাও করে রাখবেন বলে জানান শ্রমিক পরিবাররা।