শিলং-এ সিবিআই-এর জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব বুধবার পঞ্চম দিনে পড়ল। ৯ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) থেকে শুরু হয়েছে চিট ফান্ড কাণ্ডে কলকাতার নগরপাল রাজীব কুমারকে জেরা। বুধবারও তলব করা হয়েছে পুলিশ কমিশনারকে। এরই মধ্যে শৈল শহরে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ তথা সাংবাদিক কুণাল ঘোষ। কুণাল মঙ্গলবার কলকাতা বিমানবন্দরে নেমেই রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে তদন্তে প্রভাব খাটানোর অভিযোগ করেছেন। কিন্তু, এসবের মধ্যেই তুমুল তোলপাড় চলছে অন্য একটি বিষয় নিয়ে। মঙ্গলবার সকালে শিলং-এর সিবিআই দফতরে হনুমান টুপি পরে এক ব্যক্তিকে ঢুকতে দেখা যায়। কে এই ব্যক্তি?
মঙ্গলবার সকাল ১০ টা নাগাদ সিবিআই দফতরে হনুমান টুপি পরে ঢুকতে দেখা যায় একজনকে। তাঁর চোখ-মুখ এমনভাবে ঢাকা ছিল যে চেনার কোনও উপায় নেই। এই নিয়েই ধন্দ তৈরি হয়। কে এই ব্যক্তি, কেন তাঁকে শিলং-এ ডাকা হল, উঠছে প্রশ্ন। মুখই বা ঢাকা কেন?
আরও পড়ুন: রাজীব কুমার মামলায় পিছু হটল সিবিআই
সূত্রের খবর, হনুমান টুপি পরা ওই ব্যক্তি আর কেউ নয়, সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনের 'গুরু'। নাম- শিবনারায়ণ দাস। কেমন গুরু এই শিবনারায়ণ?
চিট ফান্ড ব্যবসায় সুদীপ্ত সেনের 'শিক্ষা গুরু' হলেন সিলিকন গ্রুপের কর্তা শিবনারায়ণ। তাঁর হাত ধরেই চিটফান্ডের কারবারে ফুলেফেঁপে উঠেছেন সারদা কর্তা। শিবনারায়ণ দাসকে এর আগে দু'বার গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। বাজার থেকে ৩০০ কোটি টাকা তোলার অভিযোগ রয়েছে বেআইনি অর্থলগ্নী সংস্থা সিলিকন গ্রুপের বিরুদ্ধে। আর এই সিলিকন গ্রুপেরই অন্যতম ডিরেক্টর হলেন শিবনারায়ন দাস।
আরও পড়ুন: সিআইডির পর এবার এসটিএফের শীর্ষেও রাজীব কুুমার
সূত্রের খবর, সারদা গ্রুপের জন্মলগ্ন থেকেই সংস্থার ডিরেক্টর ও অংশীদার ছিলেন শিবনারায়ণ। সুদীপ্ত সেন চিট ফান্ড চালানোর যাবতীয় পরামর্শ পেয়েছিলেন এই গুরুর কাছ থেকেই। সেই শিবনারায়ণকেই এদিন হাজির করা হয়েছিল শিলং-এ সিবিআই-এর অফিসে। জানা যাচ্ছে, চতুর্থ দিনে অর্থাৎ মঙ্গলবার (গতকাল) ৯ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে কলকাতার পুলিশ কমিশানারকে।
আরও পড়ুন: নজিরবিহীন গোপনীয়তায় শিলং-এ জেরার মুখে রাজীব কুমার, উপস্থিত কুণালও
সিবিআই সূত্রে খবর, সারদা চিট ফান্ডের জন্য যখন সিট গঠন করা হয়েছিল, তখন এই শিবনারায়ণ দাস পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন। কীভাবে তিনি পালিয়ে বেড়াতে সক্ষম হয়েছিলেন তা নিয়ে পরে প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারি সংস্থায়। তদন্তকারিরা মনে করেন, সুদীপ্তর এই 'গুরু'কে খোঁজার কোনও চেষ্টাই করেনি রাজ্য সরকার দ্বারা গঠিত সিট।
অভিযোগ উঠেছিল, এই শিবনারায়ন দাসের সংস্থায় সারদার কোটি কোটি টাকা সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি যখন শিবনারায়ণ দাসের খোঁজ শুরু করে, তখন টনক নড়ে সিটের। প্রশ্ন উঠেছিল, শিবনারায়ন দাস প্রসঙ্গে সিট নীরব ছিল কেন? তাহলে কি শিবনারয়াণের কাছ থেকে বিশেষ কোনও তথ্য পেয়েছে বলেই শিলং-এ তাঁকে হাজির করল সিবিআই, উঠছে প্রশ্ন।