New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/02/04/O2NvBt3AiSXTXEsbb7Us.jpg)
সরস্বতী পুজোয় ভাষা বিপ্লব! বাংলা মন্ত্রোচ্চারণে দেবীর আরাধনা, অভিভূত সকলে Photograph: (ফাইল ছবি)
East Bardhaman Saraswati Puja In Bengali language: বৈদিক যুগে ছিল না বাংলা ভাষা। তখন সংস্কৃতই ছিল সাধারণ মানুষের প্রাথমিক ভাষা। তাই সেই বৈদিক যুগ থেকেই সংস্কৃত উচ্চারণের মধ্যে আবদ্ধ ছিল হিন্দু দেব-দেবীর পুজার সমস্ত মন্ত্র। তবে এবার মারুত কাশ্যপের সৃষ্টিশীলতায় পুজোর মন্ত্রেচ্চারণে ঘটে গেল বড়সড় ভাষা বিপ্লব।
সরস্বতী পুজোয় ভাষা বিপ্লব! বাংলা মন্ত্রোচ্চারণে দেবীর আরাধনা, অভিভূত সকলে Photograph: (ফাইল ছবি)
East Bardhaman Saraswati Puja In Bengali language: বৈদিক যুগে ছিল না বাংলা ভাষা। তখন সংস্কৃতই ছিল সাধারণ মানুষের প্রাথমিক ভাষা। তাই সেই বৈদিক যুগ থেকেই সংস্কৃত উচ্চারণের মধ্যে আবদ্ধ ছিল হিন্দু দেব-দেবীর পুজার সমস্ত মন্ত্র। তবে এবার মারুত কাশ্যপের সৃষ্টিশীলতায় পুজোর মন্ত্রেচ্চারণে ঘটে গেল বড়সড় ভাষা বিপ্লব। সোমবার সংস্কৃতর বদলে সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায় লেখা মন্ত্রে দেবী সরস্বতীর পূজা অর্চনা হল পূর্ব বর্ধমানের মশাগ্রামের সারদা মিশন স্কুলে। যা চাক্ষুষ করতে এদিন সারদা মিশন স্কুলে হাজির হয়ে ছিলেন ভাষাবিদ ডঃ পবিত্র সরকার এবং কবি অংশুমানকর। তাঁরা বাংলা মন্ত্রোচ্চারণে দেবী সরস্বতীর পুজো অর্চনা দেখে যারপরনাই অভিভূত।
মন্ত্র শব্দটি সংস্কৃত শব্দ। যার অর্থ হল মনকে মুক্তি প্রদান করা।সেই বৈদিক যুগথেকে হিন্দু দেব দেবীর পূজোর সমস্ত মন্ত্র সংস্কৃতে উচ্চারিত হয়ে আসায় তার অর্থ অনেকের কাছেই বোধগম্য হয়ে উঠছিল না। তাদের কাছে মন্ত্রের অর্থ-ভাবার্থ ,সবই যেন মূল্যহীন রয়ে থাকছিল। তারই ইতি এদিন কার্যত টেনে দিলেন মারুত ক্যাশপ। এই প্রসঙ্গে ভাষাবিদ পবিত্র সরকার বলেন,‘বাংলায় পুজোর মন্ত্রোচ্চারণ শুনে আমার খুব ভাল লেগেছে। এই আরম্ভটাকে আমি বলবো একটা অগ্রগতি'।
পুজোর মন্ত্রোচ্চারণ শুধু সংস্কৃতে রয়ে থাকায় অনেকের কাছেই যে তা বোধগম্য হত না তা পবিত্র সরকারের কথাতেও প্রকাশ পেয়েছ । এ নিয়ে তিনি বলেন, আমি যা বুঝি না ,সেটা আমি অনুভব করি না। মন্ত্রটা আসলে ভক্তি। আর ভক্তিটা অনুভবের ব্যাপার। কিন্তু এতদিন আমরা পাখি পড়ার মতন মন্ত্র পড়ে এসেছি। কিন্তু আমরা অনুভব কিছু করে উঠতে পারিনি। মারুত কাশ্যপ সেই অনুভবের পথটাই এদিন খুলে দিলেন । সারদা মিশন স্কুল কর্তৃপক্ষ এই বিষয়টিকে বাস্তব করলো ,এটাও একটা দৃষ্টান্ত। বাংলায় মন্ত্রে সরস্বতী পুজো ও পুষ্পাঞ্জলী দেওয়া চাক্ষুষ আমি অভিভুত। আমার জীবনে এটা একটা অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতা। মারুত কে আমি অভিনন্দন জানাই এ কাজে হাত দেবার জন্য। একই ভাবে সারদা মিশন স্কুল কতৃপক্ষকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি এইরকম একটা অনুভব তৈরির জন্য।
অনুবাদক মারুত কাশ্যপ বলেন, “প্রথমে অনেক দ্বিধা নিয়েই এই কাজ হাত দিয়ে ছিলাম। তবে যত এগিয়েছে ততই আমার তৃপ্তি বেড়েছে। মন্ত্রোচ্চারণ কবিতার ছন্দে গাঁথা হয়েছে মাধুর্য ফুটিয়ে তোলার জন্য।' এমন মন্ত্রোচ্চারণে ভক্তির অনুভবতা বাড়বে বলে মারুত কাশ্যপ আশা প্রকাশ করেছেন।
অন্যদিকে সারদা মিশনের অধ্যক্ষ চন্দন সাঁধুখা বলেন,'দেবী সরস্বতী মা কে নিজের ভাষায় ডাকতে পারার, ভক্তি নিবেদন করতে পারার আনন্দই আলাদা। মন্ত্রের মর্মার্থ না জানলে ভক্তির অনুভব প্রকাশ পায় না। দেবী সরস্বতী মা কে সাক্ষী রেখে বাংলা মন্ত্রোচ্চারণে পুজো সূচনা এদিন সারদা মিশন স্কুল থেকে হল। বাংলা মন্ত্র নিয়ে বইটি এদিন থকেই সাধারণের হাতে তুলে দেওয়া হবে“।
অংশুমান কর বলেন“ কাজটি সত্যিই অভিনব। মারুতের এই পরিশ্রম কে সাধুবাদ দিতেই হয়। তার অনুবাদিত বইটি শুধুমাত্র মন্ত্রের বাংলা অনুবাদ নয়। বইটি কাব্য গুণেও উচ্চমানে সম্বৃদ্ধ।“ স্কুলের ছাত্রী প্রেমজ্যোতি ঘোষ বাংলা মন্ত্রোচ্চারণে অঞ্জলি দিয়ে খুবই আপ্লুত। তার কথায় ,“এই প্রথমবার বাংলায় অঞ্জলি দিলাম। আগে মানে না বুঝেই অঞ্জলি দিয়েছি। আজ মানে বুঝে অঞ্জলি দিলাম'।'