Howrah Love Fraud Case: ১৬ বছরের দাম্পত্য জীবন। সংসারে অভাব থাকলেও সেই অনটনকে সঙ্গে নিয়েই দিব্যি কেটে যাচ্ছিল দিনগুলি। স্ত্রীকে অন্ধ বিশ্বাস, ভালবেসেও ঠকতে হয় হাওড়ার এক ব্যক্তিকে। ভালবাসার এই কাহিনী অবাক করতে বাধ্য করবে। এক সময়ের ভালবাসার মানুষকে ছেড়ে এখন নতুন 'মনের মানুষের' সঙ্গেই সংসার পেতেছেন স্ত্রী সুপর্ণা। এখনও একথা যেন মেনে নিতে পারছেন না সাঁকরাইলের ধুলোগড় ব্যানার্জি পোলের বছর চল্লিশের পিন্টু বেজ।
বরাবরই স্ত্রী-সন্তানের সুখই ছিল পিন্টুর কাছে সবকিছু। সন্তানকে মানুষ করতে, সংসারে স্বাচ্ছন্দ্য আনতে সকাল থেকে রাত প্রাণপাত করতেন বছর ৪০-এর পিন্টু বেজ। আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্য না থাকলেও পাশে ছিলেন ভালবাসার মানুষটি। হাজারো চেষ্টা করেও দূর হচ্ছিল না সংসারের অভাব-অনটন। অবশেষে স্ত্রীর পরামর্শে সংসারে স্বাচ্ছদ্য আনতে পিন্টু নেন কঠিন এক সিদ্ধান্ত। সংসারের অভাব দূর করতে নিজের কিডনি বিক্রি করার চেষ্টা করতে থাকেন পিন্টু। বছর খানেকের চেষ্টায় মাত্র কয়েকদিন আগেই ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে নিজের একটি কিডনি বিক্রি করেন তিনি।
কিডনি বিক্রির সেই টাকা তুলে দেন স্ত্রী সুপর্ণার হাতে। তবে নিজের সবচেয়ে কাছের, ভরসার মানুষ যে এভাবে বিশ্বাস ভাঙতে পারে তা কখনও ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি পিন্টু। ১০ লাখ টাকা হাতে পেয়েই কিছুদিন সংসার করার পর অবশেষে ব্যারাকপুরে রং মিস্ত্রি প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়ে যান স্ত্রী সুপর্ণা।
স্ত্রীকে হন্যে হয়ে খুঁজেও না পেয়ে অবশেষে পুলিশের দ্বারস্থ হন তিনি। লক্ষ্য করেন উধাও কিডনি বিক্রির ১০ লক্ষ টাকাও। সাঁকরাইল থানায় দায়ের হয় মিসিং ডায়েরি। কিছুদিন পর পিন্টু জানতে পারেন স্ত্রী সুপর্ণা রয়েছেন ব্যারাকপুরে সুভাষ কলোনি এলাকায় মনের মানুষের সঙ্গে সংসার পেতে। সেকথা শুনেও বিশ্বাস করতে পারেন নি তিনি। ছুটে যান নিজেই। স্ত্রীকে ফিরে আসার কারত আর্জিও জানান। কিন্তু হাজারো অনুনয় বিনয়ের পরও স্ত্রী ফেরেননি। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন পিন্টু। সুপর্ণা লিখিতভাবে জানিয়ে দেন, নিজের ইচ্ছাতেই পিন্টুকে ছেড়ে মনের মানুষের সঙ্গে সংসার পেতেছেন তিনি। নিজের ইচ্ছাতে সংসার ছাড়ায় পুলিশের তরফেও জানানো হয় তাদের এই বিষয়ে আর কিছু করার নেই।
পিন্টু এখন অশক্ত। মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। দিনের বেশির ভাগ সময়ে শুয়েই দিন কাটান। ভালবাসার মানুষ দীর্ঘদিন একসঙ্গে সংসার করেও কীভাবে করতে পারেন এমন বিশ্বাসঘাতকতা? তা ভেবেই পাচ্ছেন না তিনি। পিন্টুর স্মৃতি এখনও তাড়া করে বেড়ায় সুপর্ণার সঙ্গে তাঁর প্রেমের রঙিন সেই সব দিন। ৬ মাসের প্রেম, তারপর বিয়ে। বিয়ের কিছুদিন পর একটি ফুটফুটে মেয়েও হয় পিন্টু-সুপর্ণার। কী করে সেই ভালবাসার মানুষটি এভাবে একা ফেলে সর্বস্ব হাতিয়ে নিলেন তা ভেবেই চোখে জল পিন্টুর। এখন পিন্টু চান সুপর্ণা যেন তাঁর এই ভুলের শাস্তি পায়। ফেরত পান কিডনি বিক্রির ১০ লক্ষ টাকাও।