Crime News Bengal: শ্বশুরবাড়ি থেকে বউকে ফিরিয়ে আনতে গিয়েছিল জামাই। সেই জামাইয়ের ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ার ঘটনার কথা জানাজানি হতেই জনরোষ আছড়ে পড়ল শ্বশুর বাড়িতে। জামাই সুরেশ মাঝির মৃতদেহ বাড়ির সামনে ফেলে রেখেই চলে ইট বর্ষণ। ঘটনার জেরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের রায়নার বিদ্যানিধি গ্রামে। খবর পেয়ে রায়না থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছায়। পুলিশ জামাইয়ের দেহ উদ্ধার করতে গেল ব্যাপক ক্ষোভ বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়। শেষে পূলিশ মৃত সুরেশ মাঝির শ্বশুর বাড়ির কয়েকজনকে আটক করলে উত্তেজনায় লাগাম পড়ে। এরপর পুলিশ মৃত জাইয়ের দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়।
মৃত যুবকের স্ত্রী মেঘা ক্ষেত্রপাল, শ্বশুর সুকুমার ক্ষেত্রপাল এবং শাশুড়ি টুটুল ক্ষেত্রপাল কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।রায়নার শ্যামসুন্দর কলেজে বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী ধৃত মেঘা। সুনির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ এই ধৃতকেই রবিবার বর্ধমান আদালতে পেশ করে। মৃত যুবকের বাবা বাপি মাঝি জানিয়েছেন,বছর ২১ বয়সী সুরেশ মাঝি কৃষি যন্ত্রাংশ সারাইয়ের কাজ করতো।গ্রামের এক তরুণীর সঙ্গে সুরেশের ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। গত বৈশাখ মাসে ওই তরুণীকেই বিয়ে করে সুরেশ। কিন্তু সুরেশের সংসার জীবন সুখের হয় নি। অন্য মেয়ের সঙ্গে সুরেশের সম্পর্ক রয়েছে,এমনটা সন্দেহ করত সুরেশের স্ত্রী। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে সম্পর্কের টানাপড়েন শুরু হয়।
কয়েক মাস সংসার করার পর সুরেশের স্ত্রী সুরেশকে ছেড়ে তাঁর বাপের বাড়িতে চলে যায় । স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয় সুরেশ। বিবাহ বিচ্ছেদ বাবদ সুরেশের থেকে ৫ লক্ষ টাকা চাওয়া হয় তাঁর শ্বশুর বাড়ির তরফে । মৃত যুবকের পরিবারের দাবি অনুযায়ী, স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে অনার জন্য সুরেশ ফের শুক্রবার তাঁর শ্বশুর বাড়িতে যায়। কিন্তু বউকে ফিরিয়ে আনা তো দূরের কথা, উল্টে শনিবার সকালে তারা দেখের বাড়ির একটি ঘরে সুরেশের মৃতদেহ ঝুলছে। মৃতদেহের পা ঘরের মেঝেতে এমন ভাবে ঠেকে রয়েছে, যেন সুরেশ দাড়িয়ে রয়েছে। গ্রামের মাটির রাস্তা থেকে বাড়ির উঠান পর্যন্ত ফোঁটা ফোঁটা করে রক্ত পড়ে থাকার বিষয়টি সবার নজরে আসে। তাতেই গ্রামের সবাই এক প্রকার নিশ্চিত হন, সুরেশ কে প্রাণে মেরে ওর শ্বশুর বাড়ির লোকজনই হয়তো বাড়িতে ওর দেহ ঝুলিয়ে দিয়ে পালিয়ে গেছে ।
৩৫ প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা, সিবিআই তদন্ত নিয়েও ক্ষোভ! আরজি কর কাণ্ডে হাল ছাড়তে নারাজ মৃতার পরিবার
মৃত যুবকের আত্মীয় সুপর্ণা ধরা বলেন ,আমার মাসির বাড়ির সামনের রাস্তা জুড়ে রক্তের ফোঁটা পড়ে থাকা এবং মৃতদেহ যে ভাবে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল, সেটা আত্মহত্যার কোন ঘটনা হতে পারে না। সুপর্ণা পরিস্কার জানিয়ে দেন, সুরেশ কে প্রাণে মরে ওর শ্বশুর বাড়ির লোকজন রাতের অন্ধকারে মৃতদেহ বাড়ির ঘরে ঝুলিয়ে দিয়ে পালিয়েছে। সুরেশের বউ ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করেছেন সুপর্ণা। একই দাবি করেছেন সুরেশের প্রতিবেশীরা ।
বর্ধমান দক্ষিণ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) অভিষেক মণ্ডল জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। মৃতের শ্বশুর বাড়ির তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।