Advertisment

'ইনকিলাব জিন্দাবাদ-জয় শ্রীরাম বললে ল্যাম্পপোস্টে বাঁধুন', বেনজির হুমকি তৃণমূল নেতার

পঞ্চায়েত ভোট যত এগোচ্ছে হুমকি-হুঁশিয়ারি ততই বাড়ছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
tmc kunal ghosh get permission to go abroad from kolkata hc

বিদেশযাত্রার ছাড়পত্র তৃণমূলের শীর্ষ নেতাকে।

পঞ্চায়েত ভোট যত এগোচ্ছে হুমকি-হুঁশিয়ারি ততই বাড়ছে। এবার সিপিএম-বিজেপিকে একাসনে বসিয়ে বেনজির আক্রমণ তৃণমূল নেতার। 'রাম-বাম মিলেমিশে এক হয়ে গেছে। যাঁরা ইনকিলাব জিন্দাবাদ বলবে বা জয় শ্রীরাম বলবে তাঁদের ল্যাম্প পোস্টে বেঁধে রাখুন'। ভরা সভায় এমনই হুঁশিয়ারি দিয়ে জোর চর্চায় পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু। তৃণমূল নেতার এহেন নিদানে চটে লাল বিরোধীরা। 'দিন আসছে, দিকে দিকে তৃণমূল নেতাদেরই বেঁধে রাখবে মানুষ'। পাল্টা সোচ্চার বাম-বিজেপি।

Advertisment

বছর ঘুরলেই রাজ্যে ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট শান্তিপূর্ণ করার বার্তা দিয়ে চলছেন। কিন্তু উপরের তলার এই বার্তা কি তবে দলের নীচুস্তরে পৌঁছোচ্ছে না? গত কয়েকদিনে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তৃণমূল নেতা-বিধায়কদের মুখের হুমকি-হুঁশিয়ারি কিন্তু অন্য ইঙ্গিতই দিচ্ছে। সেই ইঙ্গিতে বিরোধীরা সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন।

২০১৮-এর পঞ্চায়েতের 'ফর্মুলা' কাজে লাগাচ্ছে রাজ্যের শাসকদল, এখন থেকেই এই অভিযোগ তুলে সোচ্চার বিরোধীরা। ২০১৮-এর পঞ্চায়েতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ব্যাপক সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। সেবার ৩৪ শতাংশ আসনে বিরোধী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র পর্যন্ত জমা দিতে পারেননি। তৃণমূলের হুমকি-হুঁশিয়ারি-বাধাতেই বিরোধী প্রার্থীরা সেবার মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছিল।

আরও পড়ুন- যোগাসনে বিশ্বজয় বঙ্গতনয়ার, তরুণীর নজরকাড়া কীর্তিকে কুর্নিশ

শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের কালনা ২ নং ব্লকের সিঙ্গারকোনে খেতমজদুরদের সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি দেবু টুডু। সমাবেশ মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আগাগোড়া এই তৃণমূল নেতা ছিলেন বেশ আক্রমণাত্মক। বিজেপি ও সিপিএমকে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানিয়েছেন তিনি। ১০০ দিনের কাজে এরাজ্যে টাকা দেওয়া বন্ধ রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এদিন এই ইস্যুটি নিয়ে কেন্দ্রের মোদী সরকারের কড়া সমালোচনা করেছেন তিনি। তৃণমূল নেতার দাবি, 'কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজ, বাংলা আবস যোজনার টাকা দেওয়া বন্ধ রাখলেও তা নিয়ে রাজ্যের বিজেপি ও সিপিএমের কোনও হেলদোল নেই।' বিজেপি-সিপিএম এক হয়েছে বলে তোপ এই তৃণমূল নেতার।

publive-image
কালনার সভায় বক্তব্য় রাখছেন জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা দেবু টুডু। ছবি: প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়।

ভরা সভায় এরপরেই হুঁশিয়ারি দিয়ে দেবু টুডু বলেন, “যাঁরা ইনকিলাব বলবে, যাঁরা জয় শ্রীরাম বলবে তাদের পাড়ার ল্যাম্প পোস্টে বেঁধে রাখুন। বলুন যে টাকা দিতে হবে। তারপর তোমরা জয় শ্রীরাম, ইনকিলাব জিন্দাবাদ বলবে।'' খেত মজদুরদের সমাবেশে উপস্থিত প্রত্যেককে এদিন 'সশস্ত্র' আন্দোলনে নামারও আহ্বান জানিয়েছেন দেবু টুড। আদিবাসীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ''আমাদের তির-ধনুক আছে! লাঠি আছে, অস্ত্র আছে। আমাদের আন্দোলন করতে হবে। লড়াই করে করেই আমাদের বাঁচতে হবে। ভিক্ষা চেয়ে নয়, অধিকার কেড়ে নিতে হবে।'

এদিকে, তৃণমূল নেতা দেবু টুডুর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন যে আদৌ অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হবে না তা তৃণমূলের নেতাদের হুমকি থেকেই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ সর্বত্রই তৃণমূল কংগ্রেস নেতাদের হুমকি অব্যাহত রয়েছে। এই সবের জন্য গ্রাম বাংলার মানুষ আগামী দিনে তৃণমূলের নেতাদেরই গাছে বেঁধে রাখবে।”

tmc bjp Panchayat poll CPIM West Bengal
Advertisment