দীর্ঘ টালবাহানা শেষে শেষমেশ দোলের দিনেই অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লিতে নিয়ে গিয়েছে ইডি। তবে সেখানে গিয়েও বিড়ম্বনার শেষ নেই। ইডির কোনও প্রশ্নের উত্তরই তিনি নিজে হাতে লিখতে পারবেন না বলে সাফ জানালেন তৃণমূল নেতা। হিন্দি, ইংরেজি তো দূর অস্ত! বাংলাতে লিখতেও তাঁর সমস্যা হয় বলে নাকি ইডির অফিসারদের জানিয়েছেন কেষ্ট। অগত্যা বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতির জন্য কপি রাইটারের বন্দোবস্ত করতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় সংস্থা।
গরু পাচার মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তদন্তে নেমে নামে-বেনামে কেষ্টর পাহাড়-প্রমাণ সম্পত্তির হদিশ পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সিবিআইয়ের হাত থেকে কেষ্টকে নিয়ে দিল্লি তুলেছে ইডি। সেখানে জেরা-পর্ব চলছে। দিল্লিতে ইডি হেফাজতে নিয়ে জেরা করছে কেষ্টকে। তবে এখানেও বেধেছে বিপত্তি। তদন্তকারী অফিসাররা কেষ্টকে যা প্রশ্ন করছেন তার উত্তর তাঁকে নিজে হাতে লিখতে বলা হয়।
একথা শুনে প্রথমেই অনুব্রত মণ্ডল ইডির অফিসারদের জানিয়ে দেন হিন্দি বা ইংরেজি তাঁর জানা নেই। তবে বাংলায়? এখানেও বিপত্তি! কেষ্ট নাকি বাংলা লিখতেও জানেন না। অফিসারদেরই তিনি জানিয়েছেন একথা, এমনই খবর সূত্রের। এরপরেই অনুব্রত মণ্ডলের জন্য একজন রাইটারের বন্দোবস্ত করে ইডি। ওই রাইটারই ইডির তরফে করা প্রশ্নের কেষ্ট যা উত্তর দিচ্ছেন তা লিখে দিচ্ছেন।
আরও পড়ুন- দু’দফায় টাকা পাঠিয়েছিলেন কুন্তল, কেন? তলব পেয়েই ED-র দফতরে অভিনেতা বনি সেনগুপ্ত
এদিকে, ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে দিল্লিতে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতিকে জেরা-পর্বের পুরোটারই ভিডিওগ্রাফি করা হচ্ছে। সূত্রের দাবি, জেরায় একাধিক প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যাচ্ছেন তৃণমূল নেতা। কখনও চুপ থাকছেন, কখনও জানেন না বলছেন। মোটের উপর তদন্তে কেষ্ট সহযোগিতা করছেন না বলেই মত ইডির। জানা গিয়েছে, অনুব্রত মণ্ডলের তদন্তে অসহযোগিতা ও বাংলা লিখতেও না জানার বিষয়টি আদালতেও জানাবে কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি। বাংলা লিখতে না জানার পিছনে কেষ্ট যা যুক্তি দিয়েছেন সেটিরও ভিডিওগ্রাফি করা হয়েছে। সেই ভিডিও কোর্টের সামনে তুলে ধরবে ইডি।
আরও পড়ুন- চুক্তি ছাড়াই টাকার লেনদেন! কী বলছেন বনি ও কুন্তল?
গরু পাচার মামলায় দীর্ঘ সাত মাস ধরে জেলে রয়েছেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। রাজনীতির আঙিনায় পা রাখার আগে কেষ্ট নানা সময়ে নানা কাজ করেছেন। কখনও মুদি দোকানে কাজ করেছেন, কখনও আবার মাছের ব্যবসাও করেছেন। অনুব্রত মণ্ডল ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়েছিলেন বলে শোনা যায়, তবে এব্যাপারেও স্পষ্ট তথ্য মেলেনি। তিনি হিন্দি-ইংরেজি না জানলেও বাংলা লিখতে পারেন না, একথা বিশ্বাস করে না ইডি, এমনই দাবি সূত্রের।