রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যেতিপ্রিয় মল্লিক বারে বারেই নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন। শীঘ্রই তিনি মুক্তি পাবেন বলেও দাবি করছেন। এদিকে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট তাঁর যাবতীয় আর্থিক লেনদেনের ব্যাপারে পৃথক তিন দিন তলব করেছে মন্ত্রীর হিসেবরক্ষক জয়শঙ্কর গুপ্তাকে। পাশাপাশি বেশ কিছু নথিও তিনি জমা দিয়েছেন ইডিকে। এদিন বিকেল ৪টে নাগাদ জয়শঙ্কর গুপ্তা আসেন সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দফতরে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি আধিকারিকরা। হিসেবরক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদে খাদ্য দুর্নীতি মামলার তদন্তে নয়া মোড় নিতে পারে বলে মনে করছে ইডি।
বুধবার তৃতীয়বারের জন্য সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি দফতরে আসেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হিসেবরক্ষক জয়শঙ্কর গুপ্তা। এ দিনও তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তাঁর কাছে জানতে চান তদন্তকারীরা। ইডির পক্ষ থেকে বনমন্ত্রীর হিসেবরক্ষকের কাছে নথি চেয়ে পাঠানো হয়েছিল। এ দিন বেশ কিছু নথিও জমা দেন জয়শঙ্কর গুপ্তা। তাঁর বয়ান রেকর্ড করেছে ইডি।
আরও পড়ুন- সলমনের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর নাচ, মমতাকে চাঁচাছোলা নিশানা গিরিরাজ-শুভেন্দুর, পাল্টা তৃণমূলের
এর আগে ১ ডিসেম্বর, শুক্রবার রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রীর হিসেবরক্ষক জয়শঙ্কার গুপ্তাকে তলব করেছিল ইডি। ওই দিন প্রায় ৪ ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল ইডি আধিকারিকরা। প্রথম দিনও বেশ কিছু নথি জমা দিযেছিলেন জয়শঙ্কর গুপ্তা। তারপর ফের তাঁকে গতকাল, অর্থাৎ মঙ্গলবার সিজিও কমপ্লেক্সে ফের তলব করে ইডি। সেই তলবে সাড়া দিয়ে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের হিসাবরক্ষক হাজির হয়েছিলেন। মঙ্গলবার বেশ কিছু নথি জমা দিয়েছেন তিনি। আর্থিক লেনদেনের হিসেব চাওয়া হয়েছিল তাঁর কাছে। ওই দিন তিন ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাঁকে। সূত্রের খবর, ইডি মনে করছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আর্থিক লেনদেনের যাবতীয় হিসেবের নথিপত্র রয়েছে এই হিসেবরক্ষকের কাছে। তাই বারে বারে তাঁকে তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পাশাপাশি জয়শঙ্কর গুপ্তার কাছে দফায় দফায় নথিও চেয়ে পাঠাচ্ছে ইডি।
জ্যোতিপ্রিয় নিজে যেমন নির্দোষ বলে দাবি করেছেন, একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়েরও দাবি বালু নির্দোষ। তাঁকে বিজেপি ফাঁসিয়েছে। এখনও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিককে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রেশন দুর্নীতি মামলা এখন ইডির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। ইতিমধ্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই দুর্নীতিতে যুক্ত বলে বেশ কয়েকজনের নাম বলেছেন প্রকাশ্যে। তাঁরা অনেকে এখনও বাইরেই আছে। এদিকে জয়শঙ্কর গুপ্তাই এই মামলার ট্রাম্প কার্ড হতে পারে বলে মনে করছে তদন্তকারীরা। তাই তাঁকে বার বার জিজ্ঞাসাবাদ করছে ইডি। মন্ত্রীর টাকাপয়সার লেনদেন কীভাবে হত? কাদের সঙ্গে লেনদেন চলত? বিশেষ কোথাও টাকা ইনভেস্ট হয়েছে কিনা? এসব জানতে তৎপর ইডি। পাশাপাশি একের পর এক নথিও চাইছে তাঁর কাছ থেকে।