গরুপাচার কাণ্ডে বীরভূম জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে গিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। তিহারবন্দি রয়েছেন অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলও। সূত্রের খবর, এবার শিক্ষায় দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুকেও দিল্লি নিয়ে যাওয়া হতে পারে। আইনি প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। আদালতে যাওয়া নথিপত্র তৈরি করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
দীর্ঘ দিন ধরে এসএসকেএমে ভর্তি আছেন সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র। তাঁর কন্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করার জন্য আদালতের নির্দেশে বারে বারে পিজি ছুটে গিয়েছেন ইডির আধিকারিকরা। কিন্তু সেই নমুনা পরীক্ষা করতে পারেননি তদন্তকারীরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীর শারীরিক অবস্থার কথা বলে অনুমতি দেননি। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তের জন্য কালীঘাটের কাকুর কন্ঠস্বর অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
সূত্রের খবর, তদন্তকারীরা মনে করছেন এরাজ্যে তদন্তের ক্ষেত্রে নানা বাধা রয়েছে। বিশেষত প্রভাবশালী তত্ত্বের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। প্রভাব খাটানোর ফলে তদন্তের গতি বাধা পাচ্ছে বলে মনে করছে ইডি। এদিকে সুপ্রিম কোর্ট নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্তের সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে। তাই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকেও দিল্লি নিয়ে যাওয়া ছাড়া গত্যন্তর দেখছে না ইডি।
শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এর আগে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক ও তৎকালীন রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য সহ একাধিক আধিকারিককে। পার্থ ঘনিষ্ঠ মডেল-অভিনেত্রী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ২টি ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা ও হীরে-জহরত উদ্ধার করেছে ইডি।
একাধিক তৃণমূল নেতা গ্রেফতার হয়েছে এই দুর্নীতি কাণ্ডে। কালীঘাটের কাকু যুক্ত ছিলেন লিপস এন্ড বাউন্ডস সংস্থার সঙ্গে। ইডির বয়ান অনুযায়ী এই সংস্থার সিইও তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিষেকের বাবা অমিত বন্দ্যোপাধ্যায় ও মা লতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত বলে ইডি তাঁদেরও তলব করেছিল।
আরও পড়ুন- স্বামীজিকে নিয়ে ‘অপমানজনক’ মন্তব্য, সুকান্তর নিঃশর্ত ক্ষমা দাবি তৃণমূলের, শুরু জলঘোলা
ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ প্রায় ৫ হাজার পাতার ডকুমেন্টস জমা দিয়েছেন ইডিকে। আদালত সেই ডকুমেন্টস খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে। সুজয় কৃষ্ণ বলেছিলেন, 'আমার সাহেবকে ছুঁতে না পেরে, আমার কাছে এসে থেমে গিয়েছে।' নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় নাম জড়ানো তাপস মণ্ডল, গোপাল দলপতি, কুন্তল ঘোষেদের মুখেই শোনা গিয়েছিল কালীঘাটের কাকুর কথা।
ইডি মনে করছে, সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের কন্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করতে পারলে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নয়া মোড় আসবে। আইনি দিকগুলো খতিয়ে দেখছে ইডি। সূত্রের খবর, দিল্লি যাওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে নথিপত্র প্রস্তুত করছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তারপর আদালতের দ্বারস্থ হতে পারে ইডি।