রেশন বন্টন দুর্নীতি মামলায় এবার জোরালো পদক্ষেপ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। মঙ্গলবার দুপুর ১.০৫ মিনিট নাগাদ সল্টলেকের অরণ্য ভবনে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে হাজির হন ইডি আধিকারিকরা। তদন্তকারীরা সোজা চলে যান ভবনের ৯ তলায় বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের খাস দফতরে। যেখানে বসে দফতর পরিচালনা করতেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
রেশন দুর্নীতি মামলায় জেলবন্দি রয়েছেন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তার আগে গ্রেফতার হয়েছেন মন্ত্রী ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী বাকিবুর রহমান। এবার ইডি হানা দিল খোদ মন্ত্রীর অফিসে। এই মামলায় কয়েকদিন আগে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বিরুদ্ধে যে চার্জশিট জমা দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে যে এই দুর্নীতিতে একদিকে বন্টন, অন্যদিকে ধান কেনা নিয়ে ব্যাপক কেলেঙ্কারি চলেছে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। তদন্তকারীদের ধারণ, ২০২১ সালে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দফতর বদলের পরেও এই দুর্নীতি রমরমিয়ে চলছিল।
এর আগে দিনভর মধ্যমগ্রামে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি চালায় ইডি। দফতর বদলের পরেও যদি খাদ্য দফতরে সেই দুর্নীতি চলে তাহলে কি আর কোনও প্রভাবশালী মন্ত্রীর যোগ খুঁজতে তৎপর ইডি? পাশাপাশি এই প্রশ্নও উঠছে, দফতর বদলের পরেও অরণ্য ভবনের ৯ তলার দফতর থেকে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নিজেই কি কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করতেন?
সূত্রের খবর, এদিকে বাকিবুর রহমনের দুর্নীতির হাল হাকিকত খুঁজতে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বাকিবুরের শ্যালক অভিষেক বিশ্বাসকে। তিনি ইডিকে জানিয়েছেন, বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের আশীর্বাদেই অরণ্য ভবনে বন দফতরে চাকরি পেয়েছেন। জানা গিয়েছে, এই অভিষেককে জেরা করেই বেশ কিছু জোরালো তথ্যপ্রমাণও পেয়েছে ইডি। সেই তথ্যের ওপর নির্ভর করেই তল্লাশি চালাচ্ছে ইডি। অরণ্য ভবনে মন্ত্রী বা তাঁর আপ্ত সহায়কের ঘর থেকে কোনও নথি মেলে কিনা সেদিকেই নজর তদন্তকারীদের।
আরও পড়ুন- সংসদে বিরাট নাশকতার ছক ছিল? তুঙ্গে জল্পনা! ললিতদের ভাড়াবাড়ির তালা ভেঙে ঢুকল পুলিশ
শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করতে গিয়ে অয়ন শীলের সল্টলেকের বাড়িতে এবং হুগলির বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকরা। সেখানে পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির সূত্র মিলেছিল। বন দফতরে তল্লাশি অভিযানে ফের নয়া তথ্য বা নতুন কোন কেলেঙ্কারি সামনে আসে কিনা তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের আধিকারিকদের তল্লাশি চালানোর সময় হাজির হন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের কর্মীরাও। বাজেয়াপ্ত করা নথিতে এবং পঞ্চনামায় সই করার জন্য ব্যাংক কর্মীরা হাজির হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।