কথা আগেই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, ২৯ জুলাইয়ের সেই বৈঠকটা হয়েছিল ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের অফিসে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও সেই বৈঠকে ছিলেন বটে। তবে, সেখানে তিনি শিক্ষামন্ত্রীর চেয়েও বেশি দলীয় কর্মী, তৃণমূলের নেতা। তাই এবার শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন এসএসসির আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা। সোমবার বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বৈঠক হওয়ার কথা।
শনিবারই বিকাশ ভবনে শিক্ষা দফতর থেকে ফোন করে এই বৈঠকের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ওই আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের। ফলে, তবে, বিশেষ পরিস্থিতিতে বৈঠক বাতিল হতে পারে। কিন্তু, সেটা বিশেষ পরিস্থিতি তৈরি হলেই। না-হলে বৈঠকের সূচি বদলাচ্ছে না। স্বভাবতই খুশি আন্দোলনকারী এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা। তাঁরা ঠিক করে নিয়েছেন আট জনের এক প্রতিনিধিদল বিকাশ ভবনে যাবে। নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির মেধাতালিকভুক্ত প্রত্যেক প্রার্থীর যাতে চাকরিটা সুনিশ্চিতভাবেই হয়, সেই নিয়েই তাঁরা কথা বলবেন।
ক্যামাক স্ট্রিটের বৈঠকের পরই বিরোধীরা সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন। প্রশ্ন তুলেছিলেন, অভিষেক কে? হতে পারেন তিনি তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। হতে পারেন তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো। কিন্তু, তিনি তো রাজ্য মন্ত্রিসভার কোনও সদস্য নন। ক্যাবিনেট মন্ত্রী দূর, রাষ্ট্রমন্ত্রীও নন। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। তাই, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কী আশ্বাস দিলেন না-দিলেন, তাতে কী এসে যায়।
বিরোধীরা এ-ও প্রশ্ন তুলেছিলেন, ব্রাত্য বসু যদি শিক্ষামন্ত্রী হিসেবেই বৈঠক করে থাকেন, তবে তিনি অভিষেকের কার্যালয়ে করলেন কেন? ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেকের কার্যালয় তো তৃণমূলের দলীয় দফতর। সেখানে কিভাবে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন? এই সমালোচনায় যোগ্য উত্তর খুঁজে না-পেয়ে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরাও জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁরা আন্দোলন তুলছেন না। আগে চাকরি হবে, তারপর আন্দোলন প্রত্যাহারের প্রশ্ন। কথামতো বৈঠক শেষ পর্যন্ত হলে, এই বিতর্কেরই অবসান সোমবার হতে চলেছে।
আরও পড়ুন- সংসদ নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে, গণতন্ত্র শ্বাসকষ্টে ভুগছে, কেন্দ্রকে তোপ চিদাম্বরমের
ইতিমধ্যে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন ৫০০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। ২০১৯ সাল থেকে তাঁরা আন্দোলন করছেন। শহরের নানা জায়গায় টানা আন্দোলনের পর এবার তাঁরা ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে অবস্থান করছেন। বর্তমানে কলকাতা হাইকোর্টে এসএসি নিয়োগ বিতর্কে মামলা চলছে। ইতিমধ্যে তাতে রীতিমতো চাপে সরকার। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইডি গ্রেফতার করেছে। তিনি জেল হেফাজতেও আছেন। এই পরিস্থিতি দেখে এবার আদালতের বাইরেই বিতর্ক মেটাতে যেন জোর দিতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল ও রাজ্য সরকার। আর, সেই কারণেই বারবার ডেকে পাঠানো হচ্ছে এসএসসির আন্দোলনরত চাকরিপ্রার্থীদের।