পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের একের পর এক বিধায়ক ও স্থানীয় নেতৃত্ব ক্ষোভপ্রকাশ করে চলেছেন। কেউ নির্দল প্রার্থীর হয়ে প্রচার করছেন। প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করছে দলীয় প্রতীক পাওয়া প্রার্থীদের নিয়ে। কেউ আবার দল ছাড়ার কথাই ঘোষণা করে দিয়েছেন। তবে নদিয়ার হাঁসখালিতে পঞ্চায়েতে প্রচারে গিয়ে জনসভায় দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দিয়েছেন, যাঁরা তৃণমূলের প্রার্থীকে প্রার্থী হয়েছেন তাঁদের জয়ী করতে ঝাঁপাতে হবে। মানুষ যাঁদের চেয়েছে তাঁদেরই প্রার্থী করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কারও কোনও ওজর-আপত্তি মানা হবে না বলে স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন অভিষেক।
বর্ধমান, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, উত্তর দিনাজপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা সর্বত্র প্রায় একই দশা। তৃণমূলের একাংশের দাবি, যাঁরা অফিসিয়াল প্রার্থী হিসাবে মনোনয়ন দিয়েছিলেন তাঁরা হয়ে গিয়েছে নির্দল প্রার্থী অন্যদিকে যাঁরা ছিলেন গোঁজ প্রার্থী তাঁরা হয়ে গিয়েছেন অফিসিয়াল প্রার্থী। হুগলির বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে জানিয়েছেন, দলের জন্য যাঁরা খেটেছে তাঁদের দল প্রতীক দেয়নি। ইসলামপুরের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী তাঁর নির্দল প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করছেন। তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবির নির্দল প্রার্থীদের দলের কর্মী বলেই দাবি করছেন। দলীয় বিধায়ক গিয়াসুদ্দিন মোল্লা প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। শুধু বিধায়ক স্তরেই নয় ব্লক, স্থানীয় স্তরের নেতৃত্বও প্রার্থী নিয়ে সন্তুষ্ট নন অনেক জায়গায়।
ইতিমধ্যে পঞ্চায়েতে প্রচার শুরু করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার নদিয়ার হাঁসখালি থেকে প্রচার শুরু করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটের আগে নবজোয়ার যাত্রার মাধ্যমে জনসংযোগ যাত্রা করেছেন অভিষেক। তখন গোপন ব্যালটের মাধ্যমে পঞ্চায়েতে মানুষের প্রার্থী করার পরিকল্পনা নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই ড্যামি ভোটেও গন্ডগোল দেখা দিয়েছিল। ঘোষণার দিন সাতেক আগেই নবজোয়ার যাত্রা সমাপ্তি করা হয়। দলের সাধারণ সম্পাদকের আগাম ঘোষণা সত্বেও প্রার্থী নিয়ে অসন্তোষ থেকেই গেল। রাজনৈতিক মহলের মতে, তাই এদিন ফের দলীয় প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলের অবস্থান ঘোষণা করলেন অভিষেক। কোনওমতেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে না দল তাও জানিয়ে দিলেন তৃণমূলের 'যুবরাজ'।
আরও পড়ুন- ‘তৃণমূলের দুর্নীতির’ মারাত্মক তথ্য মোদীর হাতে? ভোপালে বসেই ‘গরমাগরম’ ভাষণ নমোর!
দলের ঘোষণার পরও গোঁজ প্রার্থীদের পাশে থাকছেন কয়েকজন বিধায়ক এমনকী টিকিট না পাওয়া প্রধান-উপপ্রধানদের একাংশ নির্বাচনে বিরোধীদের সাহায্য করছে। জনগণের প্রার্থী করার জন্য জনসংযোগ যাত্রায় গোপন ব্যালটে প্রার্থী বাছাইও হয়েছে। তাহলে জনগণের প্রার্থী নিয়েও কেন এত বিতর্ক? এই প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরমহলে।