এবার আমতার মৃত ছাত্রনেতা আনিস খানের ভাইয়ের উপরেও প্রাণঘাতী হামলা। বাড়িতে ঢুকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপ দুষ্কৃতীদের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে বাগনান ও পরে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় রক্তাক্ত সলমনকে। তৃণমূলের বিরুদ্ধেই খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনিসের খুড়তুতো ভাই সলমনের পরিবারের। আনিস মৃত্যুর প্রতিবাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই এই হামলা? উঠছে প্রশ্ন।
আনিস খানের মৃত্যুর প্রধান সাক্ষীই এই সলমন। সম্পর্কে আনিসের খুড়তুতো ভাই এই যুবক। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে বাড়ির ভিতরেই ছিলেন সলমন। হঠাৎই রাতের অন্ধকারে একদল দুষ্কৃতী চড়াও হয় তাঁদের বাড়িতে। পিছন থেকে সলমনের উপর অতর্কিতে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। দুষ্কৃতীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপাতে থাকে সলমনকে।
অস্ত্রের এলোপাথাড়ি কোপে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই যুবক। তাঁর স্ত্রীর চিৎকারে পরিবারের বাকি সদস্যরাও ছুটে আসেন। সবাই মিলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সলমনকে প্রথমে বাগনান হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় সলমনকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই যুবক।
এর আগেও আনিসের ভাই সলমনকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ। এমনকী এব্যাপারে আমতা থানায় পর্যন্ত নালিশ জানিয়েছিলেন সলমন। তবে এবারও পুলিশ তাঁর সুরক্ষার কোনও বন্দোবস্ত করেনি বলেই অভিযোগ পরিবারের। আনিস-মৃত্যুর প্রধান সাক্ষী এই সলমন। সেই কারণেই তাঁকে বারংবার হুমকির সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে অভিযোগ। এবার তো তাঁকে প্রাণে মারার চেষ্টা দুষ্কৃতীদের। গোটা ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূলের দিকেই অভিযোগের আঙুল তুলেছে সলমনের পরিবার। যদিও তৃণমূলের তরফে এব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
আরও পড়ুন- পুজোর আগেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের কেন্দ্রীয় হারে DA? এখন আদালতের নির্দেশের অপেক্ষা
উল্লেখ্য, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আমতার ছাত্রনেতা আনিস খানের রহস্যমৃত্যু হয়। ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে আনিসের মৃত্যু হয় বলে দাবি পুলিশের। যদিও পরিবার এখনও আনিস মৃত্যুতে পুলিশকেই দায়ী করে চলেছে। ওই রাতে আনিসদের বাড়িতে পুলিশ ঢুকেছিল। ওই দিন রক্তাক্ত অবস্থায় আনিসকে নিয়ে হাসপাতালে ছুটেছিলেন তাঁর খুড়তুতো ভাই সলমনই। এই সলমনই আনিস মৃত্যুর প্রধান সাক্ষী। তাই আনিস মৃত্যুর পর থেকেই সলমনকে নানা হুমকির মুখে পড়তে হয়েছে। পুলিশে লিখিত অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ পরিবারের।
এদিকে, আনিসের ভাই সলমনের উপর এই প্রাণঘাতী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ''পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বলে কিছু নেই। সাধারণ মনানুষের কোনও নিরাপত্তা নেই। তৃণমূলে এখন কোন্দল চলছে। এই ধরনের ঘটনা এখন বাড়তেই থাকবে।''
এদিকে, শনিবার বিকেলে আনিস খানের বাড়িতে যান এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই নেতৃত্ব। প্রতীকউর রহমান, ধ্রুবজ্যোতি সাহা, কলতান দাশগুপ্ত ও হাওড়ার বাম ছাত্র নেতারা আনিস খানের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। আনিস মৃত্যুর প্রধান সাক্ষী সলমনের উপর এই প্রাণঘাতী হামলার প্রতিবাদে ফের পথে নামার ডাক এসএফআই ও ডিওয়াইএফআইয়ের। রবিবার বিকেলে 'আমতা থানা চলুন' কর্মসূচির ডাক দিয়েছে এই দুই বাম ছাত্র সংগঠন।