সন্ধের আগে বাড়ি ফিরতে চাওয়াই 'কাল' হল। সুন্দরবনের খাঁড়িতে বাঘের আক্রমণে ফের প্রাণ খোয়ালেন এক মৎস্যজীবী। কাঁকড়া ধরতে গিয়ে মর্মান্তিক পরিণতি ননীগোপাল মণ্ডল নামে ওই মৎস্যজীবীর। নদীর খাঁড়ি পথ ধরে সন্ধের আগেই তিন মৎস্যজীবীর ওই দলটি বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছিল। খাঁড়ির ধারের জঙ্গল থেকে হঠাৎই ডিঙি নৌকায় লাফ রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। মৎস্যজীবীর ঘাড় কামড়ে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা। সঙ্গীরা প্রাণ হাতে করে বাঘের সঙ্গে লড়ে সঙ্গীকে ছিনিয়ে আনেন। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই মৎস্যজীবীর মৃত্যু হয়েছে।
দুই সঙ্গীকে নিয়ে সুন্দরবনের জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন ননীগোপাল মণ্ডল নামে ওই মৎস্যজীবী। সব ঠিকঠাকই চলছিল। কাঁকড়া ধরা শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন তিনজনে। তবে সন্ধের আগেই বাড়ি ফেরার জন্য সুন্দরবনের খাঁড়ির পথ ধরেছিলেন তাঁরা। বিজয়ভারনী খাঁড়ির মধ্য দিয়ে ডিঙি নৌকা নিয়ে রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা। ঠিক সেই সময়ে পাশের জঙ্গল থেকে নৌকায় ঝাঁপ মস্ত রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের। নৌকায় বসা ননীগোপালের উপরেই লাফিয়ে পড়ে বিশালকায় ওই বাঘ।
বাঘের থাবার ঘায়ে নদীতে পড়ে যান ননীগোপাল। সেখানেও তাঁর ঘাড়ে কামড় বসায় দক্ষিণরায়। মুখে টেনে ননীগোপালকে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাক বাঘটি। ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরবনের ঝিলা ৫ নম্বর জঙ্গলে। ননীগোপালকে বাঘে টেনে নিয়ে যাচ্ছে দেখে ঝাঁপিয়ে পড়েন তাঁর দুই সঙ্গী। প্রাণ হাতে করেই তাঁরা লড়াই চালিয়ে যান বাঘের সঙ্গে।
আরও পড়ুন- Sagardighi By-Election Live Updates: উপ-নির্বাচনে বেনজির সুরক্ষা সাগরদিঘিতে
শেষমেশ বাঘের গ্রাস থেকে ননীগোপালকে ছাড়িয়ে নৌকায় চেপেই তাঁরা রওনা দেন হাসপাতালের উদ্দেশে। তবে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতেই অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জেরে শেষমেশ মৃত্যু হয় ননীগোপাল মণ্ডল নামে ওই মৎস্যজীবীর।
সুন্দরবনের ২ নম্বর সাতজেলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ননীগোপাল মণ্ডল। বাঘের হানায় তাঁর এমন মর্মান্তিক পরিণতিতে শোকের ছায়া এসেছে গোটা এলাকয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে বনদফতর ও সুন্দরবন কোস্টাল থানার পুলিশ। তবে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তড়িঘড়ি সরু খাঁড়ির ধরে বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্তই কাল হল। সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে বিভিন্ন এলাকার মৎস্যজীবীরা একসঙ্গে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন। কাকড়াঁ ধরে ফিরে এসেছেন প্রত্যেকেই। ননীগোপাল-সহ তিনজন তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরার জন্য খাঁড়ি পথ ধরেছিলেন। কিন্তু ঘন হেতালের জঙ্গলে যে ঘাপটি মেরে বসেছিল দক্ষিণরায়, তা তাঁরা বুঝে উঠতে পারেননি।