Flood Situation: দোরগোড়ায় শারদোৎসব। তার আগে DVC-র ছাড়া জলে কার্যত বানভাসি পূর্ব বর্ধমান জেলার বেশ কিছু অংশ। কোনও কোনও জায়গায় দামোদর উপচে জল পৌঁছে গিয়েছে গৃহস্থের বাড়ির একেবারে দুয়ারে। আবার কোনও কোনও জায়গায় দামোদর উপচে পড়া জলে থই থই গ্রামের পর গ্রাম। বিষয়টি নিয়ে বেজায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট দাবি, গোটাটাই 'ম্যান মেইড বন্যা’। তবে বন্যা যে কারণেই হোক না কেন হুগলির আরামবাগের পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলায় জামালপুর ও রায়না ২ ব্লকের কয়েকটি অঞ্চল সহ গুসকারর বাসিন্দাদের এখন চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। প্রশাসনের কথায় ঘর বাড়ি ছেড়ে কেউ বাঁধে আবার কেউ পাকা রাস্তায় ঠাঁই নিয়েছেন। তবে মাথার উপর আচ্ছাদন দেওয়ার মত ত্রিপল ও খাবারদাবার যথা সময়ে না মেলায় বানভাসিদের মধ্যে অনেকে ক্ষোভ উগরে দেন।
DVC-র ছাড়া জলে সব থেকে বেশি বানভাসি হয়েছে আরামবাগের গোঘাট ও খানাকুল প্রভৃতি এলাকা। ততটা না হলেও দামোদর ও মুণ্ডেশ্বরীর সংযোগস্থলে থাকা পূর্ব বর্ধমানের জালালপুর ব্লকের জ্যোৎশ্রীরাম অঞ্চলের অমরপুর ,শিয়ালী, কোরা ও উজিরপুর এলাকার বন্যা পরিস্থিতি চরম আকার নিয়েছে । এই সব এলাকার বাসিন্দারের যথেষ্টই ভোগান্তিতে ফেলেছে। এই সব এলাকার কম বেশী পঞ্চাশটি পরিবার জলবন্দি হয়ে রয়েছে। দামোদর ছাপিয়ে জলে পৌঁছে গিয়েছে শিয়ালী গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। গোটা বিদ্যালয় চত্বর এখন হাঁটু সমান জলে ভাসছে। অনেক গৃহস্থের বাড়ির চৌকাঠ ছাপিয়ে জল ঘরের ভিতরে পর্যন্ত প্রবেশ করেছে । ধান সহ সবজি চাষের জমিও জলে ডুবেছে।
প্রশাসনের কথা মেনে শিয়ালি, কোরা ও উজিরপুর এলাকার অনেকেই মঙ্গলবার বিকেল থেকেই স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেন। অনেকে আবার উঁচু রাস্তায় উঠে এসে সেখানেই ঠাঁই নেন। ঘর-বাড়ি ছেড়ে আসতে না চাওয়া অনেকে আবার প্লাবন পরিস্থিতির মধ্যেও নিজের নিজের বাড়িতেই রয়ে থাকেন। ত্রিপল ও খাবারদাবার না মেলার অভিযোগ এনে দুর্ভোগে পড়া এইসব এলাকার অনেক মহিলা ক্ষোভ উগরে দেন ।
আরও পড়ুন- Mamata Banerjee: 'এটা পরিকল্পিত!' এবার বড় আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি মুখ্যমন্ত্রীর
জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি ভূতনাথ মালিক বলেন, "ত্রাণ ও ত্রিপল না মেলার অভিযোগ সত্য নয়। শিয়ালি,কোরা, পাইকপাড়া, উজিরপুর প্রভৃতি এলাকা জলমগ্ন হয়ে রয়েছে। তাই অনেকটা ঘুরপথে ত্রাণ ও ত্রিপল নিয়ে পৌঁছোতে একটু দেরি হয়েছে। বিডিও পার্থসারথী দে সহ ব্লক প্রশাসনে অনেক কর্তা এবং পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যা মিলে বানাভাসি এলাকার মানুষজনের কাছে পৌঁছে শুকনো খাবার ,ত্রিপল বহু বাসিন্দাকে পৌঁছে দিয়েছেন।"
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রায়না ২ ব্লকের বড়বৈনান গ্রাম সহ গোতান অঞ্চলের কয়েকটি গ্রামেও। এছাড়াও আউশগ্রামের গুসকরা শহরও প্লাবিত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এরই পাশাপাশি জানানো হয়েছে, বন্যা পরিস্থিতির
কথা মাথায় রেখে নবান্নের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের তরফে খোলা হয়েছে ২৪ ঘণ্টার কন্ট্রোল রুম।